ঢাকা ১২:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইংল্যান্ডে করোনার প্রাদুর্ভাবের দায় মুসলিমদের ওপর চাপানো হচ্ছে!

ইংল্যান্ডে করোনার প্রাদুর্ভাবের দায় মুসলিমদের ওপর চাপানো হচ্ছে!

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকেই ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকরা অনলাইনে সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে করোনাভাইরাস নিয়ে বারবার ভিত্তিহীন গুজব ছড়াচ্ছেন।

সম্প্রতি ইংল্যান্ডে এমনই গুজব বেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে; সেখানে কোভিড-১৯ বিস্তারের ঘটনায় মুসলিমদের দায়ী করা হচ্ছে।

উত্তর ইংল্যান্ডের কিছু এলাকায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত সপ্তাহে ব্রিটেন সরকার সেসব এলাকায় নতুন লকডাউন আরোপ করে।

এসব এলাকার মুসলিমদের চলাচলে বেশ কড়াকড়ির ঝক্কি পোহাতে হয়। নতুন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয় মুসলিমদের পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের কিছু সময় আগে।

নতুন করে যেসব এলাকায় লকডাউন আরোপ করা হয় সেসবের মধ্যে রয়েছে গ্রেটার ম্যানচেস্টার, বার্নলি, ব্লাকবার্ন, ডারওয়েন, ব্রাডফর্ড ও লিচেস্টার।

মুসলিমদের সংগঠন মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) বলছে, এসব এলাকায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করে লকডাউনের বিধি-নিষেধ প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লিখিত এলাকার জনগণের সঙ্গে অন্যান্য পরিবারের মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হয়।

স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও মুসলিম নেতারা ঈদের আগ মুহূর্তে সরকারের এ ঘোষণা নিয়ে সমালোচনা করেন।

বিধি-নিষেধ আরোপের সমালোচনা করে ম্যানচেস্টারের লেবার দলীয় কাউন্সিলর রব নেওয়াজ আকবর বলেন, সময়টি…এটি মানুষের মনমানসিকতায় নাড়া দেয়।

আকবর বলেন, সরকার ঈদের সন্ধ্যায় এই বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দেয়। ফলে লোকজন চিন্তা করতে বাধ্য হয় যে, এটা মনে হয় মুসলিমদের সম্প্রদায়ের অপরাধ।

আপনি দেখেন, লোকজন কীভাবে এ অনুমান করেন। সরকার কোনও ধরনের চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই ঈদের আগের দিন সন্ধ্যায় লকডাউন ঘোষণা দেয়।

তারা বিশেষ এক শ্রেণির জনগোষ্ঠীকে হাইলাইট করেছে। লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এখন বিশেষ একটি সম্প্রদায়কে ঘিরে এই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

সিএনএন বলছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কেবল বৈজ্ঞানিক পরামর্শ এবং সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে লকডাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

যেখানে স্থানীয় প্রাদুর্ভাব রয়েছে, সেখানকার জনগণের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকবে।’

ব্রিটেনের অপরাধ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলিমদের জন্য আরও বেশি প্রতিকূল স্থান হয়ে উঠছে যুক্তরাজ্য।

ব্রিটেনের ৬ কোটি ৬০ লাখ মানুষের মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যা ৫ শতাংশের কম। কিন্তু দেশটির ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে যে পরিমাণ ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে; তার ৫২ শতাংশই হয়েছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে।

ট্যাগস

ইংল্যান্ডে করোনার প্রাদুর্ভাবের দায় মুসলিমদের ওপর চাপানো হচ্ছে!

আপডেট সময় ০৬:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অগাস্ট ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকেই ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকরা অনলাইনে সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে করোনাভাইরাস নিয়ে বারবার ভিত্তিহীন গুজব ছড়াচ্ছেন।

সম্প্রতি ইংল্যান্ডে এমনই গুজব বেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে; সেখানে কোভিড-১৯ বিস্তারের ঘটনায় মুসলিমদের দায়ী করা হচ্ছে।

উত্তর ইংল্যান্ডের কিছু এলাকায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত সপ্তাহে ব্রিটেন সরকার সেসব এলাকায় নতুন লকডাউন আরোপ করে।

এসব এলাকার মুসলিমদের চলাচলে বেশ কড়াকড়ির ঝক্কি পোহাতে হয়। নতুন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয় মুসলিমদের পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের কিছু সময় আগে।

নতুন করে যেসব এলাকায় লকডাউন আরোপ করা হয় সেসবের মধ্যে রয়েছে গ্রেটার ম্যানচেস্টার, বার্নলি, ব্লাকবার্ন, ডারওয়েন, ব্রাডফর্ড ও লিচেস্টার।

মুসলিমদের সংগঠন মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) বলছে, এসব এলাকায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করে লকডাউনের বিধি-নিষেধ প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লিখিত এলাকার জনগণের সঙ্গে অন্যান্য পরিবারের মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হয়।

স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও মুসলিম নেতারা ঈদের আগ মুহূর্তে সরকারের এ ঘোষণা নিয়ে সমালোচনা করেন।

বিধি-নিষেধ আরোপের সমালোচনা করে ম্যানচেস্টারের লেবার দলীয় কাউন্সিলর রব নেওয়াজ আকবর বলেন, সময়টি…এটি মানুষের মনমানসিকতায় নাড়া দেয়।

আকবর বলেন, সরকার ঈদের সন্ধ্যায় এই বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দেয়। ফলে লোকজন চিন্তা করতে বাধ্য হয় যে, এটা মনে হয় মুসলিমদের সম্প্রদায়ের অপরাধ।

আপনি দেখেন, লোকজন কীভাবে এ অনুমান করেন। সরকার কোনও ধরনের চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই ঈদের আগের দিন সন্ধ্যায় লকডাউন ঘোষণা দেয়।

তারা বিশেষ এক শ্রেণির জনগোষ্ঠীকে হাইলাইট করেছে। লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এখন বিশেষ একটি সম্প্রদায়কে ঘিরে এই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

সিএনএন বলছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কেবল বৈজ্ঞানিক পরামর্শ এবং সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে লকডাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

যেখানে স্থানীয় প্রাদুর্ভাব রয়েছে, সেখানকার জনগণের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকবে।’

ব্রিটেনের অপরাধ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলিমদের জন্য আরও বেশি প্রতিকূল স্থান হয়ে উঠছে যুক্তরাজ্য।

ব্রিটেনের ৬ কোটি ৬০ লাখ মানুষের মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যা ৫ শতাংশের কম। কিন্তু দেশটির ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে যে পরিমাণ ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে; তার ৫২ শতাংশই হয়েছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে।