ঢাকা ০৬:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীলঙ্কায় ৪৫০ কোটি ডলারের তেল শোধনাগার

চীনের রাষ্ট্রীয় তেল পরিশোধনাগার সিনোপেক শ্রীলঙ্কায় ৪৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগে যে তেল পরিশোধনাগার স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে, কলম্বোয় কর্তৃপক্ষ তাতে কাল সোমবার অনুমোদন দিতে পারে। শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী গতকাল শনিবার এ কথা জানিয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা ভিজেসেকারা বলেছেন, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অ্যাজেন্ডায় আছে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে সিনোপেককে চুক্তি সইয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা ২০২২ সালে ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে পতিত হয়। সেই সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে দেশটি। এখন তাদের নতুন বিনিয়োগ প্রয়োজন। সেই সঙ্গে অর্থনীতি চাঙা রাখতে জ্বালানির প্রয়োজনও আছে।

শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতে আরও কিছু বিনিয়োগ হলে সিনোপেকের মোট বিনিয়োগ আরও বাড়তে পারে। তবে আগে তাদের এসে আমাদের সাথে চুক্তিতে সই করতে হবে। তাহলেই আমরা বুঝতে পারব, বিনিয়োগের প্রকৃত পরিমাণ কী হবে।’ সক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম তেল পরিশোধনাগার পরিচালনা করে সিনোপেক। পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য তৈরিতেও তারা সবার ওপরে। এত দিন তারা চীনের ভেতরেই পরিশোধনাগার পরিচালনা করেছে।

এবার শ্রীলঙ্কায় বিনিয়োগ করলে তাদের কার্যপরিধি বড় হবে। তাদের অবশ্য সৌদি আরবের পরিশোধন খাতে সম্পদ ও রাশিয়ায় পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদনে বিনিয়োগ আছে। চীনের বিনিয়োগ নিয়ে অস্বস্তি ও ভূরাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যেই নতুন করে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। এর আগে হামবানটোটা বন্দর নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। হামবানটোটা বন্দর শেষ পর্যন্ত চীনের কাছে ৯৯ বছরের জন্য ইজারা দিতে বাধ্য হয় শ্রীলঙ্কা। এরপর কলম্বো বন্দরে ৩৯ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিনিময়ে লজিস্টিক ও সংরক্ষণাগার নির্মাণে আরেকটি চীনা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে শ্রীলঙ্কা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের এসব বিনিয়োগ দেশটির বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা অঞ্চল ও পথ প্রকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এদিকে সিনোপেকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দাপ্তরিক অনুমোদন পাওয়ার পরই কেবল সিনোপেক এই তেল পরিশোধনাগারের ডিজাইন থেকে শুরু করে অন্যান্য কারিগরি কাজ শুরু করবে।

সিনোপেক সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় জ্বালানির খুচরা ব্যবসা শুরু করেছে। এ নিয়ে এই কোম্পানিসহ মোট তিনটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি শ্রীলঙ্কার বাজারে খুচরা পর্যায়ে তেল বিক্রি করছে। শ্রীলঙ্কায় তাদের ১৫০টি পেট্রলপাম্প করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছে, গত আগস্ট মাসে সিনোপেক ও ভিটল নামের আরেকটি কোম্পানিকে তেল পরিশোধনাগার নির্মাণের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সিনোপেকের কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, শেষ পর্যন্ত ভিটল সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।

তবে সিনোপেক কেবল শ্রীলঙ্কার বাজারের জন্য এই তেল পরিশোধনাগার করছে না। চায়না মার্চেন্টস পোর্টের সঙ্গে তাদের অংশীদারত্ব রয়েছে। এর মাধ্যমে তারা হামবানটোটা বন্দরে সমুদ্রগ্রামী জাহাজে তেল বিক্রি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে জাহাজের ব্যস্ত এই পথে নির্মিত হামবানটোটা বন্দরে ২০১৯ সাল থেকেই তেল বিক্রি করছে চীনা কোম্পানিটি।

