হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বাহুবলে ‘চোর’ দাবি করে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফয়সাল মিয়া নামে এক কলেজছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি বৃন্দাবন সরকারি কলেজের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের শির্ক্ষার্থী।
পুলিশ বলছে, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে প্রেমিকার স্বজনরা এমনটা করেছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ ওই কলেজছাত্রকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
যে বাড়িতে ফয়সালকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে সেই বাড়ির লোকজনের দাবি, ছেলেটি অস্ত্র হাতে তাদের বাড়িতে গিয়ে বাড়ির এক মেয়ের নাম ধরে ডাকাডাকি করছিলেন। তিনি তাদের ঘরে ঢোকার চেষ্টা করলে তারা তাকে আটক করে পুলিশে দেন।
ফয়সালকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ফয়সালের বাড়ি চুনারুঘাট উপজেলায়। বাহুবল উপজেলার এক তরুণীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে ওই তরুণী মুঠোফোনে ফয়সালকে ডেকে তাদের বাড়িতে নেন। এরপর তার আত্মীয়-স্বজন ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফয়সালকে নির্যাতন করেন।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফয়সালকে মারধর করা হচ্ছে। এ সময় তিনি বাঁচার জন্য আকুতি করছেন।
ফয়সালের পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে ফয়সালকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে বাহুবল থানায় খবর দিয়ে জানানো হয় যে তারা চোর ধরেছেন।
বাহুবল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফুয়াদ ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন এটা চুরি নয়, প্রেম সংক্রান্ত ঘটনা। পরে পুলিশ ফয়সালের পরিবারকে খবর দিয়ে তাকে তাদের কাছে হস্তান্তর করে।
স্বজনরা তাকে প্রথমে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে রোববার তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে ফয়সালের বাবা আহসান উল্ল্যা জানান, তার ছেলেকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
ছেলের শরীরে নির্যাতনের অসংখ্য চিহ্ন আছে। ছেলে এখন পরিবারের কাউকে চিনতে পারছে না বলেও তিনি দাবি করেন।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, মেয়েটির পরিবার দাবি করছে- ছেলেটি তাদের ঘরে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ কারণে তারা তাকে আটক করেন।
অপরদিকে ছেলেটির দাবি- তাকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। কোনটি সত্য তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনও দুই পক্ষের কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। এটি প্রেমসংক্রান্ত ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।