ঢাকা ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্ষণের বিচার চেয়ে কাফনের কাপড় পড়ে প্রেসক্লাবের সামনে শুয়ে পড়লো নির্যাতিতা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করছেন তার পরিবার

এদিকে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবার ন্যায়বিচারের দাবিতে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ের সামনে কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।

মাদ্রাসা ছাত্রী উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কেরাব এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

তার পরিবার জানায়, গত দেড় বছর আগে উপজেলার কেরাব এলাকার কবির হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মিয়া বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক বছর ধরে ইব্রাহিম মিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করতো।

তবে বেশ কিছুদিন ধরে ওই শিক্ষার্থী তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে ইব্রাহিম মিয়া নানাভাবে টালবাহানা শুরু করে। পরে ওই শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে তাকে হুমকি দেয় এবং দেখা করতে বলে। ১৯ এপ্রিল রাতে অই শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মিয়ার সাথে দেখা করলে ইব্রাহিম তার বাড়ির পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। ওইদিন রাতে ধর্ষিতার পরিবারের লোকজন বিষয়টি ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন ও মা লিপি বেগমকে জানালে তারা ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। এরপদিন তারা মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন।

পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পরদিন ২০ এপ্রিল ওই শিক্ষার্থী রূপগঞ্জ থানায় বাদি হয়ে কবির হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করলেও পুলিশ সেই মামলা গ্রহণ করেনি। পাশাপশি ইব্রাহীম নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ অবস্থায় পুরো পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইব্রাহীম নিতান্তই গরীব পরিবারের সন্তান। তার বাবা পেশায় রিকশাচালক। অই মাদ্রাসা ছাত্রীর সাথে তার সম্পর্কের কথা কারো জানা নেই। এলাকার কেউ কখনো তাদেরকে একসাথে দেখেওনি। তবে হঠাৎ করে মেয়েটির পরিবার ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ইব্রাহীমের পরিবারের কাছে প্রথমে পাঁচ লক্ষ টাকা,দাবি করে। টাকা না দিলে  মামলা করে হয়রানি করার হুমকি দেয়। এনিয়ে এলাকার মাতবর শ্রেণীর মুররুব্বিরা কয়েক দফায় বিচার শালিসে বসলেও মেয়ের পরিবার টাকা ছাড়া আর কোন কিছুই মানতে রাজি নয়।

সর্বশেষ শুক্রবার সকালেও বিচার শালিসে তারা পাঁচ লাখ থেকে দুই লাখ  টাকায় নেমে আসে। তবে ইব্রাহীমের পরিবার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।মেয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার দাবি করে ইব্রাহীম জানিয়ে দেয়, যদি ডিএনএ টেস্ট পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমান পাওয়া যায় তবে সে যে কোন বিচার মেনে নেবে। তবু কোন টাকা দেবে না।

এ অবস্থায় টাকার জন্য মেয়ে পক্ষের চাপের মুখে পড়ে ও মামলার ভয়ে ইব্রাহীম এবং তার পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহামুদুল হাসান বলেন  অভিযুক্ত ইব্রাহীমের সাথে প্রায় এক বছর যাবত প্রেম রয়েছে এবং তাদের মধ্যে শারিরীক সম্পর্ক হয়েছে বলে মেয়ে  নিজেই স্বীকার করেছে। দুই পরিবারের মধ্যে বিয়ের ব্যাপারেও কিথা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে ছেলে বিয়ে করতে রাজি হয়েও সময় চাওয়ায় মেয়ে পক্ষ ধর্ষণের অভিযোগ দিয়েছে|

ওসি আরো বলেন, আমরা মামলা গ্রহণ করে বিষয়টি তদন্ত করছি। আমরা যতো দ্রুত সম্ভব মেয়ের মেডিকেল টেস্ট করাব। যদি ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায় তবে অভিযুক্ত ছেলের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেব।

 

