স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁঃ নওগাঁয় পাটক্ষেত থেকে উজ্জল হোসেন (২৫) নামে এক ডিস ব্যবসায়ীর (ক্যাবল নেটওয়ার্ক) গলাকাটা মরদেহের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। গত ২৫ জুলাই সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বিলভবানীপুর গ্রামের সরদারপাড়য় একটি পাটখেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আটক কৃতরা হলেন একই গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে সুজন (২৯) এবং সিরাজুল ইসলামের ছেলে শরিফ (২৫) কে আটক করা হয়েছে। ঘটনার দিনই নিহতের মা রহিমা ৫০) বাদি হয়ে মামলা করেন। হত্যার রহস্য উদঘাটন নিয়ে মঙ্গলবার (২৭জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া তার অফিসের সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেললে পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, নিহত উজ্জল হোসেন একজন ডিস ব্যবসায়ী। পাশপাশি তিনি সুদের ব্যবসা করতেন। উজ্জল দীর্ঘদিন থেকে হত্যকারীদের কাছ থেকে সুদের টাকা এবং মাদক বিক্রির ৩০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। এছাড়া ডিস ব্যবসা নিয়েও তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল।
গত ২২ জুলাই দুপুরে স্থানীয় একটি বাজারের দোকানে হত্যকারীরা একত্রিত হয়ে উজ্জলকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যকারীরা উজ্জলের নিকট থেকে নেশা জাতীয় অ্যাম্পল ইনজেকশন নেওয়ার কথা বলে ২৪ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিলভবানীপুর গ্রামের মাঠে নির্জন স্থানে ডেকে নেয়। সেখানে গভীর নলকুপ (ডিপ টিউবওয়েল) ড্রেনের ওপরে তারা অ্যাম্পল নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করে। পরবর্তিতে সেখানে শরীফ ও সুজন যায়। তারা সকলেই মাদকসেবী। অ্যাম্পল নেওয়ার এক পর্যায়ে সুজন কৌশলে প্রসাব করার নাম করে ওঠে যায় এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী পিছন থেকে এসে ধারালো ছুরি দিয়ে উজ্জলের গলায় সজোরে টান দেয়। এতে উজ্জল লাফালাফি শুরু করলে অন্যরা এসে তার হাত-পা চেপে ধরে গলা কেটে ফেলে।
উজ্জলের মৃত্যু নিশ্চিত করতে শরীফ তার কাছে রাখা ধারালো আরেকটি ছুরি দিয়ে দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। এরপর তার মরদেহ পাশের একটি পাটক্ষেতে এবং ছুটি দুটি পানিতে ফেলে দেয়।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, পরদিন সকালে স্থানীয়রা পাটক্ষেতে উজ্জলের গলাকাটা মরদেহ দেখে থানা পুলিশে সংবাদ দেয়। ২৫ জুলাই রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) গাজিউর রহমান, অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাসুদ রানা সহ পুলিশের একটি টিম খুনিদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুটি ছুরি উদ্ধার করে।
এ হত্যাকান্ডে তিনজন খুনি সরাসরি অংশগ্রহন করে। একজন পলাতক রয়েছে। ২৬ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে সুজন ও শরিফকে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম মামুন খান চিশতী ও গাজিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সাবিনা ইয়াসমিন, সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সুরাইয়া খাতুন, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলামসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা।