আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রাজকীয় এক আদেশ জারি করে সৌদি আরবের বেশ কয়েকজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির বাদশাহ সালমান। বরখাস্তকৃতদের মধ্যে রাজপরিবারের দুই সদস্যও রয়েছেন।
আদেশে বলা হয়েছে, ইয়েমেনে লড়াইরত সৌদি নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর কমান্ডারের পদ থেকে প্রিন্স ফাহাদ বিন তুর্কিকে অব্যাহতি দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান।
একই সঙ্গে ফাহাদের ছেলে আব্দুল আজিজ বিন ফাহাদকেও ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
রাজপরিবারের এই দুই সদস্যসহ অন্য চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের অভিযোগের তদন্ত হবে বলে আদেশে জানানো হয়েছে।
বাদশাহ সালমানের ছেলে ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেতা হিসেবে মনে করা হয়। দেশটিতে সরকারের ভেতরে তথাকথিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি।
কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, ক্ষমতা গ্রহণের প্রতিবন্ধকতা দূর করার লক্ষ্যে দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের ছোট ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আব্দুল আজিজ ও সাবেক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ-সহ রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে সবচেয়ে আলোচিত ধরপাকড়ের ঘটনা ঘটে ২০১৭ সালে। ওই সময় সৌদি রাজপরিবারের কয়েকজন সদস্য, মন্ত্রী এবং শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের রিয়াদের রিৎজ-কার্লটন হোটেলে আটকে রাখা হয়।
যদিও পরবর্তীতে সৌদির সরকারি তহবিলে ১০৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়ার বিনিময়ে তাদের বেশিরভাগই ছাড়া পান।
২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর ব্যাপক রক্ষণশীল সৌদি আরবে বেশ কিছু অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কার এনে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হন ৩৫ বছর বয়সী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
তবে ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড, সৌদির সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে কানাডায় হত্যার ষড়যন্ত্রসহ বেশ কিছু কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে।
ইয়েমেনে সংঘাত অব্যাহত রাখার কারণে সমালোচনার মুখে আছেন সৌদির এই প্রিন্স। দেশটিতে সরকারপন্থী বাহিনীকে সমর্থন দিয়ে আসছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট।
এছাড়া দেশে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হলেও নারী মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর আচরণের কারণেও সমালোচনায় আছেন সৌদি যুবরাজ।
সূত্র: বিবিসি।