অর্থনীতি ডেস্কঃ মহামারি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতেও প্রথমবারের মতো দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। এর আগে গত ৩ জুন রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল।
করোনা ভাইরাসের কারণে বৈদেশিক বাণিজ্যের নিম্নগতি থাকলেও প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করেছে।
দেশে উন্নয়নশীল অংশীদারদের বিনিয়োগও আসা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এর আগে ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল।
বুধবার (২৩ জুন) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালক বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে মূল চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করছে রেমিটেন্স।
সাম্প্রতিককালে আমরা বিশেষ তহবিল, কিছু প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংকের ঋণ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, জাইকা ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অর্থ পেয়েছি।
চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২২ জুন পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে আট শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রেমিটেন্স এসেছে ১৬ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, চলতি বছরের ১ থেকে ২২ জুন রেমিটেন্স এসেছে ১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের পুরো জুন মাসে এসেছিল ১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার।
করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেও চলতি বছরের জুন মাসে রেমিটেন্স ১৭ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন রেমিটেন্স বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হচ্ছে সরকার বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহী করার জন্য দুই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। এতে হুন্ডিতে টাকা পাঠানো অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটেও বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য ২ শতাংশ প্রণোদনা বহাল রেখেছে সরকার। বর্তমানে বিশ্বের ১৭৪টি দেশে ১ দশমিক শূন্য ২ কোটি বাংলাদেশি কাজ করছেন।
এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এ মুহূর্তে রেমিটেন্স বৃদ্ধির জন্য আমি কোনো আয় দেখছি না।
কারণ এটি প্রবাসীদের আয় করা অর্থ নয়। এটি তাদের সঞ্চয় করা অর্থ। কারণ যেকোনো সময় তাদের দেশে ফিরে আসতে হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তেলে দাম কমতে শুরু করায় এখন অনেক প্রবাসী চাকরি হারাবেন। এসব প্রবাসীর একটি বড় অংশ দেশে ফিরে আসবেন।