ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

নওগাঁয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁঃ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে মরণঘাতী করোনাভাইরাস। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। কর্মহীন হয়ে পড়েছে সর্বসাধারণ। বিপাকে শ্রমজীবীরা।

করোনাভাইরাস রোধে জেলায় জেলায় লকডাউন করা হয়েছে। বাইরের জেলার সাথে নওগাঁর যোগাযোগ প্রায় বন্ধ। একপ্রকার ঘরবন্দি জীবনযাপন চলছে। কর্ম না থাকায় বিপাকে পড়তে হয়েছে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের।

এরই মধ্যে বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। ধানের বাম্পার ফলন হলেও করোনা আতঙ্কে ধানকাটা শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ধানকাটা ও মাড়াই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।

তবে নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগ কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২২ এপ্রিল) সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের গুটার বিল থেকে কৃষক দেওয়ান আব্দুল মতিনের প্রায় তিন বিঘা জমির ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। ছাত্রলীগের এমন উদ্যোগকে প্রশংসা করছেন সচেতনমহল।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে ধান কেটে দেয়ায় কৃষক দেওয়ান আব্দুল মতিন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, শ্রমিক সংকটের কারণে পাকাধান কাটতে পারছিলাম না।

এলাকায় যে পরিমাণ শ্রমিক আছে মজুরি বেশি। আকাশের অবস্থা মাঝে মধ্যে খারাপ হচ্ছে। ঝড় হলে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তাই বাধ্য হয়ে ছাত্রলীগের সাথে যোগাযোগ করা হয়।

তারাও কোনো টাকা পয়সা ছাড়াই ধান কেটে দিতে রাজি হন। ছাত্রলীগের ছেলেরা যেভাবে আমার ধান কাটতে সাহায্য করেছে তা ভোলার নয়। কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি।

নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান রেজভি ও সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান শিউল বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে অন্য জেলা থেকে ধান কাটার শ্রমিক না আসায় বিপাকে কৃষকরা।

শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক অসহায় ও বর্গাচাষী কৃষক ধান কাটতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে প্রান্তিক কৃষকের ধান কাটার কাজ শুরু করেছি।

কয়েকদিন আগে প্রান্তিক কৃষকের ধান কেটে দিতে সহযোগিতা করার জন্য ফেসবুকে একটা পোস্ট দেয়া হয়। জেলা ছাত্রলীগের উপ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক বিশাল আহমেদের সাথে এক কৃষক যোগাযোগ করেন।

বিশাল ওই কৃষকের বিষয়ে আমাদের অবগত করে। আমরা তাকে ধান কেটে দিতে আশ্বস্ত করি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ধান কেটে ওই কৃষকের ঘরে তুলে দেয়া হয়।

তারা বলেন, এই করোনা মহামারিতে অসহায় ও বর্গাচাষী কৃষকদের পক্ষে শ্রমিকদের মজুরি দেয়া কষ্টসাধ্য। আমাদের পক্ষ থেকে ওইসব কৃষককে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আগামীতে অসহায় ও বর্গাচাষী কৃষকদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিয়াজ খান, রোমান হাসান ও রাব্বি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক মাহমুদ, মেহেদী হাসান, একরামুল হক সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক স্পন্দন চৌধুরী, তানভীর আরেফিন শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ আসিফ ও উপ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক বিশাল আহমেদসহ সদর উপজেলা ছাত্রলীগ ও স্থানীয় শিকারপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে কৃষকের ধান কেটে দেন।

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

নওগাঁয় কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

আপডেট সময় ১২:১১:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁঃ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে মরণঘাতী করোনাভাইরাস। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। কর্মহীন হয়ে পড়েছে সর্বসাধারণ। বিপাকে শ্রমজীবীরা।

করোনাভাইরাস রোধে জেলায় জেলায় লকডাউন করা হয়েছে। বাইরের জেলার সাথে নওগাঁর যোগাযোগ প্রায় বন্ধ। একপ্রকার ঘরবন্দি জীবনযাপন চলছে। কর্ম না থাকায় বিপাকে পড়তে হয়েছে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের।

এরই মধ্যে বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। ধানের বাম্পার ফলন হলেও করোনা আতঙ্কে ধানকাটা শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ধানকাটা ও মাড়াই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।

তবে নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগ কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২২ এপ্রিল) সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের গুটার বিল থেকে কৃষক দেওয়ান আব্দুল মতিনের প্রায় তিন বিঘা জমির ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। ছাত্রলীগের এমন উদ্যোগকে প্রশংসা করছেন সচেতনমহল।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে ধান কেটে দেয়ায় কৃষক দেওয়ান আব্দুল মতিন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, শ্রমিক সংকটের কারণে পাকাধান কাটতে পারছিলাম না।

এলাকায় যে পরিমাণ শ্রমিক আছে মজুরি বেশি। আকাশের অবস্থা মাঝে মধ্যে খারাপ হচ্ছে। ঝড় হলে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তাই বাধ্য হয়ে ছাত্রলীগের সাথে যোগাযোগ করা হয়।

তারাও কোনো টাকা পয়সা ছাড়াই ধান কেটে দিতে রাজি হন। ছাত্রলীগের ছেলেরা যেভাবে আমার ধান কাটতে সাহায্য করেছে তা ভোলার নয়। কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি।

নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান রেজভি ও সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান শিউল বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে অন্য জেলা থেকে ধান কাটার শ্রমিক না আসায় বিপাকে কৃষকরা।

শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক অসহায় ও বর্গাচাষী কৃষক ধান কাটতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে প্রান্তিক কৃষকের ধান কাটার কাজ শুরু করেছি।

কয়েকদিন আগে প্রান্তিক কৃষকের ধান কেটে দিতে সহযোগিতা করার জন্য ফেসবুকে একটা পোস্ট দেয়া হয়। জেলা ছাত্রলীগের উপ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক বিশাল আহমেদের সাথে এক কৃষক যোগাযোগ করেন।

বিশাল ওই কৃষকের বিষয়ে আমাদের অবগত করে। আমরা তাকে ধান কেটে দিতে আশ্বস্ত করি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ধান কেটে ওই কৃষকের ঘরে তুলে দেয়া হয়।

তারা বলেন, এই করোনা মহামারিতে অসহায় ও বর্গাচাষী কৃষকদের পক্ষে শ্রমিকদের মজুরি দেয়া কষ্টসাধ্য। আমাদের পক্ষ থেকে ওইসব কৃষককে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আগামীতে অসহায় ও বর্গাচাষী কৃষকদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিয়াজ খান, রোমান হাসান ও রাব্বি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক মাহমুদ, মেহেদী হাসান, একরামুল হক সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক স্পন্দন চৌধুরী, তানভীর আরেফিন শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ আসিফ ও উপ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক বিশাল আহমেদসহ সদর উপজেলা ছাত্রলীগ ও স্থানীয় শিকারপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে কৃষকের ধান কেটে দেন।