এক দিনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা, ইয়েমেন ও লেবাননে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। গাজায় হামলায় আরো ২১ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি হয়েছে। আর ইয়েমেনে দুইটি বন্দর ও বিদ্যুৎপ্লান্টে হামলা চালিয়েছে দেশটি। এছাড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে লেবাননেও।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) টাইমস অব ইসরায়েল ও আলজাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদন অনুসারে, হামাসকে লক্ষ্যবস্তু করার নামে শুক্রবার ভোর থেকে গাজাজুড়ে নতুন করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত নারী-শিশুসহ ২১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এ নিয়ে গাজায় ৪৬ হাজারেরও বেশি নিরীহ মানুষকে হত্যা করল ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া বর্বর আগ্রাসনে লক্ষাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
বাস্তুচ্যুত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ২০ লাখের বেশি মানুষ।এদিকে যুদ্ধবিরতে চুক্তি লঙ্ঘন করে লেবাননের দক্ষিণে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। হামলায় কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন। ইসরায়েলের দাবি, একটি গাড়িতে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের অস্ত্র তুলতে দেখে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। তবে এতে লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন হয়নি। চুক্তি মেনে চলতে ইসরায়েল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তায়র দিব্বা শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় পাঁচজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৩ হাজার ৩৮৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৪১৭ জন।
অন্যদিকে ইয়েমেনে হামলার ব্যাপারে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রিত স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ করেছে তারা। গাজাবাসীর পক্ষে সমর্থন জানিয়ে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসা ইয়েমেনের দুটি বন্দর ও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে বিমান থেকে অর্ধশত বোমা বর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। রাজধানী সানার কাছে অবস্থিত একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং হোদেইদাহ ও রাস ইসা বন্দর ছিল তাদের লক্ষ্যবস্তু।
টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট সানার উত্তরে হার্ফ সুফিয়ান জেলায় হুথিদের অবস্থানে আঘাত করার পরপরই ইসরায়েলের বিমান হামলা শুরু হয়। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, হামলাগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বিতভাবে হয়েছিল। তবে এটি যৌথ অভিযান ছিল না।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, ২০টিরও বেশি ফাইটার জেট, রিফুয়েলার্স এবং স্পাই প্লেন ইয়েমেনে হামলায় অংশ নিয়েছিল। তারা তিনটি প্রধান লক্ষ্যবস্তু ৫০টি বোমা নিক্ষেপ করে।ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, পাওয়ার প্লান্টটি হুথি শাসকদের সামরিক কার্যকলাপে শক্তির একটি কেন্দ্রীয় উৎস হিসেবে কাজ করেছিল।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীর নেতারা কেউ ইসরায়েলি আক্রমণের বাইরে থাকবে না।এক ভিডিও বিবৃতিতে তিনি বলেন, হুথিগোষ্ঠীর নেতা আবদ আল-মালিক আল-হুথি এবং ইয়েমেনের হুথিগোষ্ঠীর নেতাদের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা।