ঢাকা ০৯:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি Logo ইউক্রেনের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল রাশিয়া Logo সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্ভাষণ জানালেন ড. ইউনূস Logo সুমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি বুলবুল গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার Logo সাফ চ্যাম্পিয়ন তিন নারী খেলোয়াড়কে সাতক্ষীরায় গণসংবর্ধনা Logo আপত্তিকর ভিডিও ধারণের অভিযোগ তিশার Logo আমরা সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস Logo নতুন আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পেলেন বাহারুল আলম Logo সিরিয়ার ঐতিহ্যবাহী পালমিরা শহরে ইসরায়েলি ভয়াবহ হামলায়, নিহত ৩৬, আহত ৫০ Logo ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় চালকদের বিক্ষোভ

৭০ প্রজাতির আম নিয়ে হ্লাচিংমংয়ের মিশ্র ফলবাগান

বাগান পরিচর্যা করছেন ক্রা এএ এগ্রোফার্মের স্বত্বাধিকারী হ্লাচিংমং চৌধুরী

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ পাহাড়ি এলাকায় মিশ্র ফলের বাগান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পতিত জমিতে দেশীয় প্রচলিত ফলফলাদির পাশাপাশি অপ্রচলিত বিভিন্ন ফলের চাষাবাদ করে বাণিজ্যিকভাবেও সফল হচ্ছেন কেউ কেউ।

সেই পথে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন খাগড়াছড়ির হ্লাচিংমং চৌধুরী। বিলীন প্রায় অনেক প্রজাতির ফলফলাদিও গাছের সমাহার ঘটিয়েছেন তার বাগানে।

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, তার বাগানটি গোটা দেশের অনুকরণীয় মিশ্র ফল বাগান। তার বাগানের প্রধানতম আকর্ষণ হলো ৭০ প্রজাতির আম গাছ সংরক্ষণ।

পাহাড়ি জেলার খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হ্লাচিংমং চৌধুরী অনেকের মতো চাকরির পেছনে ঘুরেননি।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে মিশ্র ফলবাগানের প্রতি মনোনিবেশ করেন। শুরুর দিকে তিনি অনেকটা শখের বশেই পাহাড়ি জমি পরিষ্কার করে ফলজ বাগান গড়েন। পরে ফল বেচে লাভের টাকায় বাগান সম্প্রসারণ করেন।

প্রচলিত ফল আম-কাঁঠাল, লিচু-আনারসের পাশাপাশি অপ্রচলিত ফল লটকন-মাল্টা, আতা-জামরুলসহ প্রভৃতি ফল শোভা পাচ্ছে তার বাগানে।

ড্রাগন-ফ্যাশন, রামবুটান-চেরিফল ছাড়াও কলাবতী-মিয়াজাকি, কিউজাই ও রেডলেডির মতো বিদেশি আমের গন্ধে মৌ-মৌ করছে বাগানজুড়েটি।

বিশেষ জাতের আম ‘আম্পালি’ ছাড়াও তার বাগানেই একমাত্র দেশি-বিদেশি ৭০ প্রজাতির আমগাছ সংরক্ষণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এজন্য ফার্মপ্লাজম সেন্টার গড়ে তোলার আশা করছেন তিনি।

ক্রা এএ এগ্রোফার্মের স্বত্বাধিকারী হ্লাচিংমং চৌধুরী বলেন, প্রচলিত কিছু আমের চারা নিয়ে বাগান শুরু করি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন নার্সারি বাগানে গিয়ে বিভিন্ন ফলের সঙ্গে পরিচিত হই।

সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিভিন্ন জাতের চারা নিয়ে বাগান করি। এখন আমার বাগানে ৭০ প্রজাতির আমসহ ২শ প্রজাতির ফলের গাছ রয়েছে।

চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই উদ্যোক্তা হয়েছি। এখন আমার বাগানে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করে।বাগানে বিচিত্র ও বিলুপ্তপ্রায় বহু প্রজাতির ফলফলাদির সমাহার ঘটিয়েছেন।

এসব ফলফলাদি বিক্রি করে গত বছরের মতো এবারও লাখ লাখ টাকা আয় করার আশা করছেন। শুধু মধুমাস জৈষ্ঠ্যতে নয়; ১২ মাসেই কোনো না-

কোনো দেশি-বিদেশি ফল পাওয়া যায় এ বাগানে। কেবল ফলজ বাগানই নয় বনজ ও ওষুধিগাছও দৃষ্টি কেড়েছে সবার। বাগানটি এখন পার্বত্যাঞ্চলের পরিচিত নাম। অনেক পর্যটক ছুটে আসেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সুনেন্দা বিকাশ চাকমা বলেন, উঁচু পাহাড়ের ওপরে বাগানটি অনেক সুন্দর। এখানে বিভিন্ন জাতের ফলের গাছ রয়েছে। চাকরির পেছনে না ছুটে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন অন্যদের জন্য অনুকরণীয়।

নিজের প্রচেষ্টাই হ্লাশিংমং তার বাগানকে দেখার মতো করে গড়ে তুলতে পেরেছেন বলে জানালেন কৃষিবিদরা। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের মিশ্র ফলবাগান হিসেবে এটিকে দেশের মডেল বলে মন্তব্য করেন তারা।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মর্তুজ আলী বলেন, হ্লাশিংমং চৌধুরী একজন আদর্শ কৃষক। তিনি নিজে বাগান-

করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বটে পাশাপাশি অন্যদের বাগান করতে উদ্বুদ্ধ করছেন। যাতে পুরো জেলায় প্রচলিত অপ্রচলিত ফল বাগান ছড়িয়ে পড়ে।

