মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ প্রায় দুই যুগ পর পুনরায় আরিচা-কাজীরহাট রুটে ফেরি চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে নৌ-রুট সচল করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে রোরো ফেরি বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চালু করেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক।
এ সময় কয়েকটি প্রাইভেটকার নিয়ে বড় ফেরিটি কাজীরহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিক ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ ঘাট সূত্রে জানা গেছে, গত কয়ে মাস আগে প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ নৌ-রুটের সচল করার জন্য কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে ড্রেজিং করে নাব্যতা সংঙ্কট দূর করে রুট সচল করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে ফেরিতে উঠার অ্যাপ্র্যোচ রোড়। উভয় ঘাটে ফেরি ভিড়ার জন্য প্লটুন স্থাপনসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নাব্যতা সংঙ্কট যাতে না হয় এ জন্য কয়েকটি ড্রেজার নৌ-রুটে নদীতে রয়েছে। এতে করে যমুনা সেতুর উপরে চাপ কমার পাশাপাশি খুব দ্রুত সময়ে দেশের পশ্চিম-উত্তর অঞ্চলের মানুষ ও পণ্যবাহী মালামাল খুব সহজে রাজধানী ঢাকার সাথে পৌছাঁতে পারবে।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক জানান, ইতিমধ্যে এ রুটের সচল করার জন্য সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় তার জন্য আপাতোত ফেরি ট্রায়াল দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে চাহিদানুয়ী ফেরি বাড়ানো হবে। চলতি মাসের যেকোনো দিন আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরি চলাচল উদ্বোধনের কথা রয়েছে। আগের মতোই আবার আরিচা ফেরিঘাট যৌবন ফিরে পাবে। নৌ-রুটটি নচল রাখার জন্য আমাদের সকল ব্যবস্থা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) রকিবুল ইসলাম তালুকদার বলেন, নাব্যতা সঙ্কট হলেও আমাদের পর্যাপ্ত ড্রেজার রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৫টি ড্রেজার আছে। শুধু এ রুটেই ৯টি ড্রেজার বসানো হয়েছে।
তাই এখন শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা সংঙ্কট হবে না বলে আশা করছি। ১২ ফুট (ড্রাফট) পানির গভীরতা করা কথা থাকলে এখন ১০ ফুট করা হয়েছে। পর্যায় ক্রমে এ পলি মাটি অপসারণ করা হবে।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যলয়ের ডিজিএম মো. জিল্লুর রহমান কালের কণ্ঠ বলেন, সমন্বয় করে এ নৌ-রুটে ভাড়া নিধারণ করা হবে। রুটটি চালু হবার কারণে পশ্চিমাঞ্চলের জনপদের ঢাকার সাথে যোগাযোগ আরো সহজ হবে। ভবিষতে চাহিদা অনুযায়ী ফেরি বাড়ানো হবে। সকল ধরনের সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, এক সময়ে আরিচা বন্দর সারা দেশে বিশেষ পরিচিতি ছিল। কিন্তু এখান থেকে ফেরি ঘাট পাটিুরিয়ায় স্থানান্তর হওয়ায় আরিচাকে সবাই ভুলতে বসেছিল। আবার ফেরি সার্ভিস চালু হতে যাওয়ায় এলাকায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে। আবার স্থানীয়রা ঘাটকেন্দ্রী ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে তুলবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল), মহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) রকিবুল ইসলাম তালুকদার ,আরিচা অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী নিজাম পাঠান, বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যলয়ের ডিজিএম মো. জিল্লুর রহমানসহ বিআইডব্লিউটিএর-টিসির বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।