ঢাকা ০৯:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি Logo ইউক্রেনের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল রাশিয়া Logo সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্ভাষণ জানালেন ড. ইউনূস Logo সুমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি বুলবুল গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার Logo সাফ চ্যাম্পিয়ন তিন নারী খেলোয়াড়কে সাতক্ষীরায় গণসংবর্ধনা Logo আপত্তিকর ভিডিও ধারণের অভিযোগ তিশার Logo আমরা সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস Logo নতুন আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পেলেন বাহারুল আলম Logo সিরিয়ার ঐতিহ্যবাহী পালমিরা শহরে ইসরায়েলি ভয়াবহ হামলায়, নিহত ৩৬, আহত ৫০ Logo ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় চালকদের বিক্ষোভ

চাকরি হারাচ্ছেন এবি ব্যাংকের শতাধিক কর্মী

এবি ব্যাংক লিমিটেড

অর্থনীতি ডেস্কঃ  করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগকালীন সময়ের মধ্যে এবার কর্মী ছাঁটাই করেছে বেসরকারি এবি ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটি তাদের শতাধিক কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যেই চাকরিচ্যুত করেছে।

রবিবার (১২ জুলাই) এটি কার্যকর করা হবে। ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। চাকরিচ্যুত  কর্মকর্তাদের তালিকা করে এক অফিস নির্দেশনা জারি করে এবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যা আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে।

চাকরিচ্যুত হওয়া কর্মীদের উদ্দেশে অফিস নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের সব বকেয়া এবং পাওনা পরিশোধ করা হবে।

এবি ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী তাদের তিন মাসের মূল বেতন প্রদান করা হবে। সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিলে তার জন্য তিনি নিজেই দায়ী থাকবেন।

করোনার কারণে চলমান সংকটে ব্যাংকটি আর অতিরিক্ত খরচ বহন করতে পারছে না। তাই ভবিষ্যতে ব্যাংকটি টিকিয়ে রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে মহামারির মধ্যে বেশ কিছু ব্যাংক কর্মীদের বেতন কমানোর ঘোষণা দিলেও এ প্রথম ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু করল এবি ব্যাংক। এর আগে করোনার আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাংকটি গত মে ও জুন মাসের বেতন ৫ শতাংশ কমায় ব্যাংকটি।

কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করার বিষয়ে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজালের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এসএমএস পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, গত বুধবার প্রায় ১২১ জন কর্মকর্তাকে ছাঁটাইয়ের কথা জানিয়ে একটি তালিকা করা হয়।

তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের ১২ জুলাই (আজ রোববার) থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ব্যাংকের নিজস্ব নিয়মে তাদের পাওনা ও তিন মাসের মূল বেতন পরিশোধ করা হবে।

বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে ১৯৮২ সালে যাত্রা শুরু করে আরব বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্তির পর ব্যাংকটির নাম বদলে হয়েছে এবি ব্যাংক।

দেশে ও দেশের বাইরে সবমিলিয়ে ১০৫টি শাখা রয়েছে ব্যাংকটির। রয়েছে ৩০০টির বেশি এটিএম বুথ ও ৫টি সহযোগী কোম্পানি। এর মধ্যে অফশোর ব্যাংকিং সেবার জন্য রয়েছে আলাদা ইউনিট।

ব্যাংকের সব ধরনের সেবা পণ্য রয়েছে এবি ব্যাংকের। বয়স, শ্রেণি ও পেশা বিবেচনায় রয়েছে আলাদা আলাদা ব্যাংকিং পণ্য।

সরাসরি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই ব্যাংকটি। বর্তমানে এবি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ২০০।

অভিযোগ রয়েছে, প্রথম সারির এ ব্যাংকটি উদ্যোক্তা পরিচালকদের লুটপাট ও অনিয়মে নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বিশাল অঙ্কের এই খেলাপি ঋণের মূল দায় ব্যাংকটির দুর্নীতিবাজ কয়েকজন উদ্যোক্তার।

তারা ব্যাংকটিকে একদিকে বেনামিতে লুটপাট করেছেন, অন্যদিকে যোগসাজশ করে অসাধু কিছু ব্যবসায়ীকে লুটপাটের সুযোগ দিয়েছেন।

তারা শুধু ব্যাংক থেকে ঋণের নামে নেয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতই করেননি, ওই অর্থের প্রায় পুরোটাই বিদেশে পাচার করেছেন।

গত ২৩ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা এক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের সব ব্যাংকের পরিচালকদের মধ্যে এবি ব্যাংকের পরিচালকরা নিজ ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ঋণ নিয়েছেন। তাদের ঋণের স্থিতি ৯০৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

এবি ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের মাধ্যমে অর্থপাচার করা কয়েকজন গ্রাহকও এখন শীর্ষ খেলাপির তালিকায় উঠে এসেছেন। তার মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী এমএনএইচ বুলু। তার খেলাপি ঋণ ২৫০ কোটি টাকা।

ট্যাগস

আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

চাকরি হারাচ্ছেন এবি ব্যাংকের শতাধিক কর্মী

আপডেট সময় ০৮:১৩:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুলাই ২০২০

অর্থনীতি ডেস্কঃ  করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগকালীন সময়ের মধ্যে এবার কর্মী ছাঁটাই করেছে বেসরকারি এবি ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটি তাদের শতাধিক কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যেই চাকরিচ্যুত করেছে।

রবিবার (১২ জুলাই) এটি কার্যকর করা হবে। ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। চাকরিচ্যুত  কর্মকর্তাদের তালিকা করে এক অফিস নির্দেশনা জারি করে এবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যা আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে।

চাকরিচ্যুত হওয়া কর্মীদের উদ্দেশে অফিস নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের সব বকেয়া এবং পাওনা পরিশোধ করা হবে।

এবি ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী তাদের তিন মাসের মূল বেতন প্রদান করা হবে। সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিলে তার জন্য তিনি নিজেই দায়ী থাকবেন।

করোনার কারণে চলমান সংকটে ব্যাংকটি আর অতিরিক্ত খরচ বহন করতে পারছে না। তাই ভবিষ্যতে ব্যাংকটি টিকিয়ে রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে মহামারির মধ্যে বেশ কিছু ব্যাংক কর্মীদের বেতন কমানোর ঘোষণা দিলেও এ প্রথম ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু করল এবি ব্যাংক। এর আগে করোনার আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাংকটি গত মে ও জুন মাসের বেতন ৫ শতাংশ কমায় ব্যাংকটি।

কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করার বিষয়ে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজালের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এসএমএস পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, গত বুধবার প্রায় ১২১ জন কর্মকর্তাকে ছাঁটাইয়ের কথা জানিয়ে একটি তালিকা করা হয়।

তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের ১২ জুলাই (আজ রোববার) থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ব্যাংকের নিজস্ব নিয়মে তাদের পাওনা ও তিন মাসের মূল বেতন পরিশোধ করা হবে।

বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে ১৯৮২ সালে যাত্রা শুরু করে আরব বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্তির পর ব্যাংকটির নাম বদলে হয়েছে এবি ব্যাংক।

দেশে ও দেশের বাইরে সবমিলিয়ে ১০৫টি শাখা রয়েছে ব্যাংকটির। রয়েছে ৩০০টির বেশি এটিএম বুথ ও ৫টি সহযোগী কোম্পানি। এর মধ্যে অফশোর ব্যাংকিং সেবার জন্য রয়েছে আলাদা ইউনিট।

ব্যাংকের সব ধরনের সেবা পণ্য রয়েছে এবি ব্যাংকের। বয়স, শ্রেণি ও পেশা বিবেচনায় রয়েছে আলাদা আলাদা ব্যাংকিং পণ্য।

সরাসরি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই ব্যাংকটি। বর্তমানে এবি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ২০০।

অভিযোগ রয়েছে, প্রথম সারির এ ব্যাংকটি উদ্যোক্তা পরিচালকদের লুটপাট ও অনিয়মে নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বিশাল অঙ্কের এই খেলাপি ঋণের মূল দায় ব্যাংকটির দুর্নীতিবাজ কয়েকজন উদ্যোক্তার।

তারা ব্যাংকটিকে একদিকে বেনামিতে লুটপাট করেছেন, অন্যদিকে যোগসাজশ করে অসাধু কিছু ব্যবসায়ীকে লুটপাটের সুযোগ দিয়েছেন।

তারা শুধু ব্যাংক থেকে ঋণের নামে নেয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতই করেননি, ওই অর্থের প্রায় পুরোটাই বিদেশে পাচার করেছেন।

গত ২৩ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা এক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের সব ব্যাংকের পরিচালকদের মধ্যে এবি ব্যাংকের পরিচালকরা নিজ ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ঋণ নিয়েছেন। তাদের ঋণের স্থিতি ৯০৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

এবি ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের মাধ্যমে অর্থপাচার করা কয়েকজন গ্রাহকও এখন শীর্ষ খেলাপির তালিকায় উঠে এসেছেন। তার মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী এমএনএইচ বুলু। তার খেলাপি ঋণ ২৫০ কোটি টাকা।