ক্রীড়া ডেস্ক : শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে টোকিও অলিম্পিক গেমসে ‘অলিম্পিক লরেল’ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের মাত্র দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এই সম্মাননা পেলেন তিনি। শুক্রবার ড. ইউনূসের ‘অলিম্পিক লরেল’ হাতে পাওয়ার বিষয়টি ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে ড. ইউনূস সশরীরে অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেননি। তবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি গেমসে অংশগ্রহণকারী অ্যাথলেটদের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন।
এর আগে গত ১৫ জুলাই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) এক বিবৃতিতে জানায়, ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচনে বিশেষ অবদান রেখে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছেন ড. ইউনূস। এবার ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য অলিম্পিকে ৮১ বছর বয়সী অর্থনীতিবিদকে এই বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হবে।
‘অলিম্পিক লরেল’ পদক মূলত তাদেরকেই প্রদান করা হয় যারা শিক্ষা, সংস্কৃতি, উন্নয়ন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রাখেন। সেই লক্ষ্যে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো ‘অলিম্পিক লরেল’ পদক দেওয়ার প্রচলন শুরু হয়।
সেবার রিও অলিম্পিকে এই সম্মানজনক পদক দেওয়া হয় কেনিয়ার সাবেক অলিম্পিয়ান কিপ কেইনোকে। তিনি ১৯৬৮ এবং ১৯৭২ সালে ১৫০০ মিটারে স্বর্ণপদক জেতেন।
এছাড়া তিনি ছিলেন কেনিয়ার অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট এবং আইওসির সান্মানিক সদস্য। তিনি নিজের দেশে শিশুদের জন্য স্কুলের পাশাপাশি একটি অ্যাথলেট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও গড়ে তুলেছেন।
কিপ কেইনোর পর ড. ইউনূস হতে যাচ্ছেন ‘অলিম্পিক লরেল’ সম্মাননা পাওয়া দ্বিতীয় ব্যক্তি। আইওসির বিবৃতি অনুযায়ী, আগামী ২৩ জুলাই ২০২১ অলিম্পিক এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস “অলিম্পিক লরেল” পুরস্কার গ্রহণ করবেন।
অলিম্পিক এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) পক্ষ থেকে পুরস্কারটি প্রদান করবে। সারা বিশ্বে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ অনুষ্ঠানটি সরাসরি দেখবেন।
এ ব্যাপারে অলিম্পিক প্রেসিডেন্ট থমাস বাখ বলেন, “প্রফেসর ইউনূস আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। ” তিনি আরও বলেন, প্রফেসর ইউনূস তাঁর সামাজিক ব্যবসায়ের ধারণাকে ক্রীড়া জগতে উন্নয়নের জন্য কাজ করার জন্য এই সম্মান পাবেন।
১৯৮০ সালে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন ড. ইউনূস। এরপর ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান তিনি। প্রফেসর ইউনূসের বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে ‘ইউনূস স্পোর্টস হাব’।
এর মাধ্যমে একটি সামাজিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলার মাধ্যমে উন্নতির পথকে আরও সহজের চেষ্টা করে।
এর আগে ২০১৬ সালে ব্রাজিলে রিও অলিম্পিকে মশাল বহন করেন ড. ইউনূস। তিনিই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এমন বিরল সম্মান অর্জন করেন।