ক্রীড়া ডেক্স :মাঠে অসদাচরণে চার ম্যাচ সাকিব আল হাসানকে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যে কোনো মুহূর্তে আসতে পারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
এদিকে, আম্পায়ারিংয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ না এনেই নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন সাকিব। তবে ভিন্ন সুর তুলেছেন তার জীবনসঙ্গী শিশির। বলেছেন, আম্পায়ারের করা ভুলের প্রতিবাদেই সাকিব মেজাজ হারিয়েছেন।
ইটের জবাব পাটকেলে কেমন করে দিতে খেলার মাঠ বারবার তা দেখিয়েছে, খেলোয়াড়দের প্রতিবাদে সমর্থকরাও বসায় ভাগ; সুখ দুঃখে থাকে পাশে।
২০১৯ সালে বাংলার ক্রিকেট কেঁপেছে তেমনি প্রতিবাদে; সেই আন্দোলনের নায়কও ছিলেন সাকিব আল হাসান; সমর্থকরাও ছিল পাশে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের নিষিদ্ধ হওয়ার দিনেও কেঁদেছে বাংলাদেশ, প্রতিবাদে মুখর হয়েছে রাজপথ; এমন সাজার বোঝা নিয়েছে ভাগাভাগি করে।
নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পরও সাকিবের ওপর সবার আস্থা ছিল শতভাগ, ছিল বিশ্বাস। সবাই ধরে নিয়েছিলেন মাঠেই সাকিব প্রমাণ দেবেন, কথায় নয়।
তবে সাকিব এসে যা যা করলেন, আস্থার প্রতিদান দিলেন যেভাবে তা রীতি-মতো চমকে যাবার মতো, ফর্মহীনতায় ভোগা সাকিব ডিপিএলের মাঝপথেই ভাঙলেন বায়োবাবল; সেবারও মিললো নামের গুণে রক্ষে; মুখ দেখে হয়তো বিসিবি কিছু বলতে পারেনি।
তারপর যা ঘটলো, তাতে সবাই হতবাক হয়েছে, চোখ হয়েছে ছানাবড়া; যাকে দেখে শেখে মানুষ, লাখো তারুণ্য যাকে আইকন মানে; তাকে কী এমন কাণ্ডে মানায়।
ভাবনার অতীত এই কাণ্ড ঘটিয়েও খুব স্বাভাবিক সাকিব, চাইলেন এই রকম সাধারণ ক্ষমা? বড় হলে তো মানুষের বিনয় বাড়ে, অথচ সাকিবের ঘটছে বিপরীতটাই?
শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আবাহনীর বিপক্ষে ইনিংসের পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে সাকিবের আউটের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। ওই ওভারেই আবাহনীর অধিনায়ক সাকিবকে হাঁকান একটি চার ও একটি ছক্কা।
পঞ্চম বলে সাকিব এলবিডব্লিউর আবেদন করলে আম্পায়ার সাড়া দেননি। এতে মেজাজ হারিয়ে সাকিব নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্ট্যাম্পে লাথি মেরে ভেঙে দেন।
এরপর তুমুল বৃষ্টি নামায় খেলা বন্ধ হয়ে গেলে আম্পায়ারের দিকে গিয়ে তিনটি স্ট্যাম্পই তুলে উইকেটের ওপর ছুড়ে মারেন। তিনি এ সময় আম্পায়ারকে কিছু একটা বলছিলেন।
আর মাঠ ছাড়ার সময় আবাহনীর ড্রেসিংরুমের দিকে তাকিয়ে কিছু বললে ক্ষেপে গিয়ে তেড়ে আসেন আবাহনীর কোচ মাহমুদ সুজন। এগিয়ে যান সাকিবও।
এসব ঘটনায় সাকিব ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেও ভক্তরা বুঝতে নারাজ, মানতে নারাজ, যে মাঠে যাই ঘটুক; আম্পায়ার যাই করুক তার প্রতিবাদ হতে হবে, ভদ্র ভাষায়। হাতাহাতি না করেও তো কঠোর প্রতিবাদ করা যায়; খেলার মাঠে সেই প্রতিবাদ হরহামেশাই চলে।
সহজ বিষয়টাকে কঠিন করা সাকিবের জীবনসঙ্গীর কণ্ঠেও সেই চেনা সুর, ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন।