ঢাকা ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo বিএনপি যতই চাপ দিক, সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন: উপদেষ্টা নাহিদ Logo ঈদ ছাড়াও সিনেমা সুপারহিট হয়: শাকিব খান Logo যুক্তরাজ্যে গেলেই গ্রেপ্তার হবেন নেতানিয়াহু! Logo নওগাঁ ছাত্র -জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা Logo নির্বাচন দ্রুত হওয়া প্রয়োজন, নয়তো ষড়যন্ত্র বাড়বে: তারেক রহমান Logo আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি Logo ইউক্রেনের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল রাশিয়া Logo সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্ভাষণ জানালেন ড. ইউনূস Logo সুমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি বুলবুল গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার Logo সাফ চ্যাম্পিয়ন তিন নারী খেলোয়াড়কে সাতক্ষীরায় গণসংবর্ধনা

আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থীর কোর্টে দাঁড়ানো ফ্যাশন হয়ে গেছে’

আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থীর কোর্টে দাঁড়ানো ফ্যাশন হয়ে গেছে’

স্টাফ রিপোর্টার:  একের পর এক আইনজীবী ছাড়াই প্রার্থীদের সরাসরি মামলার শুনানিতে দাঁড়ানো ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

আদালত বলেন, আগামীকাল থেকে আইনজীবী থাকা সত্ত্বেও কোনো বিচারপ্রার্থী আদালতে দাঁড়ালে ওই আইনজীবীর সনদ বাতিল করে দেওয়া হবে।

সোমবার (১ নভেম্বর) বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থী সরাসরি মামলার নিষ্পত্তির আবেদন করতে আদালতে হাজির হলে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ মন্তব্য করেন।

এদিন আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হলে প্রথমেই দুজন নারী বিচারপ্রার্থী দাঁড়িয়ে তাদের চাকরি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি করতে সরাসরি আদালতে আবেদন করেন। তারা আদালতে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার প্রার্থনা করেন।

এসময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আমাদের আইনমাফিক চলতে হবে। মানবিক আবেদন করবেন সরকারের কাছে। আমরা মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখবো না। আমরা দেখবো আইনের দৃষ্টিকোন থেকে। মানবিক দৃষ্টিতে দেখবে সরকার। কোর্টে কোনো মানবিকতা নেই। মানবিকতা এতটুকুই করতে পারবো, মামলাটি তাড়াতাড়ি শুনবো।

পরে মামলাটি আগামীকাল মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ।

এদিকে ওই দুই নারীর আবেদনের পরপরই আরেকজন বিচারপ্রার্থী তার আবেদন নিয়ে আদালতে হাজির হন। তিনি নিজেকে বেকার যুবক দাবি করে বলেন, আমি বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছিলাম। সেই মামলায় হাইকোর্ট থেকে রায় পেয়েছি। মামলাটি আপিল বিভাগে অপেক্ষমাণ আছে। কিন্তু রেলওয়ে আমাদের নিয়োগ দিচ্ছে না।

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা তো মহা মুশকিল। আপনার আইনজীবী কোথায়?

এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, চেম্বার আদালতে আবেদন না দিয়ে আপিলে চলে আসছেন কেন? একটা ফ্যাশন শুরু হয়ে গেছে, আইনজীবী ছাড়া কোর্টে এসে দাঁড়িয়ে যাওয়া।

প্রধান বিচারপতি জানতে চান, আপনার আইনজীবী কে? জবাবে ওই বিচার প্রার্থী বলেন, পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু।

তখন বিচারপতি ইমান আলী বলেন, আপনার আইনজীবী থাকতে আপনি এখানে দাড়াঁতে পারেন না।

এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আগামীকাল থেকে তো দেখছি লাইন লেগে যাবে। আইনজীবী থাকলে আপনি দাঁড়াতে পারেন না। আপনার মামলার অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড যিনি আছেন তাকে দিয়ে আবেদন দেন।

এরপর আরেকজন আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমি মসজিদের মোয়াজ্জিম। আমি খুবই গরিব মানুষ। আমি মানুষের জাকাত-ফেতরা নিয়ে খাই। স্যার আমার মামলটা বন্ধ হয়ে রয়েছে। যদি দয়া করে একটু দেখতেন।

একের পর এক এভাবে আইনজীবী ছাড়া সরাসরি কোর্টে দাঁড়ানোর ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এরপর থেকে যেসব আইনজীবীর মক্কেল সরাসরি কোর্টে এসে দাঁড়াবে আমরা তার সনদ বাতিল করে দেবো। আগামীকাল থেকে যারা দাঁড়াবে তাদের আইনজীবী থাকলে তাদের সনদ আমরা পাঁচজন (আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ) মিলে বাতিল করে দেবো।

আপনার আইনজীবী আছে কিনা আদালতের এমন প্রশ্নের জবাবে এই বিচার প্রার্থী বলেন, উকিল আছে। অনেক টাকা চায়। তখন আদালত বলে, আপনি আইনজীবী না রেখে থাকলে আপনারটা শুনবো। আপনার মামলার নম্বর দিয়ে যান।

