আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পুলিশ সপ্তাহ- ২০২৫ শুরু হচ্ছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে তিন দিনব্যাপী এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য- ‘আমার পুলিশ আমার দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সকাল সাড়ে ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণ প্রদানের মাধ্যমে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করবেন। এরপর তিনি কৃতি পুলিশ সদস্যদের পদক পরিয়ে দেবেন।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের ভূমিকা নির্ধারণ ও মাঠপর্যায়ে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত নির্দেশনা প্রস্তুত করেছে বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দাবি-দাওয়া সরাসরি শুনবেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণে রাখাই এবারের অন্যতম অগ্রাধিকার।
পুলিশ সপ্তাহকে ঘিরে বাহিনীতে চলেছে নানা প্রস্তুতি। বিভিন্ন ইউনিট নিজ নিজ চ্যালেঞ্জ ও অগ্রাধিকার তুলে ধরবে পৃথক প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে। জনবান্ধব পুলিশ গড়ে তুলতে জনসচেতনতা বাড়ানো, লজিস্টিক সাপোর্ট বৃদ্ধি এবং গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, এবারের সপ্তাহে পুলিশের পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করা হবে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করে জনগণের জন্য কমপ্লেইন সেল এবং পুলিশের জন্য অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি স্থাপন,
২. এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ ভাতা প্রদান,
৩. স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট গঠন,
৪. বিভাগীয় হাসপাতালে জনবল বৃদ্ধি ও আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহসহ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা,
৫. দীর্ঘদিন একই পদে চাকরির পর কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পর্যায়ে সুপারনিউমারারি পদোন্নতি,
৬. মরদেহ দাফন বা সৎকারের জন্য পুলিশের অনুকূলে আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করা।এছাড়া, বাহিনীর আইন উপদেষ্টা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়েরকারীদের শনাক্তে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে সাহসিকতা ও সেবার স্বীকৃতি হিসেবে ৬২ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২৮ জন পাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং ৩৪ জন পাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবারের পুলিশ সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে পুলিশের করণীয় স্পষ্ট করে কঠোর বার্তা দেওয়া হবে, যাতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে বাহিনীর ভূমিকা নির্ভুল হয়।