ঢাকা ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কে পাচ্ছেন বাপ্পি লাহিড়ির বিপুল স্বর্ণের গহনা?

আলোকেশ বাপ্পি লাহিড়ি

উপমহাদেশের কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী ও সুরকার বাপ্পি লাহিড়ি মঙ্গলবার রাতে ভারতের মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।

৬৯ বছর বয়সী এই সংগীতশিল্পী স্বর্ণের গহনা পরতে ভালোবাসতেন। তার জুয়েলারি কালেকশন ছিল যেকোনও গহনাপ্রেমীর কাছে ঈর্ষণীয়। তাকে বলিউডের ‘গোল্ডেন ম্যান’ বলা হতো। কোনও সময়ই স্বর্ণের হার, ব্রেসলেট, আংটি ছাড়া দেখা যেত না তাকে। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন তার গহনার প্রতি ভালোবাসার কারণ। হলিউডের মিউজিশিয়ান এলভিস প্রেসলির দ্বারা তিনি অনুপ্রাণিত।

কিন্তু স্বর্ণের গহনা ছাড়া বাপ্পি লাহিড়ি? এমন দিনও যে আসতে পারে, বোধহয় দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি সুরকার-শিল্পী স্বয়ং। তাই তার অঙ্গজুড়ে সর্বক্ষণ শোভা পেত নানা ধরনের অলঙ্কার। গলায় রত্ন খচিত নানা ধরনের পেনডেন্ট, হার। ১০ আঙুলে ১০ রকমের আংটি। কবজিজুড়ে চওড়া মণিবন্ধ। শেষ জন্মদিনে নিজেই নিজেকে উপহার দিয়েছিলেন স্বর্ণের পেয়ালা!
নিজেকে স্বর্ণে মুড়ে রাখা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলে বাপ্পি লাহিড়ির। স্বর্ণ তার কাছে ছিল সৌভাগ্যের প্রতীক। সংস্কার আর স্বর্ণপ্রেম তাই মিলেমিশে একাকার। প্রতিটি অলঙ্কার যাতে যত্নে থাকে, সেজন্য আলাদা করে দেখভালের লোকও নিযুক্ত করেছিলেন। বাপ্পি লাহিড়ির সেই সহকারী নিয়মিত গহনাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও করতেন।

শোনা যায়, একটি করে অ্যালবাম মুক্তি পেলেই একটি করে স্বর্ণ বা হীরার গহনা কিনতেন বাপ্পি। সংস্কার ছিল, তাহলেই তার গান সোনার মতোই চমকাবে সবার হৃদয়ে। প্রতিটি গহনার জন্য আলাদা করে বাক্সও ছিল। যেখানে দিনের শেষে পরিচ্ছন্ন করে রেখে দেওয়া হত যাবতীয় গহনা।

বাপ্পি লাহিড়ি যেমন গহনা ছাড়া থাকতে পারতেন না, তেমনই তার অলঙ্কার অন্য কেউ স্পর্শ করবে, সেটাও সহ্য করতে পারতেন না। একবার তার এক সহকারী তার গহনার সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিনয়ের সঙ্গে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এই সুরকার। অনেকেই নতুন গহনা ছুঁয়ে দেখতে পছন্দ করেন। তাতেও আপত্তি ছিল বাপ্পির। কেউ যাতে তার শরীর এবং গহনা স্পর্শ করতে না পারে, সেজন্য সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন তিনি।

প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে সমস্ত অলঙ্কার রেখে বিদায় নিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ি। এখন অনুরাগীদের মনে প্রশ্ন, এবার তার সেই সাধের গহনাগুলোর কী হবে? কে পাবেন প্রয়াত শিল্পীর এত অলঙ্কার?

বাপ্পি লাহিড়ির এক পারিবারিক বন্ধু জানিয়েছেন, শিল্পীর দুই সন্তান বাপ্পা আর রেমা ঠিক করেছেন বাবার বাকি জিনিসের মতোই গহনাগুলোও তারা সংরক্ষণ করবেন। দু’টি ভাগে রাখা হবে সমস্ত কিছু। একটি ভাগে থাকবে তার প্রতিদিনের পরার গহনা। যত্ন করে সাজানো থাকবে বাক্সে। অন্যভাগে থাকবে তুলে রাখা গহনা। সেগুলোর বাক্স আলাদা। এছাড়াও, এই স্বর্ণপ্রীতির জন্যই বাপ্পি লাহিড়ি নানাজনের থেকে স্বর্ণের গহনা, মূর্তি বা টোকেন উপহার পেতেন। সেগুলোও সংরক্ষিত থাকবে।

সূত্র: আনন্দবাজার

ট্যাগস

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

কে পাচ্ছেন বাপ্পি লাহিড়ির বিপুল স্বর্ণের গহনা?

আপডেট সময় ১০:০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

উপমহাদেশের কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী ও সুরকার বাপ্পি লাহিড়ি মঙ্গলবার রাতে ভারতের মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।

৬৯ বছর বয়সী এই সংগীতশিল্পী স্বর্ণের গহনা পরতে ভালোবাসতেন। তার জুয়েলারি কালেকশন ছিল যেকোনও গহনাপ্রেমীর কাছে ঈর্ষণীয়। তাকে বলিউডের ‘গোল্ডেন ম্যান’ বলা হতো। কোনও সময়ই স্বর্ণের হার, ব্রেসলেট, আংটি ছাড়া দেখা যেত না তাকে। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন তার গহনার প্রতি ভালোবাসার কারণ। হলিউডের মিউজিশিয়ান এলভিস প্রেসলির দ্বারা তিনি অনুপ্রাণিত।

কিন্তু স্বর্ণের গহনা ছাড়া বাপ্পি লাহিড়ি? এমন দিনও যে আসতে পারে, বোধহয় দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি সুরকার-শিল্পী স্বয়ং। তাই তার অঙ্গজুড়ে সর্বক্ষণ শোভা পেত নানা ধরনের অলঙ্কার। গলায় রত্ন খচিত নানা ধরনের পেনডেন্ট, হার। ১০ আঙুলে ১০ রকমের আংটি। কবজিজুড়ে চওড়া মণিবন্ধ। শেষ জন্মদিনে নিজেই নিজেকে উপহার দিয়েছিলেন স্বর্ণের পেয়ালা!
নিজেকে স্বর্ণে মুড়ে রাখা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলে বাপ্পি লাহিড়ির। স্বর্ণ তার কাছে ছিল সৌভাগ্যের প্রতীক। সংস্কার আর স্বর্ণপ্রেম তাই মিলেমিশে একাকার। প্রতিটি অলঙ্কার যাতে যত্নে থাকে, সেজন্য আলাদা করে দেখভালের লোকও নিযুক্ত করেছিলেন। বাপ্পি লাহিড়ির সেই সহকারী নিয়মিত গহনাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও করতেন।

শোনা যায়, একটি করে অ্যালবাম মুক্তি পেলেই একটি করে স্বর্ণ বা হীরার গহনা কিনতেন বাপ্পি। সংস্কার ছিল, তাহলেই তার গান সোনার মতোই চমকাবে সবার হৃদয়ে। প্রতিটি গহনার জন্য আলাদা করে বাক্সও ছিল। যেখানে দিনের শেষে পরিচ্ছন্ন করে রেখে দেওয়া হত যাবতীয় গহনা।

বাপ্পি লাহিড়ি যেমন গহনা ছাড়া থাকতে পারতেন না, তেমনই তার অলঙ্কার অন্য কেউ স্পর্শ করবে, সেটাও সহ্য করতে পারতেন না। একবার তার এক সহকারী তার গহনার সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিনয়ের সঙ্গে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এই সুরকার। অনেকেই নতুন গহনা ছুঁয়ে দেখতে পছন্দ করেন। তাতেও আপত্তি ছিল বাপ্পির। কেউ যাতে তার শরীর এবং গহনা স্পর্শ করতে না পারে, সেজন্য সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন তিনি।

প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে সমস্ত অলঙ্কার রেখে বিদায় নিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ি। এখন অনুরাগীদের মনে প্রশ্ন, এবার তার সেই সাধের গহনাগুলোর কী হবে? কে পাবেন প্রয়াত শিল্পীর এত অলঙ্কার?

বাপ্পি লাহিড়ির এক পারিবারিক বন্ধু জানিয়েছেন, শিল্পীর দুই সন্তান বাপ্পা আর রেমা ঠিক করেছেন বাবার বাকি জিনিসের মতোই গহনাগুলোও তারা সংরক্ষণ করবেন। দু’টি ভাগে রাখা হবে সমস্ত কিছু। একটি ভাগে থাকবে তার প্রতিদিনের পরার গহনা। যত্ন করে সাজানো থাকবে বাক্সে। অন্যভাগে থাকবে তুলে রাখা গহনা। সেগুলোর বাক্স আলাদা। এছাড়াও, এই স্বর্ণপ্রীতির জন্যই বাপ্পি লাহিড়ি নানাজনের থেকে স্বর্ণের গহনা, মূর্তি বা টোকেন উপহার পেতেন। সেগুলোও সংরক্ষিত থাকবে।

সূত্র: আনন্দবাজার