ক্রীড়া ডেক্স : হারারে টেস্টের প্রথম ইনিংসে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশ দলের ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদ। টেস্ট ক্রিকেটে নিজের আগের ১৩ ইনিংসে দশ রানের বেশি করতে পেরেছিলেন মাত্র একবার। বাকি ১২ ইনিংসেই তাকে থামতে হয়েছে এক অঙ্ক তথা দশ রানের নিচে।
সেই তাসকিনই জিম্বাবুয়ে সফরের একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ৭৫ রানের ইনিংস। প্রায় ৪ ঘণ্টা উইকেটে থেকে ১৩৪ বল খেলে ১১ চারের মারে এই রান করেছেন ডানহাতি এ পেসার।
জিম্বাবুয়ের বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে দুর্দান্ত কিছু কভার ড্রাইভ খেলেছেন তাসকিন। যা দেখে বোঝার উপায় ছিল না, তিনি আদৌ একজন লেজের সারির ব্যাটসম্যান কি না। সেসব শট হয়তো যেকোনো ব্যাটসম্যানও খেলতে চাইবেন নিজের সেরা দিনে।
শুধু নিজের ব্যাটিংই নয়, নবম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ১৯১ রানের রেকর্ড জুটি গড়ে বাংলাদেশ দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেয়ার কৃতিত্বটাও তাসকিনের। আর তিনি নিজের ব্যাটিং উন্নতির পেছনে মূল কৃতিত্ব দিলেন দলের ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুককে।
বাংলাদেশ দলে বরাবরই থাকেন এক ব্যাটিং স্পেশালিস্ট কোচ কিংবা পরামর্শক। চলতি সফরের আগপর্যন্ত কাজ করেছেন জন লুইস, তার আগে ছিলেন নেইল ম্যাকেঞ্জি। আর এবারের জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে রয়েছে অ্যাশওয়েল প্রিন্স।
তবে বোলারদের নিয়ে ব্যাটিংয়ের কাজটা উৎসাহের সঙ্গেই করে থাকেন ফিল্ডিং কোচ। বুধবার হারারে টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে এমনটাই জানালেন তাসকিন। মূলত রায়ান কুকের অনুপ্রেরণায় বোলাররাও ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দেয়া শুরু করেছেন বলেছেন তিনি।
তাসকিনের ভাষ্য, ‘ব্যাটিং কোচ এই সিরিজে এসেছে। তার সঙ্গে তেমন কাজ হয়নি তবে কথা হয়েছে। আমাদের বোলারদের ব্যাটিংয়ের জন্য উৎসাহ দেন আমাদের ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক। শেষ সিরিজে তিনি বলেছিলেন এবার যেন আমি আসার সময় ব্যাটিং স্পাইক (জুতা) কিনে নিয়ে আসি।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সাধারণত বোলাররা বোলিং বুট পরেই ব্যাটিং করি। ব্যাটিং বুট পরে এবারই নেমেছি। কোচ খুশিও হয়েছিল। আজ আসার সময় তিনি বলছিলেন, দেখেছ, ব্যাটিংয়ে নামার সময় তুমি ব্যাটসম্যানই। তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে ব্যাটিংয়ের জন্য উৎসাহ দেয়ায়।’
এসময় তাসকিন জানান, সবসময়ই তিনি চেষ্টা করেন লেজের সারির ব্যাটসম্যান হয়েও যেন দলের সংগ্রহে অবদান রাখা যায়। বিশেষ করে উইকেটে প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান থাকলে তাকে সঙ্গ দেয়ার চিন্তাই থাকে বেশি। যা সফল হয়েছে চলতি হারারে টেস্টে।
তাসকিন বলেছেন, ‘সবসময়ই ভালো টেইলএন্ডার হওয়ার লক্ষ্য থাকে। প্রত্যেক বড় দলেই দেখবেন নিচের ব্যাটসম্যানরা যথেষ্ঠ নির্ভরযোগ্য। আমিও চাই নির্ভরযোগ্য একজন টেইলএন্ডার হতে। যেন দলের দ্রুত উইকেট পড়লে বা থিতু হওয়া কোনো ব্যাটসম্যান থাকলে তাকে একটু সাপোর্ট দিয়ে খেলতে পারি।’