সাপাহার, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর সাপাহার উপজেলার সাপাহার ক্যাডেট স্কুল পাড়ায় সৌদি মসজিদের পার্শ্বে মাতৃছায়াছাত্রাবাস থেকে সুমি খাতুন (১৭) নামের এক কিশোরী গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার সন্ধ্যায়, পুলিশ রান্না ঘরের কক্ষের ফ্যান লাগানো রডের সাথে দড়িতে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে।
নিহত গৃহবধুর বাবার বাড়ি পত্নীতলা উপজেলার দিবর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আলী হোসেন।
পুলিশ ও মৃত ব্যক্তির স্বজন সূত্রে জানা যায়, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে পারিবারিক ভাবে পাতাড়ী উত্তর পাড়া গ্রামের তফিজুলের ছেলে সেলিম রেজা(২৫) এর সাথে বিয়ে হয়, দীর্ঘ ৯মাস তারা সংসার করছিলো বিয়ের পর মেয়ে থাকতো ছেলের বাড়িতে আর ছেলে এক সার,বিষ কোম্পানিতে চাকুরীর সুবাদে ছেলে সাপাহার ক্যাডেট স্কুল পাড়ার সৌদি মসজিদের পার্শ্বে মাতৃছায়া নামের একটি ছাত্রাবাসে ভাড়া থাকতো। দীর্ঘ দিন করোনার কারনে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে থাকায় ওই ছাত্রাবাসে অন্য কেউ থাকতো না।
সে ছেলে একায় থাকতো। ঘটনার ৮/১০ দিন আগে মেয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায় অনেকদিন হওয়ার কারনে জামাই মেয়ের বাবাকে ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার রেখে যেতে বলে সেদিন সকালেই মেয়ের বাবা সাপাহারে তার জামাইয়ের কাছে রেখে যায় দুপুরের পর হঠাৎ দিবর গ্রামে মেয়ের এক আত্নীয় মারা যাবার কারনে সে মেয়ে তার বাবার বাড়িতে আবারো চলে যায় চলে যায়। ওই দিন মেয়ে তার বাবার বাড়িতে ছিল পরের দিন বুধবারে আবারো ছেলে শশুরকে ফোন দিয়ে বলেন সুমিকে রেখে যান।
তখন মেয়ের মা ও বাবা মেয়েকে নিয়ে সাপাহার জিরো পয়েন্টে জামাইয়ের কাছে পৌছে দেয়। জামাই তখন তার শশুর শাশুড়িকে বলেন মেয়ের গায়ে জ্বর জ্বর ভাব তাই আমি সুমিকে ডাক্তার দেখাবো।আমি সুমিকে চিকিৎসা করায়ে তারপর পাতাড়ীতে পাঠাবো।
কিন্তু চিকিৎসা না করায়ে ছেলেটি যে ছাত্রাবাসে থাকতো সেখানে সুমিকে নিয়ে যায়।তার কয়েক ঘন্টা পর বিকেলে সে তার স্ত্রীর গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার স্বামী মেয়ের বাবাকে বলে আপনার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে।
এই ঘটনা শোনার পর মেয়ের মা বাবা আত্নীয় স্বজনরা ছুটে এসে ওই ছাত্রাবাসে এসে দেখে মেয়ে গলায় দড়ি লাগানো অবস্থায় রান্না ঘরে ঝুলে আছে মুখে গামছা পেছানো,১ হাতে দড়ি বাধা আর পার্শ্বের ঘরে মেয়ের ওরনা, কম্বল, মেয়ের মাথার এলাস্টিক,রাবার ক্লিপ গুলো মেঝেতে পড়ে আছে রুমে থাকা সাইকেল পড়ে আছে। এবং ফাঁস লাগানো দড়ির উদ্ধৃত কিছু অংশ কাঁটা অবস্থায় পাশে পড়ে আছে।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঘরের ফ্যান লাগানো রডের সঙ্গে দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে।
মারা যাওয়া মেয়ের বাবা আলী হোসেন বলেন, আমার মেয়ে ভালো ছিল আজ আমি নিজে আমার জামাই সেলিম এর কাছে রেখে গেলাম। আমার মেয়ের আচরণ স্বাভাবিক ছিল। রেখে যাবার কয়েক ঘন্টা পর আমার জামাই জানায় আপনার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে।
তিনি দাবি করেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে , এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমার ধারণা কেউ তাঁকে হত্যা করার পর লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করছেন।