এরপর কার্যতালিকায় থাকা মামলাসমূহের শুনানি শুরু করেন আপিল বিভাগ।

এর আগে গতকাল রোববার (৩১ অক্টোবর) একজন নারী বিচারপ্রার্থী আইনজীবী না থাকায় নিজ মামলা নিয়ে আপিল বিভাগের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।

ট্যাগস

বিএনপি যতই চাপ দিক, সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন: উপদেষ্টা নাহিদ

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থীর কোর্টে দাঁড়ানো ফ্যাশন হয়ে গেছে’

আপডেট সময় ০৩:২৬:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার:  একের পর এক আইনজীবী ছাড়াই প্রার্থীদের সরাসরি মামলার শুনানিতে দাঁড়ানো ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

আদালত বলেন, আগামীকাল থেকে আইনজীবী থাকা সত্ত্বেও কোনো বিচারপ্রার্থী আদালতে দাঁড়ালে ওই আইনজীবীর সনদ বাতিল করে দেওয়া হবে।

সোমবার (১ নভেম্বর) বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থী সরাসরি মামলার নিষ্পত্তির আবেদন করতে আদালতে হাজির হলে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ মন্তব্য করেন।

এদিন আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হলে প্রথমেই দুজন নারী বিচারপ্রার্থী দাঁড়িয়ে তাদের চাকরি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি করতে সরাসরি আদালতে আবেদন করেন। তারা আদালতে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার প্রার্থনা করেন।

এসময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আমাদের আইনমাফিক চলতে হবে। মানবিক আবেদন করবেন সরকারের কাছে। আমরা মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখবো না। আমরা দেখবো আইনের দৃষ্টিকোন থেকে। মানবিক দৃষ্টিতে দেখবে সরকার। কোর্টে কোনো মানবিকতা নেই। মানবিকতা এতটুকুই করতে পারবো, মামলাটি তাড়াতাড়ি শুনবো।

পরে মামলাটি আগামীকাল মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ।

এদিকে ওই দুই নারীর আবেদনের পরপরই আরেকজন বিচারপ্রার্থী তার আবেদন নিয়ে আদালতে হাজির হন। তিনি নিজেকে বেকার যুবক দাবি করে বলেন, আমি বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছিলাম। সেই মামলায় হাইকোর্ট থেকে রায় পেয়েছি। মামলাটি আপিল বিভাগে অপেক্ষমাণ আছে। কিন্তু রেলওয়ে আমাদের নিয়োগ দিচ্ছে না।

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা তো মহা মুশকিল। আপনার আইনজীবী কোথায়?

এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, চেম্বার আদালতে আবেদন না দিয়ে আপিলে চলে আসছেন কেন? একটা ফ্যাশন শুরু হয়ে গেছে, আইনজীবী ছাড়া কোর্টে এসে দাঁড়িয়ে যাওয়া।

প্রধান বিচারপতি জানতে চান, আপনার আইনজীবী কে? জবাবে ওই বিচার প্রার্থী বলেন, পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু।

তখন বিচারপতি ইমান আলী বলেন, আপনার আইনজীবী থাকতে আপনি এখানে দাড়াঁতে পারেন না।

এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আগামীকাল থেকে তো দেখছি লাইন লেগে যাবে। আইনজীবী থাকলে আপনি দাঁড়াতে পারেন না। আপনার মামলার অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড যিনি আছেন তাকে দিয়ে আবেদন দেন।

এরপর আরেকজন আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমি মসজিদের মোয়াজ্জিম। আমি খুবই গরিব মানুষ। আমি মানুষের জাকাত-ফেতরা নিয়ে খাই। স্যার আমার মামলটা বন্ধ হয়ে রয়েছে। যদি দয়া করে একটু দেখতেন।

একের পর এক এভাবে আইনজীবী ছাড়া সরাসরি কোর্টে দাঁড়ানোর ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এরপর থেকে যেসব আইনজীবীর মক্কেল সরাসরি কোর্টে এসে দাঁড়াবে আমরা তার সনদ বাতিল করে দেবো। আগামীকাল থেকে যারা দাঁড়াবে তাদের আইনজীবী থাকলে তাদের সনদ আমরা পাঁচজন (আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ) মিলে বাতিল করে দেবো।

আপনার আইনজীবী আছে কিনা আদালতের এমন প্রশ্নের জবাবে এই বিচার প্রার্থী বলেন, উকিল আছে। অনেক টাকা চায়। তখন আদালত বলে, আপনি আইনজীবী না রেখে থাকলে আপনারটা শুনবো। আপনার মামলার নম্বর দিয়ে যান।

এরপর কার্যতালিকায় থাকা মামলাসমূহের শুনানি শুরু করেন আপিল বিভাগ।

এর আগে গতকাল রোববার (৩১ অক্টোবর) একজন নারী বিচারপ্রার্থী আইনজীবী না থাকায় নিজ মামলা নিয়ে আপিল বিভাগের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।