ঢাকা ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধামইরহাটে পানি নিষ্কাশনের অভাবে শত শত বিঘা জমির ফসল নষ্ট

ধামইরহাট, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ধামইরহাটে শত শত বিঘা কৃষি জমির ফসল পানি নিষ্কাশনের অভাবে এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে।

পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠ ব্যবস্থা না থাকায় তিন ফসলি জমিগুলো প্রায় কয়েকবছর ধরে তলিয়ে থাকার কারণে ওই এলাকার কৃষকরা বর্ষা মৌসুমে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না। শত কষ্টের পরেও ওইসব জমিতে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ করে থাকলেও পানিতে তলিয়ে গিয়ে তাদের চারা গুলো নষ্ট হয়েছে।

টানা বৃষ্টিপাতে নিচু জমিগুলোতে পানি জমিয়ে থাকায় ধানের রোপণকৃত চারাগুলো বিনষ্ট হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক পর্যায়ের নানান কৃষক। আর কিছুদিন পরেই কৃষকের ঘরে নতুন ধান উঠতে শুরু হবে।

কিন্তু পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসল হারানো কষ্টে কৃষকদের বুকে চাপার আর্তনাদ।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে এবারে উপজেলায় লক্ষমাত্রা রয়েছে ১৯,৭৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও টানা বর্ষনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১২৩ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে।

সরে জমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর মহিষগাড়ি বাধেঁর পুর্ব পার্শে রাঙালঘাট, মহিষপুর, মানপুর এলাকায় প্রায় ৪ শত বিঘা জমির ফসল দীর্ঘ সময় পানিতে তলিয়ে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে। নদীর পশ্চিম পাড়ের চর এলাকার ও শত শত বিঘা জমির ফসল পানি নিষ্কাশনের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। উচু কিছু জমির ফসল ঘরে তুলতে পাওয়ার আশা থাকলেও নিচু জমিগুলোর ফসল সম্পুন্ন নষ্ট হয়ে পড়েছে। ওই ইউনিয়নে টানা বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার কারণে ৭৪ হেক্টর জমির ধান ও ৩ হেক্টর জমির রবিশস্য চলতি মৌসুমে নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষকদের দাবী ওই নদীর বাঁধ নির্মাণের পর থেকে পানি নিষ্কাশনের অভাবে তাদের ফসল প্রতি বছরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাঁধে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হলে ওইসব জমির ফসল রক্ষা পাবে এমনটা মনে করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

ওই এলাকার কৃষকদের পানির নিচে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা জমির ফসলগুলো রক্ষার্থে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ড নওগাঁ ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট রাঙ্গালঘাট এলাকার মহিষগাড়ি বাধেঁ পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্রিজ ও কালভাট নির্মাণ এবং পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর হরিপুর ব্রিজ থেকে জাবারপুর ঘাট পর্যন্ত নদী পুনঃখনন করলে ওই সব কৃষকদের জমির ফসল সুষ্ঠ ভাবে প্রতি বছরে ঘরে তুলতে পারবেন।

এ বিষয়ে রাঙ্গালঘাট এলাকার কৃষক দেলোয়ার হোসের সরদার জানান, আমি ৮ বিঘা সম্পত্তি বহুত বছর আগে ক্রয় করেছি কিন্তু মহিষগাড়ি বাঁধ নির্মাণের পর থেকে আমার সর্ম্পুন্ন জমির ফসল বর্ষা মৌসুম এলেই পানিতে তলিয়ে যায়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে ফসল পানির নিচে থাকায় সব জমির ফসল বিনষ্ট হয়ে পড়ে। এবারো আমার সকল জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ইসবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েশ বাদল বলেন, গত মাসে উপজেলা পর্যায়ে একটি সমন্বয় সভা অনু

ষ্ঠিত হয়েছে খুব শিঘ্রই এই বিষয়ে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর সাথে কথা বলে আমরা ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার গনপতি রায় বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নওগাঁ জেলা শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফউজ্জামান খান বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য লিখিত ভাবে ফরমুলা অনুসরণ করে আসতে পারলে আমরা বিষয়টি দেখবো।

তার পরেও আমার এবিষয়ে জানা ছিলনা আমি আমার লোকজন ওই এলাকায় পাঠিয়ে দিব বিষয়টি কি পর্যায়ে আছে তা দেখার পর একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস

ধামইরহাটে পানি নিষ্কাশনের অভাবে শত শত বিঘা জমির ফসল নষ্ট

আপডেট সময় ০৫:৪৭:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর ২০২০

ধামইরহাট, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ধামইরহাটে শত শত বিঘা কৃষি জমির ফসল পানি নিষ্কাশনের অভাবে এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে।

পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠ ব্যবস্থা না থাকায় তিন ফসলি জমিগুলো প্রায় কয়েকবছর ধরে তলিয়ে থাকার কারণে ওই এলাকার কৃষকরা বর্ষা মৌসুমে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না। শত কষ্টের পরেও ওইসব জমিতে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ করে থাকলেও পানিতে তলিয়ে গিয়ে তাদের চারা গুলো নষ্ট হয়েছে।

টানা বৃষ্টিপাতে নিচু জমিগুলোতে পানি জমিয়ে থাকায় ধানের রোপণকৃত চারাগুলো বিনষ্ট হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক পর্যায়ের নানান কৃষক। আর কিছুদিন পরেই কৃষকের ঘরে নতুন ধান উঠতে শুরু হবে।

কিন্তু পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসল হারানো কষ্টে কৃষকদের বুকে চাপার আর্তনাদ।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে এবারে উপজেলায় লক্ষমাত্রা রয়েছে ১৯,৭৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও টানা বর্ষনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১২৩ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে।

সরে জমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর মহিষগাড়ি বাধেঁর পুর্ব পার্শে রাঙালঘাট, মহিষপুর, মানপুর এলাকায় প্রায় ৪ শত বিঘা জমির ফসল দীর্ঘ সময় পানিতে তলিয়ে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে। নদীর পশ্চিম পাড়ের চর এলাকার ও শত শত বিঘা জমির ফসল পানি নিষ্কাশনের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। উচু কিছু জমির ফসল ঘরে তুলতে পাওয়ার আশা থাকলেও নিচু জমিগুলোর ফসল সম্পুন্ন নষ্ট হয়ে পড়েছে। ওই ইউনিয়নে টানা বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার কারণে ৭৪ হেক্টর জমির ধান ও ৩ হেক্টর জমির রবিশস্য চলতি মৌসুমে নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষকদের দাবী ওই নদীর বাঁধ নির্মাণের পর থেকে পানি নিষ্কাশনের অভাবে তাদের ফসল প্রতি বছরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাঁধে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হলে ওইসব জমির ফসল রক্ষা পাবে এমনটা মনে করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

ওই এলাকার কৃষকদের পানির নিচে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা জমির ফসলগুলো রক্ষার্থে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ড নওগাঁ ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট রাঙ্গালঘাট এলাকার মহিষগাড়ি বাধেঁ পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্রিজ ও কালভাট নির্মাণ এবং পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর হরিপুর ব্রিজ থেকে জাবারপুর ঘাট পর্যন্ত নদী পুনঃখনন করলে ওই সব কৃষকদের জমির ফসল সুষ্ঠ ভাবে প্রতি বছরে ঘরে তুলতে পারবেন।

এ বিষয়ে রাঙ্গালঘাট এলাকার কৃষক দেলোয়ার হোসের সরদার জানান, আমি ৮ বিঘা সম্পত্তি বহুত বছর আগে ক্রয় করেছি কিন্তু মহিষগাড়ি বাঁধ নির্মাণের পর থেকে আমার সর্ম্পুন্ন জমির ফসল বর্ষা মৌসুম এলেই পানিতে তলিয়ে যায়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে ফসল পানির নিচে থাকায় সব জমির ফসল বিনষ্ট হয়ে পড়ে। এবারো আমার সকল জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ইসবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েশ বাদল বলেন, গত মাসে উপজেলা পর্যায়ে একটি সমন্বয় সভা অনু

ষ্ঠিত হয়েছে খুব শিঘ্রই এই বিষয়ে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর সাথে কথা বলে আমরা ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার গনপতি রায় বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নওগাঁ জেলা শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফউজ্জামান খান বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য লিখিত ভাবে ফরমুলা অনুসরণ করে আসতে পারলে আমরা বিষয়টি দেখবো।

তার পরেও আমার এবিষয়ে জানা ছিলনা আমি আমার লোকজন ওই এলাকায় পাঠিয়ে দিব বিষয়টি কি পর্যায়ে আছে তা দেখার পর একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।