ঢাকা ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বদলগাছীতে ৪টি প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা উত্তোলনের অভিযোগ

বদলগাছীতে ৪টি প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা উত্তোলনের অভিযোগ

 নওগাঁ প্রতিনিধি:  নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় অর্থ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও ৪টি প্রকল্পের কোন কাজই  করা হয়নি। ফলে কাজ না হওয়ায় ৪টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলপনা ইয়াসমিন এর বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বদলগাছী উপজেলা পরিষদওয়ারী ৩য় পর্যায়ে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচীর ২২টি প্রকল্প ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচীর ১৪টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়।

পরবর্তীতে অনুমোদিত প্রকল্প (কাবিটা) কর্মসূচীর ১৩ নম্বর প্রকল্প কার্ত্তিকাহার সরদার পাড়া পাকা রাস্তার ধারে জামে মসজিদের গর্ত ভরাট থেকে সংশোধন করে উপজেলা পরিষদের ভিতরে মাটি ভরাট ও সংস্কারের জন্য ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯২০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

অপরদিকে, ঐ একই অর্থ বছরে (টিআর) কর্মসূচীর অনুমোদিত ৩, ৫ ও ১৬ নম্বর প্রকল্প সংশোধন করা হয়। প্রকল্পের ৩নম্বর ভাতশাইল ইটাকড়া বিউটির বাড়ীর পাশ্বের রাস্তায় প্যালাসাইডিং করণ এর স্থলে উপজেলা পরিষদের বাসাবাড়ির আঙ্গিনায় মাটি ভরাটের জন্য  ৫০ হাজার টাকা, ৫ নম্বর উপজেলা পরিষদের ভিতরে পানির ফোয়ারা নির্মাণে এর স্থলে উপজেলা পরিষদের ভিতরে ফোয়ারার পাম্প স্থাপনে ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ ও ১৬ নম্বর প্রকল্প বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের চকগোপি ব্রীজ ও হাজিপুর দক্ষিণ মাঠের ব্রীজের মেরামত/সংস্কার এর স্থলে উপজেলা পরিষদের ফোয়ারার চারপাশে ইটসোলিং করণ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। এই ৪টি প্রকল্পের মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকা।

২০২০-২১ অর্থ বছর গত জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার চার মাস পেরিয়ে গেলেও বাস্তবে এ ৪টি প্রকল্পের কোন কাজই  আসলে করা হয়নি। সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা পরিষদের ভেতরে এসব প্রকল্পের কোন কাজ চোখে পড়েনি। কাজ সমন্ধে জানেনা উপজেলা পরিষদের ভিতরে বসবাস কারিরাও।

টিআর ৩ , ৫ ও ১৬ নং প্রকল্পের সভাপতি (পিআইসি) বদলগাছী সদর ইউপি ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আমিরুল ইসলাম ও ২নং ওয়ার্ডের রবিউল আওয়ালের সাথে কাজ না হওয়া বিষয়ে কথা বললে তারা বলেন, প্রকল্পের কাজ হয়েছে কিনা আমরা জানিনা। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অফিস সহায়ক সুমন আমাদের কিছু কাগজ দিয়ে বলেন এটা ইউএনও স্যারের কাজ স্যার নিজেই এই কাজগুলো করবেন আপনারা শুধু স্বাক্ষর করেন। ওই কাগজেগুলোতে আমরা শুধু স্বাক্ষর দিয়েছি। কাজ হয়েছে কিনা আমরা জানিনা।

কাবিটা প্রকল্পের সভাপতি (পিআইসি) বদলগাছী সদর ইউপির ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আজাদ হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, পি আইও অফিসের অফিস সহায়ক সুমন আমাকে ডেকে বলছে ইউএনও স্যারের প্রকল্প, স্যার নিজে কাজ করবেন আপনাকে স্বাক্ষর করতে বলেছে তাই আমি সাক্ষর দিয়েছি । কাজ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।

প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অফিস সহায়ক সুমন বলেন, আমি আফিসের একজন ছোট কর্মচারী আমাকে শুধু ৪টি প্রকল্পের সভাপতিদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিতে বলেছিলো ইউএনও স্যার। তাই আমি শুধু স্বাক্ষর নিয়েছি । কাজ হয়েছে কিনা তা আমি জানিনা।

এ ব্যাপারে বদলগাছী উপজলো প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ইউএনও স্যার উপজেলা পরিষদের ভিতরে প্রকল্পগুলো নিয়েছেন। কাজ এখনো হয়নি তিনি পরে কাজ করবেন।

বদলগাছী উপজেলা নিবার্হী  কর্মকর্তা আলপনা ইয়াসমিন বলেন, প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের কোন সুযোগ নাই। কিছু সমস্যার কারণে কাজটি করা হয়নি। কাজ না করে বিল উত্তলোন করলেন কেন বলে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কাজ না হলে টাকা ফেরত পাঠানো হবে।

 

ট্যাগস

বদলগাছীতে ৪টি প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা উত্তোলনের অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:৫৯:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১

 নওগাঁ প্রতিনিধি:  নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় অর্থ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও ৪টি প্রকল্পের কোন কাজই  করা হয়নি। ফলে কাজ না হওয়ায় ৪টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলপনা ইয়াসমিন এর বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বদলগাছী উপজেলা পরিষদওয়ারী ৩য় পর্যায়ে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচীর ২২টি প্রকল্প ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচীর ১৪টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়।

পরবর্তীতে অনুমোদিত প্রকল্প (কাবিটা) কর্মসূচীর ১৩ নম্বর প্রকল্প কার্ত্তিকাহার সরদার পাড়া পাকা রাস্তার ধারে জামে মসজিদের গর্ত ভরাট থেকে সংশোধন করে উপজেলা পরিষদের ভিতরে মাটি ভরাট ও সংস্কারের জন্য ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯২০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

অপরদিকে, ঐ একই অর্থ বছরে (টিআর) কর্মসূচীর অনুমোদিত ৩, ৫ ও ১৬ নম্বর প্রকল্প সংশোধন করা হয়। প্রকল্পের ৩নম্বর ভাতশাইল ইটাকড়া বিউটির বাড়ীর পাশ্বের রাস্তায় প্যালাসাইডিং করণ এর স্থলে উপজেলা পরিষদের বাসাবাড়ির আঙ্গিনায় মাটি ভরাটের জন্য  ৫০ হাজার টাকা, ৫ নম্বর উপজেলা পরিষদের ভিতরে পানির ফোয়ারা নির্মাণে এর স্থলে উপজেলা পরিষদের ভিতরে ফোয়ারার পাম্প স্থাপনে ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ ও ১৬ নম্বর প্রকল্প বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের চকগোপি ব্রীজ ও হাজিপুর দক্ষিণ মাঠের ব্রীজের মেরামত/সংস্কার এর স্থলে উপজেলা পরিষদের ফোয়ারার চারপাশে ইটসোলিং করণ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। এই ৪টি প্রকল্পের মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকা।

২০২০-২১ অর্থ বছর গত জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার চার মাস পেরিয়ে গেলেও বাস্তবে এ ৪টি প্রকল্পের কোন কাজই  আসলে করা হয়নি। সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা পরিষদের ভেতরে এসব প্রকল্পের কোন কাজ চোখে পড়েনি। কাজ সমন্ধে জানেনা উপজেলা পরিষদের ভিতরে বসবাস কারিরাও।

টিআর ৩ , ৫ ও ১৬ নং প্রকল্পের সভাপতি (পিআইসি) বদলগাছী সদর ইউপি ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আমিরুল ইসলাম ও ২নং ওয়ার্ডের রবিউল আওয়ালের সাথে কাজ না হওয়া বিষয়ে কথা বললে তারা বলেন, প্রকল্পের কাজ হয়েছে কিনা আমরা জানিনা। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অফিস সহায়ক সুমন আমাদের কিছু কাগজ দিয়ে বলেন এটা ইউএনও স্যারের কাজ স্যার নিজেই এই কাজগুলো করবেন আপনারা শুধু স্বাক্ষর করেন। ওই কাগজেগুলোতে আমরা শুধু স্বাক্ষর দিয়েছি। কাজ হয়েছে কিনা আমরা জানিনা।

কাবিটা প্রকল্পের সভাপতি (পিআইসি) বদলগাছী সদর ইউপির ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আজাদ হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, পি আইও অফিসের অফিস সহায়ক সুমন আমাকে ডেকে বলছে ইউএনও স্যারের প্রকল্প, স্যার নিজে কাজ করবেন আপনাকে স্বাক্ষর করতে বলেছে তাই আমি সাক্ষর দিয়েছি । কাজ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।

প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অফিস সহায়ক সুমন বলেন, আমি আফিসের একজন ছোট কর্মচারী আমাকে শুধু ৪টি প্রকল্পের সভাপতিদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিতে বলেছিলো ইউএনও স্যার। তাই আমি শুধু স্বাক্ষর নিয়েছি । কাজ হয়েছে কিনা তা আমি জানিনা।

এ ব্যাপারে বদলগাছী উপজলো প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ইউএনও স্যার উপজেলা পরিষদের ভিতরে প্রকল্পগুলো নিয়েছেন। কাজ এখনো হয়নি তিনি পরে কাজ করবেন।

বদলগাছী উপজেলা নিবার্হী  কর্মকর্তা আলপনা ইয়াসমিন বলেন, প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের কোন সুযোগ নাই। কিছু সমস্যার কারণে কাজটি করা হয়নি। কাজ না করে বিল উত্তলোন করলেন কেন বলে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কাজ না হলে টাকা ফেরত পাঠানো হবে।