ঢাকা ১১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেমের টানে ফিলিপাইন থেকে ময়মনসিংহে এসে হয়ে গেলেন জনপ্রতিনিধি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ধর্ম, মা, বাবা, দেশ ছেড়ে প্রেমের টানে ফিলিপাইন থেকে চলে আসেন বাংলাদেশের ময়মনসিংহে। ময়মনসিংহের যুবককে বিয়ের পর জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা থেকে নাম বদলে হয়ে যান জেসমিন আক্তার। এর ১০ বছর পর তিনি হলেন জনপ্রতিনিধি।

জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের দবরদস্তা গ্রামে জুলহাস উদ্দিনের স্ত্রী। গত ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাধাকানাই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী প্রার্থী হিসেবে মাইক প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

ওই নির্বাচনে বিশাল ভোটের ব্যবধানে তিনি সংরক্ষিত নারী জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছেন ১ হাজার ৮৩৭ ভোট। এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে পুরো জেলাজুড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা ছিলেন ফিলিপাইনের নাগরিক। গ্রেজুয়েশন শেষে চাকরি নেন সিঙ্গাপুরে। সেখানে পরিচয় হয় বাংলাদেশি যুবক জুলহাসের সঙ্গে। একই কর্মস্থলে কাজ করতেন তারা। সেখানে দুই বছর কাজ করার পর দুজনেই ফিরে যান নিজেদের দেশে। কিন্তু চলতে থাকে তাদের যোগাযোগ। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার।

বিয়ের সিদ্ধান্তে ২০১০ সালের শেষের দিকে জুলহাস পাড়ি জমান ফিলিপাইনে। সেখানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা ও জুলহাস। এরপর ধর্ম, মা, বাবা, দেশ, ধর্ম ছেড়ে চলে আসেন জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা। এখন তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের মা।

জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা বলেন, ২০০৮ সালে ফিলিপাইনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিসারিজ বিভাগে গ্রেজুয়েশন সম্পন্ন করি। এরপর চাকরি নিই সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানিতে। সেখানেই জুলহাস। সে সময় জুলহাসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এর দুই বছর পর জুলহাসকে বিয়ে করে ধর্ম, মা, বাবা, দেশ ছেড়ে চলে আসি বাংলাদেশের ময়মনসিংহে।

তিনি বলেন, আমি নির্বাচন করতে চাইনি। তবে এলাকাবাসীর ইচ্ছাতেই নির্বাচন করেছি। তারাই আমাকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। এখন তাদের সেবা করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আসার পর বেশ বিপাকে পড়েছিলাম। কারণ তখন আমি বাংলায় কথা বলতে পারতাম না। তবে আস্তে আস্তে কিছুটা শিখেছি। এখন আমি সবার কথাই মোটামুটি বুঝতে পারি। আমিও বাংলায় কথা বলতে পারি।

এ বিষয়ে জুলহাস উদ্দিন বলেন, জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা এলাকাবাসীর সেবা করে তাদের জয় মন করেছে। সে এলাকার সাধারণ মানুষের কথাতেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তারাই তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে।

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

প্রেমের টানে ফিলিপাইন থেকে ময়মনসিংহে এসে হয়ে গেলেন জনপ্রতিনিধি

আপডেট সময় ১২:২১:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ধর্ম, মা, বাবা, দেশ ছেড়ে প্রেমের টানে ফিলিপাইন থেকে চলে আসেন বাংলাদেশের ময়মনসিংহে। ময়মনসিংহের যুবককে বিয়ের পর জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা থেকে নাম বদলে হয়ে যান জেসমিন আক্তার। এর ১০ বছর পর তিনি হলেন জনপ্রতিনিধি।

জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের দবরদস্তা গ্রামে জুলহাস উদ্দিনের স্ত্রী। গত ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাধাকানাই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী প্রার্থী হিসেবে মাইক প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

ওই নির্বাচনে বিশাল ভোটের ব্যবধানে তিনি সংরক্ষিত নারী জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছেন ১ হাজার ৮৩৭ ভোট। এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে পুরো জেলাজুড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা ছিলেন ফিলিপাইনের নাগরিক। গ্রেজুয়েশন শেষে চাকরি নেন সিঙ্গাপুরে। সেখানে পরিচয় হয় বাংলাদেশি যুবক জুলহাসের সঙ্গে। একই কর্মস্থলে কাজ করতেন তারা। সেখানে দুই বছর কাজ করার পর দুজনেই ফিরে যান নিজেদের দেশে। কিন্তু চলতে থাকে তাদের যোগাযোগ। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার।

বিয়ের সিদ্ধান্তে ২০১০ সালের শেষের দিকে জুলহাস পাড়ি জমান ফিলিপাইনে। সেখানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা ও জুলহাস। এরপর ধর্ম, মা, বাবা, দেশ, ধর্ম ছেড়ে চলে আসেন জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা। এখন তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের মা।

জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা বলেন, ২০০৮ সালে ফিলিপাইনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিসারিজ বিভাগে গ্রেজুয়েশন সম্পন্ন করি। এরপর চাকরি নিই সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানিতে। সেখানেই জুলহাস। সে সময় জুলহাসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এর দুই বছর পর জুলহাসকে বিয়ে করে ধর্ম, মা, বাবা, দেশ ছেড়ে চলে আসি বাংলাদেশের ময়মনসিংহে।

তিনি বলেন, আমি নির্বাচন করতে চাইনি। তবে এলাকাবাসীর ইচ্ছাতেই নির্বাচন করেছি। তারাই আমাকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। এখন তাদের সেবা করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আসার পর বেশ বিপাকে পড়েছিলাম। কারণ তখন আমি বাংলায় কথা বলতে পারতাম না। তবে আস্তে আস্তে কিছুটা শিখেছি। এখন আমি সবার কথাই মোটামুটি বুঝতে পারি। আমিও বাংলায় কথা বলতে পারি।

এ বিষয়ে জুলহাস উদ্দিন বলেন, জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা এলাকাবাসীর সেবা করে তাদের জয় মন করেছে। সে এলাকার সাধারণ মানুষের কথাতেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তারাই তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে।