বিনোদন ডেস্ক: ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের পপগুরু আজম খানের জন্মদিন। ১৯৫০ সালের এদিনে ঢাকার আজিমপুরে জন্মগ্রহণ করেন প্রয়াত পপসম্রাট, সংগীতশিল্পী এবং মুক্তিযোদ্ধা আজম খান। ‘গুরু’ নয়, ‘আজম ভাই’ সম্বোধনটি পছন্দ করতেন তিনি।
কিন্তু সবার ভালোবাসা তাকে ‘গুরু’ করে তুলেছিল। সেই গুরুর জন্মদিন কাটছে নিরবে-নিভৃতে। গুরুর জন্মদিনে বিশেষ কোনও আয়োজনের খবর নেই। তবে তার অগণিত গুণগ্রাহী ও ভক্তরা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা সহকারে স্মরণ করছেন প্রিয় শিল্পীকে। সামাজিকমাধ্যমেও নিজেদের মতো করে অনেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পপগুরুকে।
আজম খানের প্রকৃত নাম ছিল মাহবুবুল হক খান। ২০১০ সালে তার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এর এক বছর পর ২০১১ সালের ৫ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
রাজধানী ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনিতে আজম খানের জন্ম। শৈশবের ৫ বছর ওখানেই কাটে তার। ৫ বছর বয়সে ভর্তি হন ঢাকেশ্বরী স্কুলে। এরপর কমলাপুরে নিজেদের বাড়িতে চলে যান সপরিবারে। ১৯৭০ সালে টিঅ্যান্ডটি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন তিনি।
প্রগতিশীল চেতনার ধারক আজম খান ১৯৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের সময়েই সোচ্চার হয়ে ওঠেন। সেসময়ের ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণসংগীত প্রচারে অংশ নেন তিনি।
এরপর ১৯৭১ সালে পাক হানাদারের বিরুদ্ধে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন আজম খান। কুমিল্লা ও ঢাকার আশেপাশে সেকশন কমান্ডার হিসেবে অনেকগুলো গেরিলা আক্রমণে বীরবিক্রমে অংশ নেন তিনি।
দেশ স্বাধীন হলে ‘উচ্চারণ’ নামে একটি ব্যান্ড দল গড়ে তোলেন আজম খান। দেশের সংগীত জগতে তখন দারুণ আলোড়ন তোলে ব্যান্ড দলটি।
১৯৭২ সালে তার ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ আর ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি বিটিভিতে প্রচার হয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। পরবর্তী সময়ে বিটিভিতে ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’ গান গেয়ে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিলেন আজম খান।
আজম খানের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘একসিডেন্ট’, ‘অভিমানী’, ‘আসি আসি বলে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘পাপড়ি’, ‘বাধা দিও না’, ‘যে মেয়ে চোখে দেখে না’, ‘অনামিকা’, ‘আমি যারে চাইরে’ ইত্যাদি।