আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তের কায়েসং শহরে অবস্থিত যৌথ লিয়াজোঁ অফিসে ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যৌথ লিয়াজোঁ অফিস উড়িয়ে দিল পিয়ংইয়ং।
সোমবার (১৫ জুন) স্থানীয় সময় বিকাল ৪ টার কিছু সময় পর লিয়াজোঁ অফিসে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার।
দুই কোরিয়ার মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৮ সালে এই লিয়াজোঁ অফিসটি উত্তর কোরিয়ার ভূখণ্ডে চালু করা হয়।
মূলত তখন থেকে অন্তত তিনবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন উত্তরের প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। চিরবৈরি এ দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানদের বৈঠকে লিঁয়াজো অফিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর লিয়াজোঁ অফিসটি বন্ধ ছিল। উত্তর কোরিয়ার পক্ষ ত্যাগ করে দক্ষিণে পাড়ি জমানো নাগরিকরা বেলুন এবং ড্রোন ব্যবহার করে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ধরনের কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেন।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম কেসিএনএতে প্রকাশিত কিম ইয়ো জংয়ের একটি বিবৃতিতে বলা হয়, তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়াকে সবসময় শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে কিম ইয়ো জং হুমকি দিয়ে বলেন, শিগগিরই সীমান্ত শহর কায়েসংয়ের নিরর্থক আন্তঃকোরীয় লিঁয়াজো অফিসের পতনের সাক্ষী হবে সিউল।
তার এই হুমকির কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই লিয়াজোঁ অফিসটি গুড়িয়ে দিল উত্তর কোরিয়া।
উত্তর কোরিয়ার এমন হুমকির জবাবে মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, মার্কিন সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।
বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত অসামরিকী অঞ্চলে বিভক্ত, যা ১৯৫০ সালে কোরীয় যুদ্ধের পর তৈরি করা হয়। উত্তরের ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম উপ-পরিচালক কিম ইয়ো জংয়ের নির্দেশের পর
মঙ্গলবার দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, অসামরিক অঞ্চলে সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে। সরকারি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এলেই তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
কিম ইয়ো জং বলেছেন, আমার মনে হচ্ছে- দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিশ্চিতভাবে বিচ্ছেদের একটা সময় এসেছে। আবর্জনাকে অবশ্যই ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হয় বলে বিবৃতির শেষে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সূত্র : বিবিসি নিউজ