বিলীন ও হুমকির মুখে থাকা প্রায় সব ধরনের ফলের জাত সংরক্ষণ করায় এই মিশ্র বাগানটি জার্মপ্লাজম সেন্টার হিসেবে একদিন গড়ে উঠবে বলে আশাবাদী কৃষি বিজ্ঞানীরাও।

 

ট্যাগস

আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

৭০ প্রজাতির আম নিয়ে হ্লাচিংমংয়ের মিশ্র ফলবাগান

আপডেট সময় ০৭:২৯:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ পাহাড়ি এলাকায় মিশ্র ফলের বাগান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পতিত জমিতে দেশীয় প্রচলিত ফলফলাদির পাশাপাশি অপ্রচলিত বিভিন্ন ফলের চাষাবাদ করে বাণিজ্যিকভাবেও সফল হচ্ছেন কেউ কেউ।

সেই পথে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন খাগড়াছড়ির হ্লাচিংমং চৌধুরী। বিলীন প্রায় অনেক প্রজাতির ফলফলাদিও গাছের সমাহার ঘটিয়েছেন তার বাগানে।

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, তার বাগানটি গোটা দেশের অনুকরণীয় মিশ্র ফল বাগান। তার বাগানের প্রধানতম আকর্ষণ হলো ৭০ প্রজাতির আম গাছ সংরক্ষণ।

পাহাড়ি জেলার খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হ্লাচিংমং চৌধুরী অনেকের মতো চাকরির পেছনে ঘুরেননি।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে মিশ্র ফলবাগানের প্রতি মনোনিবেশ করেন। শুরুর দিকে তিনি অনেকটা শখের বশেই পাহাড়ি জমি পরিষ্কার করে ফলজ বাগান গড়েন। পরে ফল বেচে লাভের টাকায় বাগান সম্প্রসারণ করেন।

প্রচলিত ফল আম-কাঁঠাল, লিচু-আনারসের পাশাপাশি অপ্রচলিত ফল লটকন-মাল্টা, আতা-জামরুলসহ প্রভৃতি ফল শোভা পাচ্ছে তার বাগানে।

ড্রাগন-ফ্যাশন, রামবুটান-চেরিফল ছাড়াও কলাবতী-মিয়াজাকি, কিউজাই ও রেডলেডির মতো বিদেশি আমের গন্ধে মৌ-মৌ করছে বাগানজুড়েটি।

বিশেষ জাতের আম ‘আম্পালি’ ছাড়াও তার বাগানেই একমাত্র দেশি-বিদেশি ৭০ প্রজাতির আমগাছ সংরক্ষণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এজন্য ফার্মপ্লাজম সেন্টার গড়ে তোলার আশা করছেন তিনি।

ক্রা এএ এগ্রোফার্মের স্বত্বাধিকারী হ্লাচিংমং চৌধুরী বলেন, প্রচলিত কিছু আমের চারা নিয়ে বাগান শুরু করি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন নার্সারি বাগানে গিয়ে বিভিন্ন ফলের সঙ্গে পরিচিত হই।

সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিভিন্ন জাতের চারা নিয়ে বাগান করি। এখন আমার বাগানে ৭০ প্রজাতির আমসহ ২শ প্রজাতির ফলের গাছ রয়েছে।

চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই উদ্যোক্তা হয়েছি। এখন আমার বাগানে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করে।বাগানে বিচিত্র ও বিলুপ্তপ্রায় বহু প্রজাতির ফলফলাদির সমাহার ঘটিয়েছেন।

এসব ফলফলাদি বিক্রি করে গত বছরের মতো এবারও লাখ লাখ টাকা আয় করার আশা করছেন। শুধু মধুমাস জৈষ্ঠ্যতে নয়; ১২ মাসেই কোনো না-

কোনো দেশি-বিদেশি ফল পাওয়া যায় এ বাগানে। কেবল ফলজ বাগানই নয় বনজ ও ওষুধিগাছও দৃষ্টি কেড়েছে সবার। বাগানটি এখন পার্বত্যাঞ্চলের পরিচিত নাম। অনেক পর্যটক ছুটে আসেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সুনেন্দা বিকাশ চাকমা বলেন, উঁচু পাহাড়ের ওপরে বাগানটি অনেক সুন্দর। এখানে বিভিন্ন জাতের ফলের গাছ রয়েছে। চাকরির পেছনে না ছুটে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন অন্যদের জন্য অনুকরণীয়।

নিজের প্রচেষ্টাই হ্লাশিংমং তার বাগানকে দেখার মতো করে গড়ে তুলতে পেরেছেন বলে জানালেন কৃষিবিদরা। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের মিশ্র ফলবাগান হিসেবে এটিকে দেশের মডেল বলে মন্তব্য করেন তারা।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মর্তুজ আলী বলেন, হ্লাশিংমং চৌধুরী একজন আদর্শ কৃষক। তিনি নিজে বাগান-

করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বটে পাশাপাশি অন্যদের বাগান করতে উদ্বুদ্ধ করছেন। যাতে পুরো জেলায় প্রচলিত অপ্রচলিত ফল বাগান ছড়িয়ে পড়ে।

বিলীন ও হুমকির মুখে থাকা প্রায় সব ধরনের ফলের জাত সংরক্ষণ করায় এই মিশ্র বাগানটি জার্মপ্লাজম সেন্টার হিসেবে একদিন গড়ে উঠবে বলে আশাবাদী কৃষি বিজ্ঞানীরাও।