জয়পুরহাট প্রতিনিধি: ঢাকা থেকে জয়পুরহাটে ফেরার পথে গাড়ির মধ্যেই মারা যাওয়া এক ব্যক্তির লাশ করোনা রোগী ভেবে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে গেছে বাসের চালক ও হেলপার।
খবর পেয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিক্যাল টিম নিহত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় লাশটি দাফনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এতো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আহাদ পরিবহনের গাড়ি কীভাবে জয়পুরহাটে পৌঁছালো, এমন প্রশ্নই এখন সচেতন মহলের।
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা জাহানপুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমান গেল ৩/৪ দিন হলো ঢাকায় গেছেন কোমরের ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা করাতে। সেখানে একটি গার্মেন্টে চাকরি করেন তার স্ত্রী।
চিকিৎসা শেষে মাকে নিয়ে ঢাকার বিশ মাইল থেকে ২ হাজার টাকার চুক্তিতে সোমবার (১১ মে) রাতে তিনি আহাদ পরিবহনের একটি বাসে করে জয়পুরহাটে রওয়ানা দেন।
পথিমধ্যে মিজানুর রহমান মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রাতের অন্ধকারেই জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কের হিচমী বাজারে মা-সহ ছেলের লাশটি ফেলে দিয়ে চলে যায় আহাদ পরিবহনের চালক ও হেলপার। এরপরই বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পারলে এলাকায় অনেকটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার বলেন, রাতে তারা ডিউটি করার সময় সেহরী খেতে যায়। পরে ৩টা ২০ মিনিটের সময়ে তারা এসে দেখেন, এক মা-সহ তার সন্তানের লাশটি রাস্তার ধারে পড়ে আছে।
এদিকে দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢাকা থেকে কীভাবে একটি গণ পরিবহন জয়পুরহাটে এলো এমন প্রশ্নই এখন সচেতন মহলের। এ ব্যাপারে জয়পুরহাট প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খ.ম আব্দুর রহমান রনি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিৎ।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে একটি গণ পরিবহন জয়পুরহাটে প্রবেশ করলো, এমন প্রশ্নের উত্তরে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহরিয়ার খান জানান, ‘যদি বলি, এটি ঢাকা কেন্দ্রিক সমস্যা।
এরপর বলবো, হাইওয়ে পুলিশ কি করলো? ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গাড়িগুলো শহরে না ঢুকে বাইপাস হয়ে হিলিতে যায়। যে কারণে পুলিশের অনুপস্থিতিতে গত রাতে এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি ঘটেছে।’
এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জানান, ‘নিহতের মায়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তিটির শরীরে কোনো ধরনের করোনার উপসর্গ ছিল না।
তবে এরপরও খবর পেয়ে স্থানীয় মেডিক্যাল টিম তার নমুনা সংগ্রহ করেছে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ধামইরহাট উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করে লাশটি দাফনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন (সিএস) সেলিম মিয়া বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ইতোমধ্যেই ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘জয়পুরহাট জেলায় এ পর্যন্ত করোনা সন্দেহে ৩ হাজার ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করার পর ৫৬ জনের পজিটিভ এসেছে। যার মধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হওয়া ৫ জনকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।’