ক্রীড়া ডেস্কঃ বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে অধিকাংশ সময় ব্যর্থ হন বাংলাদেশ টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ধারাবাহিক বিরতিতে ধস নামে দলের শীর্ষ ব্যাটিং লাইনআপে। সেবারও একই কাণ্ড ঘটেছিল।
টাইম মেশিনে চড়ে চলে যাওয়া যাক ২০০৭ সালে। ওই বছর ১২ মে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারত-বাংলাদেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল। আর সেই দ্বৈরথের পুরো ক্রেডিটটাই ‘ব্যাটসম্যান’ মাশরাফি বিন মুর্তজার।
এ কথা শুনে যে কোনো ক্রিকেটপ্রেমীর চক্ষু ছানাবড়া হতে পারে। মাশরাফির ব্যাটিং, তাও আবার রেকর্ড। এমন কীর্তি যা কোনো স্বীকৃত বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের নেই। অদ্যাবধি দেশের হয়ে সেই রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেননি।
ওই দিন বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বাংলাদেশকে ২৮৫ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকান বাঁহাতি ওপেনার এবং বর্তমান বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীর।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩৫.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশ। এর পরই ব্যাট হাতে নামেন মাশরাফি।
হার একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ফলে নড়াইল এক্সপ্রেসের মাথায় ঘোরাফেরা করে একটি বার্তা– করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে।
টাইগার ব্যাটিং ইনিংসের ৪৭তম ওভার করতে আসেন দিনেশ মুঙ্গিয়া। প্রথম বলে টুক করে একটা সিঙ্গেল নিয়ে মাশরাফিকে স্ট্রাইক দেন আবদুর রজ্জাক।
দ্বিতীয় বলে মুঙ্গিয়ার মাথার ওপর দিয়ে মিডঅনে লম্বা ছক্কা মারেন ম্যাশ। তৃতীয় বলে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ফের ছক্কা হাঁকান তিনি। চতুর্থ বলে ওয়াইড লং অন দিয়ে আবার ছয়, হ্যাটট্রিক।
পঞ্চম বলে আরেকবার মুঙ্গিয়ার সোজা মাথার ওপর দিয়ে ছয় মারেন মাশরাফি। শেষ বলে নেন সিঙ্গেল। এ ৫ বলে ২৫ রান করেন তিনি। বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের পক্ষে পাঁচ বলে সর্বোচ্চ রান করার নজির এটি।
অবশ্য পরের ওভারের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান মাশরাফি। সেদিন তার ব্যাট থেকে আসে ২২ বল ৪২ রান। এ ঝড়ো ইনিংসে গ্যালারি মাতান তিনি। সর্বোপরি দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের বিনোদিত করেন ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক।
শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ২৩৮ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ভারতের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে যান তারা। তবে মাশরাফির কারণে ম্যাচটি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সেই কৃতিত্বের ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এ ‘পেসারের’ ব্যাটিং রেকর্ডটি যে টাইগারদের কোনো ব্যাটসম্যান ভাঙতে পারেননি। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস