ঢাকা ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশালে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের নেতা ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার

গ্রেফতার সাজ্জাদ হোসেন

বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা সাজ্জাদ হোসেনকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতার সাজ্জাদ হোসেন আগৈলঝাড়া উপজেলার আমবৌলা গ্রামের খোরশেদ আলম গাজীর ছেলে এবং ঢাকার তিতুমীর কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

লেখাপড়ার সুবাদে কয়েক বছর ধরে তিনি ঢাকায় থাকেন। তবে দু-এক মাস পরপর তিনি গ্রামের বাড়ি আসেন। কলেজে ভর্তির পর তিনি বাম ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন।

সম্প্রতি ঢাকার শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে সামনের সারিতে থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।

পুলিশ জানায়, স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক নারীকে বিয়ের অভিযোগ রয়েছে। বিয়ের কথা গোপন করে একাধিক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ের প্রলোভনে মেলামেশা করেছেন তিনি।

একইভাবে সম্পর্ক গড়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রী মা ও বোনের সঙ্গে আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট বাজার সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার একটি কলেজের শিক্ষার্থী তিনি। কয়েক বছর আগে তার বাবা মারা যান। তার মা বাজারে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করে সংসার চালান।

আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ওসি গোলাম ছরোয়ার বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করেন সাজ্জাদ হোসেন। এ সময় কলেজছাত্রীর চিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে এলে সাজ্জাদ পালানোর চেষ্টা করেন।

তবে স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে ফেলেন। এরপর তারা সাজ্জাদ হোসেনকে পুলিশে সোপর্দ করেন। রাতেই ওই কলেজছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ফেসবুকে সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে ছয় মাস আগে কলেজছাত্রীর পরিচয় হয়। এরপর দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

একপর্যায়ে বিয়ের কথা গোপন করে কলেজছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন সাজ্জাদ। প্রস্তাবে রাজি হন কলেজছাত্রী। এরই মধ্যে ছাত্রীকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে ধর্ষণ করেন তিনি।

কলেজছাত্রী বিয়ের কথা বললে সাজ্জাদ এড়িয়ে যান। এতে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। এরপর সাজ্জাদ ঢাকায় অবস্থান করায় কিছুদিন তাদের মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ থাকে।

গত বুধবার সাজ্জাদ হোসেন গ্রামের বাড়ি আসেন। সোমবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে কলেজছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। এ সময় কলেজছাত্রীর মা ঘরের বাইরে ছিলেন। এ সুযোগে কলেজছাত্রীকে আবার ধর্ষণ করেন সাজ্জাদ। এ সময় কলেজছাত্রী চিৎকার দেন।

তার চিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে এসে সাজ্জাদকে ধরে ফেলেন। পরে তারা সাজ্জাদকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

থানায় নিয়ে আসার পর সাজ্জাদ হোসেন নিজেকে বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা পরিচয় দেন এবং সম্প্রতি ঢাকার শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে দাবি করেন।

ওসি গোলাম ছরোয়ার বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ট্যাগস

বরিশালে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের নেতা ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার

আপডেট সময় ০৫:৫৯:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর ২০২০

বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা সাজ্জাদ হোসেনকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতার সাজ্জাদ হোসেন আগৈলঝাড়া উপজেলার আমবৌলা গ্রামের খোরশেদ আলম গাজীর ছেলে এবং ঢাকার তিতুমীর কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

লেখাপড়ার সুবাদে কয়েক বছর ধরে তিনি ঢাকায় থাকেন। তবে দু-এক মাস পরপর তিনি গ্রামের বাড়ি আসেন। কলেজে ভর্তির পর তিনি বাম ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন।

সম্প্রতি ঢাকার শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে সামনের সারিতে থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।

পুলিশ জানায়, স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক নারীকে বিয়ের অভিযোগ রয়েছে। বিয়ের কথা গোপন করে একাধিক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ের প্রলোভনে মেলামেশা করেছেন তিনি।

একইভাবে সম্পর্ক গড়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রী মা ও বোনের সঙ্গে আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট বাজার সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার একটি কলেজের শিক্ষার্থী তিনি। কয়েক বছর আগে তার বাবা মারা যান। তার মা বাজারে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করে সংসার চালান।

আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ওসি গোলাম ছরোয়ার বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করেন সাজ্জাদ হোসেন। এ সময় কলেজছাত্রীর চিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে এলে সাজ্জাদ পালানোর চেষ্টা করেন।

তবে স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে ফেলেন। এরপর তারা সাজ্জাদ হোসেনকে পুলিশে সোপর্দ করেন। রাতেই ওই কলেজছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ফেসবুকে সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে ছয় মাস আগে কলেজছাত্রীর পরিচয় হয়। এরপর দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

একপর্যায়ে বিয়ের কথা গোপন করে কলেজছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন সাজ্জাদ। প্রস্তাবে রাজি হন কলেজছাত্রী। এরই মধ্যে ছাত্রীকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে ধর্ষণ করেন তিনি।

কলেজছাত্রী বিয়ের কথা বললে সাজ্জাদ এড়িয়ে যান। এতে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। এরপর সাজ্জাদ ঢাকায় অবস্থান করায় কিছুদিন তাদের মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ থাকে।

গত বুধবার সাজ্জাদ হোসেন গ্রামের বাড়ি আসেন। সোমবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে কলেজছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। এ সময় কলেজছাত্রীর মা ঘরের বাইরে ছিলেন। এ সুযোগে কলেজছাত্রীকে আবার ধর্ষণ করেন সাজ্জাদ। এ সময় কলেজছাত্রী চিৎকার দেন।

তার চিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে এসে সাজ্জাদকে ধরে ফেলেন। পরে তারা সাজ্জাদকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

থানায় নিয়ে আসার পর সাজ্জাদ হোসেন নিজেকে বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা পরিচয় দেন এবং সম্প্রতি ঢাকার শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে দাবি করেন।

ওসি গোলাম ছরোয়ার বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।