স্টাফ রিপোর্টারঃ দেশকে নাড়িয়ে দেয়া হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা পাঁচ বছর পেরিয়ে ছয়ে পড়ল। সেদিনের সেই ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার ভোরে (১ জুলাই) বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা জড়ো হন হলি আর্টিজান বেকারিতে।
বেকারির ভেতরে তৈরি করা অস্থায়ী বেদিতে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রথমে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ইতালি, জাপান ও ভারতের রাষ্ট্রদূত। শ্রদ্ধা জানানোর জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, জাপান বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী। কোনো অপতৎরতা এ দুদেশের সম্পর্ককে নষ্ট করতে পারবে না।
ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, এ ধরনের হামলা কেন ঘটে, কী কারণে মানুষ বর্বর হয়ে ওঠে সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে। আমরা বাংলাদেশ সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং এ দেশের মানুষের সঙ্গে আছি বলেও উল্লেখ করেন দোরাইস্বামী।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশান-২ এর হলি আর্টিজান বেকারিতে আত্মঘাতী হামলা চালায় একদল তরুণ। পিস্তল, সাব মেশিনগান আর ধারালো অস্ত্র হাতে পাঁচ তরুণ রাত পৌনে ৯টায় ওই ক্যাফেতে ঢুকে শুরু করে নৃশংসতা। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। অভিযানের সময় এবং পরে হাসপাতালে মারা যায় হলি আর্টিজান বেকারির দুই কর্মচারী।
ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা নামেন অভিযানে। ‘থান্ডারবোল্ট’ নামের সেই অভিযানে হামলায় সরাসরি অংশ নেয়া পাঁচ তরুণের সবাই মারা যায়। ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় মোট ১৩ জনকে। এরপর দুই বছরে হামলায় জড়িত আরও অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হন। গুলশান হামলার তদন্তে মোট ২১ জনকে চিহ্নিত করা হলেও তাদের মধ্যে জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার আটজনকেই কেবল বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হয়।
হামলাকারী পাঁচ তরুণ- নিবরাজ ইসলাম, খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ও শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল। হামলাকারী পাঁচ তরুণ- নিবরাজ ইসলাম, খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ও শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল।
দু-বছরের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দেন। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ২১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১৩ জনের সাক্ষ্য শুনে বিচারক ২৭ নভেম্বর রায় দেন।