শ্রীলঙ্কায় ৪৫০ কোটি ডলারের তেল শোধনাগার

আপডেট সময় ০৬:১৮:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

চীনের রাষ্ট্রীয় তেল পরিশোধনাগার সিনোপেক শ্রীলঙ্কায় ৪৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগে যে তেল পরিশোধনাগার স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে, কলম্বোয় কর্তৃপক্ষ তাতে কাল সোমবার অনুমোদন দিতে পারে। শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী গতকাল শনিবার এ কথা জানিয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা ভিজেসেকারা বলেছেন, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অ্যাজেন্ডায় আছে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে সিনোপেককে চুক্তি সইয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা ২০২২ সালে ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে পতিত হয়। সেই সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে দেশটি। এখন তাদের নতুন বিনিয়োগ প্রয়োজন। সেই সঙ্গে অর্থনীতি চাঙা রাখতে জ্বালানির প্রয়োজনও আছে।

শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতে আরও কিছু বিনিয়োগ হলে সিনোপেকের মোট বিনিয়োগ আরও বাড়তে পারে। তবে আগে তাদের এসে আমাদের সাথে চুক্তিতে সই করতে হবে। তাহলেই আমরা বুঝতে পারব, বিনিয়োগের প্রকৃত পরিমাণ কী হবে।’ সক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম তেল পরিশোধনাগার পরিচালনা করে সিনোপেক। পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য তৈরিতেও তারা সবার ওপরে। এত দিন তারা চীনের ভেতরেই পরিশোধনাগার পরিচালনা করেছে।

এবার শ্রীলঙ্কায় বিনিয়োগ করলে তাদের কার্যপরিধি বড় হবে। তাদের অবশ্য সৌদি আরবের পরিশোধন খাতে সম্পদ ও রাশিয়ায় পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদনে বিনিয়োগ আছে। চীনের বিনিয়োগ নিয়ে অস্বস্তি ও ভূরাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যেই নতুন করে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। এর আগে হামবানটোটা বন্দর নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। হামবানটোটা বন্দর শেষ পর্যন্ত চীনের কাছে ৯৯ বছরের জন্য ইজারা দিতে বাধ্য হয় শ্রীলঙ্কা। এরপর কলম্বো বন্দরে ৩৯ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিনিময়ে লজিস্টিক ও সংরক্ষণাগার নির্মাণে আরেকটি চীনা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে শ্রীলঙ্কা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের এসব বিনিয়োগ দেশটির বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা অঞ্চল ও পথ প্রকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এদিকে সিনোপেকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দাপ্তরিক অনুমোদন পাওয়ার পরই কেবল সিনোপেক এই তেল পরিশোধনাগারের ডিজাইন থেকে শুরু করে অন্যান্য কারিগরি কাজ শুরু করবে।

সিনোপেক সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় জ্বালানির খুচরা ব্যবসা শুরু করেছে। এ নিয়ে এই কোম্পানিসহ মোট তিনটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি শ্রীলঙ্কার বাজারে খুচরা পর্যায়ে তেল বিক্রি করছে। শ্রীলঙ্কায় তাদের ১৫০টি পেট্রলপাম্প করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছে, গত আগস্ট মাসে সিনোপেক ও ভিটল নামের আরেকটি কোম্পানিকে তেল পরিশোধনাগার নির্মাণের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সিনোপেকের কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, শেষ পর্যন্ত ভিটল সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।

তবে সিনোপেক কেবল শ্রীলঙ্কার বাজারের জন্য এই তেল পরিশোধনাগার করছে না। চায়না মার্চেন্টস পোর্টের সঙ্গে তাদের অংশীদারত্ব রয়েছে। এর মাধ্যমে তারা হামবানটোটা বন্দরে সমুদ্রগ্রামী জাহাজে তেল বিক্রি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে জাহাজের ব্যস্ত এই পথে নির্মিত হামবানটোটা বন্দরে ২০১৯ সাল থেকেই তেল বিক্রি করছে চীনা কোম্পানিটি।