আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই অনেক দেশই উন্মুক্ত স্থানে জীবাণুনাশক ছিটানোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
তবে শনিবার (১৫ মে) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এভাবে জীবাণুনাশক ছিটানোর ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে।
বিভিন্ন বস্তুর পৃষ্ঠ থেকে ভাইরাস দূরীকরণ সম্পর্কিত একটি নথিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এভাবে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে কোনো কাজ নাও হতে পারে, বরং সৃষ্টি হতে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
ডব্লিউএইচও-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করেনা ভাইরাস বা অন্যান্য রোগজীবাণু নিধনে জীবাণুনাশক ছিটানো বা ফিউমিগেটর মেশিন দিয়ে রাস্তাঘাট বা মার্কেট শপিংমলের মতো উন্মুক্ত স্থানে স্পে করার বিষয়টি সুপারিশ করা যাচ্ছে না।
কারণ এই জীবাণুনাশক ধুলাবালির সংস্পর্শে এসে অকাযকর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া ধুলাবালি যদি নাও থাকে তবুও এভাবে স্প্রে করলে বস্তু বা মেঝের পৃষ্ঠ সেভাবে জীবাণুনাশকে ঢেকে যায় না যতোটা সংস্পর্শকাল একটি রোগজীবাণুকে মেরে ফেলার জন্য প্রয়োজন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, রাস্তাঘাট বা ফুটপাতকে কোভিড-১৯ সংক্রমণের স্থল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না। তবে এ ধরনের জীবাণুনাশক ছিটানো মানবস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
সেই সঙ্গে কোনও ধরনের জীবাণুনাশক কোনো পরিস্থিতিতেই কারও গায়ে না ছিটানোর ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
নথিতে বলা হয়েছে, এটি শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিকর হতে পারে। আর এতে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বা সংস্পর্শ থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানো ঠেকানো সম্ভব নয়।
আর মানসিক ক্ষতির বিষয়টি হলো, তার মধ্যে একটি ‘মিথ্যা নিরাপত্তা বোধ’ (ফলস সেন্স অব সিক্যুরিটি) তৈরি হতে পারে। এর ফলে কম সতর্ক হওয়ার হওয়ার কারণে তার সংক্রমিত ও সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
তাছাড়া ক্লোরিন বা এ ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক মানুষের চোখ এবং ত্বকে জ্বালাপোড়া, শ্বাসনালীর প্রদাহ (bronchospasm) এবং অন্ত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে।
এমনকি ঘরের ভেতরে ছিটালে কাজ হয়- কোনো গবেষণায় এমন প্রমাণ মিলেনি। নথিতে বলা হয়েছে, ঘরের ভেতরে জীবাণুনাশক প্রয়োগ করতে চাইলে অবশ্যই কাপড় বা অন্য কিছু ভিজিয়ে মুছতে হবে।