স্টাফ রিপোর্টারঃ অর্ধেক সিট খালি রাখার শর্তে বাস-মিনিবাসের ভাড়া ৮০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভাড়া নির্ধারণ কমিটি।
এ সুপারিশ সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে করোনার বিস্তার রোধে দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর কাল সোমবার থেকে বর্ধিত ভাড়ায় চালু হবে বাস।
তবে আজ থেকে চলাচল করবে আন্তঃনগর ট্রেন। প্রথম দিনে আটটি ট্রেন চলবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে ফাঁকা রাখা হবে অর্ধেক আসন।
স্টেশনে ভিড় এড়াতে সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। দেশের বিভিন্ন রুটে চলবে নৌযান। অভ্যন্তরীণ রুটে কাল থেকে চলবে যাত্রীবাহী ফ্লাইট। তিনটি রুটে এসব ফ্লাইট চলাচল করবে।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পরিস্থিতির ক্রমাবণতি ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটি। ২৫ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন।
এদিকে আজ রবিবার থেকে চলবে আন্তঃনগর ট্রেন। প্রথম দিনে আটটি ট্রেন চলবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখা হবে।
স্টেশনে ভিড় এড়াতে সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। কাউন্টার থেকে টিকিট দেওয়া হবে না।
গতকাল শনিবার রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি জানিয়েছেন, রবিবার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ‘সুবর্ণ এক্সপ্রেস’ এবং ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেস’, ঢাকা-সিলেট-
রুটের ‘কালনী এক্সপ্রেস’, ঢাকা-পঞ্চগড় রুটের ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’, ঢাকা-রাজশাহী রুটের ‘বনলতা এক্সপ্রেস’, ঢাকা-লালমনিরহাট রুটের ‘লালমনি এক্সপ্রেস’, ঢাকা-সিলেট রুটের ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ এবং ঢাকা-খুলনা ‘চিত্রা এক্সপ্রেস’ চলবে।
রবিবার এই ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, ‘বেস স্টেশন’ থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে। ভিড় এড়াতে এখন থেকে বিমানবন্দর ও জয়দেবপুর স্টেশনে কোনো ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে না।
ঢাকার যাত্রীদের কমলাপুর স্টেশন থেকে ওঠানামা করতে হবে। টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রী স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবেন না।
আগামী ৩ জুন থেকে আরও ১১টি আন্তঃনগর ট্রেন চালু হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। এগুলো হলো, ঢাকা-ময়মনসিংহ-দেওয়ানগঞ্জ রুটের ‘তিস্তা এক্সপ্রেস’, ‘ঢাকা-বেনাপোল রুটের ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’, ঢাকা-চিলাহাটি-
রুটের ‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’, খুলনা-চিলাহাটি রুটের ‘রূপসা এক্সপ্রেস’, রাজশাহী-খুলনা রুটের ‘কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস’, রাজশাহী-গোয়ালন্দ রুটের ‘মধুমতি এক্সপ্রেস’, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটের ‘মেঘনা এক্সপ্রেস’, ঢাকা-
কিশোরগঞ্জ রুটের ‘কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস’, ঢাকা-নোয়াখালী রুটের ‘উপকূল এক্সপ্রেস’, ঢাকা-ময়মনসিংহ-জামালপুর রুটের ‘ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস’ এবং ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটের ‘কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস’।
অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার শর্ত পালনে বাস মালিকরা ভাড়া বাড়ালেও ট্রেনে ভাড়া বাড়বে না বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তবে কিছু সুযোগ সুবিধা কমবে। নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ট্রেনে খাবার সুবিধা থাকবে না।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় বালিশ কম্বল দেওয়া হবে না।
নুরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন ১০০টি আন্তঃনগর ট্রেন চলে। সীমিত পরিসরে সেবা চালু করায় ১৫ জুন পর্যন্ত মাত্র ১৯টি ট্রেন চলবে। করোনা পরিস্থিতি দেখে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে ট্রেনের সংখ্যা বাড়াবে না কমবে।
অর্ধেক আসন খালি রাখার নির্দেশনা আদৌ মানা সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ ট্রেনে কর্তব্যরত কর্মচারীরা অবৈধভাবে যাত্রী তোলেন।
এর জবাবে রেলমন্ত্রী বলেছেন, অবৈধভাবে লোক তুললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনলাইনে শতভাগ টিকিট ছাড়ার কারণে যাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই, দরিদ্র, অশিক্ষিত টিকিট পাবেন না বলে মনে করা হচ্ছে।
এর জবাবে রেলের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্টেশনে ভিড় এড়াতেই এ ব্যবস্থা।
সব টিকিট অনলাইনে দেওয়ায় ঈদের মতো চাপ হতে পারে। এতে টিকিট কাটতে কিছুটা ভোগান্তি হতে পারে বলেও স্বীকার করেন মহাপরিচালক।