ঢাকা ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা

চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ‘গণহত্যা’ ও ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ এর অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা করেছেন একজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আইনজীবী।তিনি এই মামলার মাধ্যমে হাসিনা এবং তার সরকারের অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে আদালতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী ও ‘থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার’ এর আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।আশরাফুল বলেন, “আইসিসির রোম সংবিধির ১৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।”আশরাফুল গণমাধ্যমকে আরও জানান, ব্যারিস্টার সারাহ ফোর ও ব্যারিস্টার এমিল লিক্সান্দ্রু হলেন মামলার অন্য দুই আইনজীবীতিনি বলেন, “হাসিনা কর্তৃক বিক্ষোভকারীদের ওপর চালানো সহিংসতা ও দমন-পীড়নের বিস্তৃত প্রমাণ আমরা জমা দিয়েছি। এসব প্রমাণের মধ্যে সাক্ষ্য, ভিডিও ফুটেজ এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে এই আইনজীবী আরও জানান, তিনি আইসিসিতে মামলাটি দায়ের করেছেন, কারণ বাংলাদেশের আদালতে ন্যায়বিচার হওয়া নিয়ে তার সন্দেহ রয়েছে।ব্যারিস্টার আশরাফুল বলেন, “বাংলাদেশের আদালতে হাসিনা শাস্তি পাবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। কারণ তিনি (শেখ হাসনা) এখন ভারতের কাছ থেকে রাজনৈতিক সমর্থন পাচ্ছেন।””কিন্তু আইসিসি এখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে ভারত আন্তর্জাতিকভাবে এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে বাধ্য হতে পারে,” যোগ করেন তিনি।এর আগে, গত ৫ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত চাওয়ার আগ পর্যন্ত যদি ভারত তাকে সেখানে রাখতে চায়, তাহলে তাকে (শেখ হাসিনা) চুপ করে থাকতে হবে।

ভারতে বসে শেখ হাসিনার দেওয়া রাজনৈতিক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ কোথা বলেছিলেন। হাসিনার রাজনৈতিক মন্তব্যকে অবন্ধুসুলভ বলেও উল্লেখ করেছিলেন ড. ইউনূস।তিনি বলেছিলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত রেখে দিতে চাইলে তাকে চুপ থাকতে হবে যতক্ষণ না বাংলাদেশ তাকে ফেরত চায়। ভারতে তার অবস্থান নিয়ে কেউ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। কারণ, আমরা তাকে বিচারের আওতায় আনতে চাই। মাঝে মাঝে তিনি কথা বলছেন, যা সমস্যা তৈরি করছে। যদি তিনি চুপ থাকতেন, আমরা এবং সাধারণ মানুষ তাকে ভুলে যেত। কিন্তু ভারতে বসে তিনি নির্দেশনা দিচ্ছেন, যা কারোরই পছন্দ হচ্ছে না।”

ড. ইউনূস বলেছিলেন, “হ্যাঁ, তাকে ফিরিয়ে আনতেই হবে, নতুবা বাংলাদেশের মানুষ শান্তি পাবে না। তিনি যে ধরনের নৃশংসতা করেছেন, তাকে এখানে সবার সামনে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।”এর আগে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে গিয়ে সামরিক হেলিকপ্টারে চড়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়।এরই মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার স্বজনদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসিনা ভারতে আর থাকতে পারবেন কিনা এবং তাকে সম্ভাব্য প্রত্যর্পণের মুখোমুখি হতে হবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ট্যাগস

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা

আপডেট সময় ১২:১১:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ‘গণহত্যা’ ও ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ এর অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা করেছেন একজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আইনজীবী।তিনি এই মামলার মাধ্যমে হাসিনা এবং তার সরকারের অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে আদালতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী ও ‘থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার’ এর আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।আশরাফুল বলেন, “আইসিসির রোম সংবিধির ১৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।”আশরাফুল গণমাধ্যমকে আরও জানান, ব্যারিস্টার সারাহ ফোর ও ব্যারিস্টার এমিল লিক্সান্দ্রু হলেন মামলার অন্য দুই আইনজীবীতিনি বলেন, “হাসিনা কর্তৃক বিক্ষোভকারীদের ওপর চালানো সহিংসতা ও দমন-পীড়নের বিস্তৃত প্রমাণ আমরা জমা দিয়েছি। এসব প্রমাণের মধ্যে সাক্ষ্য, ভিডিও ফুটেজ এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে এই আইনজীবী আরও জানান, তিনি আইসিসিতে মামলাটি দায়ের করেছেন, কারণ বাংলাদেশের আদালতে ন্যায়বিচার হওয়া নিয়ে তার সন্দেহ রয়েছে।ব্যারিস্টার আশরাফুল বলেন, “বাংলাদেশের আদালতে হাসিনা শাস্তি পাবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। কারণ তিনি (শেখ হাসনা) এখন ভারতের কাছ থেকে রাজনৈতিক সমর্থন পাচ্ছেন।””কিন্তু আইসিসি এখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে ভারত আন্তর্জাতিকভাবে এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে বাধ্য হতে পারে,” যোগ করেন তিনি।এর আগে, গত ৫ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত চাওয়ার আগ পর্যন্ত যদি ভারত তাকে সেখানে রাখতে চায়, তাহলে তাকে (শেখ হাসিনা) চুপ করে থাকতে হবে।

ভারতে বসে শেখ হাসিনার দেওয়া রাজনৈতিক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ কোথা বলেছিলেন। হাসিনার রাজনৈতিক মন্তব্যকে অবন্ধুসুলভ বলেও উল্লেখ করেছিলেন ড. ইউনূস।তিনি বলেছিলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত রেখে দিতে চাইলে তাকে চুপ থাকতে হবে যতক্ষণ না বাংলাদেশ তাকে ফেরত চায়। ভারতে তার অবস্থান নিয়ে কেউ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। কারণ, আমরা তাকে বিচারের আওতায় আনতে চাই। মাঝে মাঝে তিনি কথা বলছেন, যা সমস্যা তৈরি করছে। যদি তিনি চুপ থাকতেন, আমরা এবং সাধারণ মানুষ তাকে ভুলে যেত। কিন্তু ভারতে বসে তিনি নির্দেশনা দিচ্ছেন, যা কারোরই পছন্দ হচ্ছে না।”

ড. ইউনূস বলেছিলেন, “হ্যাঁ, তাকে ফিরিয়ে আনতেই হবে, নতুবা বাংলাদেশের মানুষ শান্তি পাবে না। তিনি যে ধরনের নৃশংসতা করেছেন, তাকে এখানে সবার সামনে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।”এর আগে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে গিয়ে সামরিক হেলিকপ্টারে চড়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়।এরই মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার স্বজনদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসিনা ভারতে আর থাকতে পারবেন কিনা এবং তাকে সম্ভাব্য প্রত্যর্পণের মুখোমুখি হতে হবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।