গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ ঢাকার বাড্ডা থকে কিডনী পাচার চক্রের সদস্য গোবিন্দগঞ্জের রায়হানকে গ্রেফতার করছে গাইবান্ধা পিবিআই। গ্রেফতারের পর আদালতে কিডনি পাচারের সাথে জড়িত থাকার সে কথা স্বীকার করেছে।
গতকাল সোমবার সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিবিআই গাইবান্ধার পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ। তিনি জানান, গোবিন্দগঞ্জের একটি অপহরণের মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ওই চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ২২ নভেম্বর চাকরী দেওয়ার কথা বলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ছোটা সোহালী গ্রামের আব্দুল ওয়াহাবকে ওষুধ কোম্পানীতে চাকরী দেওয়ার কথা বলে পরিচয় সুত্রে ডেকে নেয় পার্শ্ববর্তী পশ্চিম বানিহালী গ্রামের রাকিবুল হাসান। এরপর থেকে ওয়াহাবের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় ওয়াহাবের বাবা আব্দুল মজিদ সরকার ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর গোবন্দিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ২২ নভেম্বর রাকিবুল গাজিপুর পুলিশের হাত ধরা পড়লে ওয়াহাবকে কিডনী পাচার চক্রের হাতে তুলে দেওয়ার তথ্য দেয়। পরে পিবিআই ওই মামলার তদন্তভার নেয়ার পর কিডনি পাচার চক্রের সদস্য রায়হানের সম্পৃক্ততা পায়। অনুসন্ধানের পর অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার ঢাকার বাড্ডা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
গত রোববার গাইবান্ধার অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। সেখানে জানানো হয়, ওয়াহাবকে ডেকে নেওয়ার পর রাকিবুল তাকে রায়হানের কাছে হস্তান্তর করে।
রায়হান সান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক কবির হোসেনের সহযোগিতায় ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে ওয়াহাবের মেডিকেল পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তাকে কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠায়।
সেখানে একটি দালাল চক্র দীঘর্দিন তাকে আটকে রাখার পর সেখানকার একটি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে ওয়াহাবের বাম পাশের কিডনি বের করে নেওয়া হয়।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আরও জানান, এ পর্যন্ত রাকিবুল ৪৫ ব্যক্তির কিডনি কেনাবেচা করেছে বলে জানিয়েছে। তার তথ্যের ভিত্তিতে অন্য অপরাধীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গোবিন্দগঞ্জে কিডনি পাচার চক্রের সদস্যরা সক্রিয়। তারা গোবিন্দগঞ্জসহ জয়পুরহাট ও বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে নিরীহ লোকদের নানা প্রলোভন দিয়ে ফুসলিয়ে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে কিডনিসহ শরীরে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অপসারণ করে তা বিক্রির ব্যবসা করে আসছে।