ট্যাগস

ধর্ষণের বিচার চেয়ে কাফনের কাপড় পড়ে প্রেসক্লাবের সামনে শুয়ে পড়লো নির্যাতিতা

আপডেট সময় ১১:১০:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল ২০২০

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করছেন তার পরিবার

এদিকে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবার ন্যায়বিচারের দাবিতে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ের সামনে কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।

মাদ্রাসা ছাত্রী উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কেরাব এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

তার পরিবার জানায়, গত দেড় বছর আগে উপজেলার কেরাব এলাকার কবির হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মিয়া বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক বছর ধরে ইব্রাহিম মিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করতো।

তবে বেশ কিছুদিন ধরে ওই শিক্ষার্থী তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে ইব্রাহিম মিয়া নানাভাবে টালবাহানা শুরু করে। পরে ওই শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে তাকে হুমকি দেয় এবং দেখা করতে বলে। ১৯ এপ্রিল রাতে অই শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মিয়ার সাথে দেখা করলে ইব্রাহিম তার বাড়ির পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। ওইদিন রাতে ধর্ষিতার পরিবারের লোকজন বিষয়টি ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন ও মা লিপি বেগমকে জানালে তারা ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। এরপদিন তারা মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন।

পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পরদিন ২০ এপ্রিল ওই শিক্ষার্থী রূপগঞ্জ থানায় বাদি হয়ে কবির হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করলেও পুলিশ সেই মামলা গ্রহণ করেনি। পাশাপশি ইব্রাহীম নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ অবস্থায় পুরো পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইব্রাহীম নিতান্তই গরীব পরিবারের সন্তান। তার বাবা পেশায় রিকশাচালক। অই মাদ্রাসা ছাত্রীর সাথে তার সম্পর্কের কথা কারো জানা নেই। এলাকার কেউ কখনো তাদেরকে একসাথে দেখেওনি। তবে হঠাৎ করে মেয়েটির পরিবার ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ইব্রাহীমের পরিবারের কাছে প্রথমে পাঁচ লক্ষ টাকা,দাবি করে। টাকা না দিলে  মামলা করে হয়রানি করার হুমকি দেয়। এনিয়ে এলাকার মাতবর শ্রেণীর মুররুব্বিরা কয়েক দফায় বিচার শালিসে বসলেও মেয়ের পরিবার টাকা ছাড়া আর কোন কিছুই মানতে রাজি নয়।

সর্বশেষ শুক্রবার সকালেও বিচার শালিসে তারা পাঁচ লাখ থেকে দুই লাখ  টাকায় নেমে আসে। তবে ইব্রাহীমের পরিবার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।মেয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার দাবি করে ইব্রাহীম জানিয়ে দেয়, যদি ডিএনএ টেস্ট পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমান পাওয়া যায় তবে সে যে কোন বিচার মেনে নেবে। তবু কোন টাকা দেবে না।

এ অবস্থায় টাকার জন্য মেয়ে পক্ষের চাপের মুখে পড়ে ও মামলার ভয়ে ইব্রাহীম এবং তার পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহামুদুল হাসান বলেন  অভিযুক্ত ইব্রাহীমের সাথে প্রায় এক বছর যাবত প্রেম রয়েছে এবং তাদের মধ্যে শারিরীক সম্পর্ক হয়েছে বলে মেয়ে  নিজেই স্বীকার করেছে। দুই পরিবারের মধ্যে বিয়ের ব্যাপারেও কিথা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে ছেলে বিয়ে করতে রাজি হয়েও সময় চাওয়ায় মেয়ে পক্ষ ধর্ষণের অভিযোগ দিয়েছে|

ওসি আরো বলেন, আমরা মামলা গ্রহণ করে বিষয়টি তদন্ত করছি। আমরা যতো দ্রুত সম্ভব মেয়ের মেডিকেল টেস্ট করাব। যদি ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায় তবে অভিযুক্ত ছেলের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেব।