ঢাকা ০১:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৮ জাতের সবজিতে ভরে উঠেছে মহাদেবপুর উপজেলা প্রশাসনিক চত্বর

মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ   জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে কৃষি বিপ্লবের অংশ হিসেবে কৃষকদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা চত্বরের পতিত জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে।

মহাদেবপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উপজেলা চত্বর জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে শীতকালীন সবজির সবুজের সমারহ।

কিছুদিন আগেও এই জায়গাগুলো ছিল পতিত জমি। বর্তমানে সবজি চাষে বদলে গেছে দৃশ্যপট। চিরচেনা এ সবুজ দৃশ্য উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে সেবা নিতে আসা মানুষের নজর কাড়ছে। এতে সেবা প্রত্যাশীরা তাঁদের বসত বাড়ির পতিত জমিতে সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালে কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে ‘এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার পর ইউএনও মিজানুর রহমান মিলনের অনুপ্রেরণায় গত বছরের অক্টোবর মাসে কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায়ের সার্বিক তত্ত¡াবধানে উপজেলা পরিষদ চত্বরের প্রায় দেড় বিঘা পতিত জমিতে এ সবজি ক্ষেত গড়ে তোলা হয়। এতে অর্গানিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে। বিষমুক্ত এবং সতেজ এসব সবজি দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চাহিদা মেটাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইট পাথরের শহরে স্বপ্ন বোনা ফসলের মাঠ। সেখানে বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, মুলা, লাউ, লালশাক, পুঁইশাক, ধনিয়া পাতা, ঢেঁড়শ, পেঁপে, পুদিনাসহ প্রায় ২০ রকমের সবজি রয়েছে। কৃষি শ্রমিক গণেশ মন্ডল ও সুকুমলের পদধূলিতে ছোট চারা বেড়ে উঠছে, ধরছে ফসল। ধনে পাতার সুভাস ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে-বাতাসে। নীরবেই মুলার শরীর মোটাতাজা হচ্ছে মাটির নিচে।

প্রতিদিন সূর্য ওঠার সাথে সাথে ২-৩ জন কৃষি শ্রমিক ছুটে আসেন উপজেলা প্রশাসনের সবজি ক্ষেতে। শরীরের সবটুকু শক্তি আর মনের গভীরে পোষা ভালোবাসায় সিক্ত করে তোলেন কপি, টমেটো কিংবা লাউ’র গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত। ক্ষেতে পানি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার, নিড়ানি দেয়াসহ পরিচর্যায় সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করেন তারা।

কৃষি অফিসে সেবা নিতে আসা উপজেলার সফাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘উপজেলার পতিত জমিতে সবজি চাষ দেখে ভাল লেগেছে। তিনিও তাঁর বাড়ির দেড় শতক পতিত জমিতে সবজি চাষ করবেন বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেন।’

কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে জানিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, ‘প্রশাসনের এই উদ্যোগ একটি দৃষ্টান্ত। নিয়মিত ক্ষেতের রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘উপজেলা চত্বর ছাড়াও দেশের সরকারি-বেসরকারি সব অফিসের পতিত জমিতে এমন সবজি বাগান গড়ে তোলা যায়।’

কৃষকদের বাড়ির আঙিনা পতিত না রেখে সবজি চাষ করার আহŸান জানিয়ে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা “দেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না” সে অনুয়ায়ী উপজেলা চত্বর ও আশে পাশের পতিত জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

ট্যাগস

২৮ জাতের সবজিতে ভরে উঠেছে মহাদেবপুর উপজেলা প্রশাসনিক চত্বর

আপডেট সময় ১০:৪২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২১

মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ   জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে কৃষি বিপ্লবের অংশ হিসেবে কৃষকদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা চত্বরের পতিত জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে।

মহাদেবপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উপজেলা চত্বর জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে শীতকালীন সবজির সবুজের সমারহ।

কিছুদিন আগেও এই জায়গাগুলো ছিল পতিত জমি। বর্তমানে সবজি চাষে বদলে গেছে দৃশ্যপট। চিরচেনা এ সবুজ দৃশ্য উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে সেবা নিতে আসা মানুষের নজর কাড়ছে। এতে সেবা প্রত্যাশীরা তাঁদের বসত বাড়ির পতিত জমিতে সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালে কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে ‘এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার পর ইউএনও মিজানুর রহমান মিলনের অনুপ্রেরণায় গত বছরের অক্টোবর মাসে কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায়ের সার্বিক তত্ত¡াবধানে উপজেলা পরিষদ চত্বরের প্রায় দেড় বিঘা পতিত জমিতে এ সবজি ক্ষেত গড়ে তোলা হয়। এতে অর্গানিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে। বিষমুক্ত এবং সতেজ এসব সবজি দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চাহিদা মেটাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইট পাথরের শহরে স্বপ্ন বোনা ফসলের মাঠ। সেখানে বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, মুলা, লাউ, লালশাক, পুঁইশাক, ধনিয়া পাতা, ঢেঁড়শ, পেঁপে, পুদিনাসহ প্রায় ২০ রকমের সবজি রয়েছে। কৃষি শ্রমিক গণেশ মন্ডল ও সুকুমলের পদধূলিতে ছোট চারা বেড়ে উঠছে, ধরছে ফসল। ধনে পাতার সুভাস ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে-বাতাসে। নীরবেই মুলার শরীর মোটাতাজা হচ্ছে মাটির নিচে।

প্রতিদিন সূর্য ওঠার সাথে সাথে ২-৩ জন কৃষি শ্রমিক ছুটে আসেন উপজেলা প্রশাসনের সবজি ক্ষেতে। শরীরের সবটুকু শক্তি আর মনের গভীরে পোষা ভালোবাসায় সিক্ত করে তোলেন কপি, টমেটো কিংবা লাউ’র গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত। ক্ষেতে পানি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার, নিড়ানি দেয়াসহ পরিচর্যায় সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করেন তারা।

কৃষি অফিসে সেবা নিতে আসা উপজেলার সফাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘উপজেলার পতিত জমিতে সবজি চাষ দেখে ভাল লেগেছে। তিনিও তাঁর বাড়ির দেড় শতক পতিত জমিতে সবজি চাষ করবেন বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেন।’

কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে জানিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, ‘প্রশাসনের এই উদ্যোগ একটি দৃষ্টান্ত। নিয়মিত ক্ষেতের রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘উপজেলা চত্বর ছাড়াও দেশের সরকারি-বেসরকারি সব অফিসের পতিত জমিতে এমন সবজি বাগান গড়ে তোলা যায়।’

কৃষকদের বাড়ির আঙিনা পতিত না রেখে সবজি চাষ করার আহŸান জানিয়ে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা “দেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না” সে অনুয়ায়ী উপজেলা চত্বর ও আশে পাশের পতিত জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।