স্টাফ রিপোর্টারঃ মা দিবসে মাকে হত্যাচেষ্টাকারী সেই ছেলে মিল্লাত হোসেনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সোমবার (১৮ মে) ভোরে রাজধানীর পান্থপথ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-২-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এইচএম পারভেজ আরেফিন জানান, গ্রেফতার মিল্লাতের কাছ থেকে একটি দেশীয় ওয়ানশুটার গান ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়া যায়, টাকা না পেলে ঘরে ভাঙচুর ও মাকে মারধর করতো মিল্লাত। প্রাণ বাঁচাতে ‘ঘরবন্দি’ থাকতেন মা। বেশ কয়েকবার ছেলের মারধরের কারণে গুরুতর আহত হন ওই মা। সর্বশেষ ৭ মে লাঠি দিয়ে মাকে বেধড়ক পেটানো হয়।
নিরুপায় হয়ে পরের দিন (৮ মে) রাজধানীর কলাবাগান থানায় ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন মা। সেই মামলায় অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেফতার করলো র্যাব।
মেজর আরেফিন বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল, অভিযুক্ত মিল্লাত বাড়ির দিকে আসছে। কারণ দুই দিন আগেও সে বাড়িতে গিয়ে মাকে হুমকি দিয়ে এসেছিল। এমন খবরে গভীর রাতে পান্থপথের পানি ভবনের সামনে (ফুটওভারের নিচে) নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়।
নিরাপত্তা চৌকিতে প্রতিটি গাড়ি পরীক্ষা করা হচ্ছিল। এ সময় দূর থেকে একজন বাইকার র্যাব দেখে মোটরবাইক ঘুরিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে আমাদের সন্দেহ হয়।
কয়েকজন সদস্য দৌড়ে তাকে আটক করে। তার ব্যাগ ও শরীর তল্লাশি করতে চাইলে সে (মিল্লাত) মোটরবাইক ফেলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে।
এরপর তাকে ধরে তল্লাশির একপর্যায়ে (মিল্লাত) মোটরবাইকের মিটারের সামনে একটি ব্যাগ পাওয়া যায়। সেই ব্যাগ থেকে একটি ওয়ানশুটার গান ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।’
উদ্ধার অস্ত্র, গুলি ও মোবাইল ফোনমামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রাজধানীর কলাবাগান থানার গ্রিন রোড এলাকায় থাকেন ওই নারী। স্বামী খান শাহাদাত হোসেন দুই বছর আগে মারা গেছেন।
এক মেয়ে সরকারি চাকরিজীবী। ছেলে মিল্লাত হোসেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। স্কুলে পড়ার সময় অসৎ সঙ্গে মেলামেশার কারণে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে।
মাদকের টাকার জন্য মাকে মারধর ও ঘরে ভাঙচুর করতো সে। একাধিকবার তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাতে সে সংশোধন হয়নি, বরং বর্তমানে তার অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, ৭ মে মধ্যরাতে ছেলে মিল্লাত মা নুরুন্নাহার রুনুকে মারধর করে। মধ্যরাতে মাদক কেনার টাকার জন্য মিল্লাত প্রথমে মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
এরপর কাঠের একটি লাঠি দিয়ে মারধর করলে তার মা মাথা ও কানে আঘাত পান। এর আগেও ছেলে তাকে মাদকের টাকা না পেয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নিরুপায় হয়ে তিনি ঘটনার পরের দিন কলাবাগান থানায় ছেলের নামে মামলা করেন।