গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বিমান হামলায় একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৬ জন ফিলিস্তিনি। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার (২৪ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৮৫ জন। সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয়েছে গাজার উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে, যেখানে নিহতদের মধ্যে ৫০ জনই ছিলেন এই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিহত ও আহতদের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে, কারণ বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। উদ্ধার কাজ এখনো অব্যাহত রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাত ইতোমধ্যেই প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহ এক নজির স্থাপন করেছে। দেড় বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে গাজায় মোট নিহত হয়েছেন ৫৩ হাজার ৮২২ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৩৮২ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে এবং নিহতদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও, তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও নতুন করে শুরু হওয়া এই দ্বিতীয় দফার অভিযানে গত আড়াই মাসে নিহত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৭৩ জন এবং আহত হয়েছেন ১০ হাজারের বেশি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষ করা এবং জীবিত জিম্মিদের মুক্ত করা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাওয়া হবে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক আদালত আইসিজেতে ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, গাজায় চলমান অভিযান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।