ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজাবাসীর প্রতি তুরস্কের ন্যায়সঙ্গত অবস্থান এবং ভালোবাসা ইতিহাসে লেখা থাকবে, যেমনটি সিরিয়ার ক্ষেত্রে হয়েছে। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান ইস্তাম্বুলে এক সমাবেশে এ মন্তব্য করেন। খবর তুর্কি গণমাধ্যম ইয়েনি সাফাকের।
ইস্তাম্বুলে তিনি তুর্কি রপ্তানিকারকদের সমাবেশে বলেন, সিরিয়ার মতোই গাজা নিয়ে তার দেশের ন্যায়পরায়ণ অবস্থান ইতিহাসে লেখা থাকবে। সিরিয়ার ক্ষেত্রে আমরা সঠিক প্রমাণিত হয়েছি, ইতিহাস গাজা সংকটেও আমাদের ন্যায়সঙ্গত অবস্থানকে স্বীকৃতি দেবে।ইসরায়েলের সঙ্গে তার দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক শতভাগ ছিন্ন করার কথা উল্লেখে এরদোগান বলেন, তুরস্ক একমাত্র দেশ, যে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ করেছে।
২০২৩ সালের মে মাসে তুরস্ক ইসরায়েলের সঙ্গে প্রায় ৯.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বাণিজ্য স্থগিত করে। কঠিন এই সিদ্ধান্তটি গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে তুরস্কের অবস্থান স্পষ্ট করতে নেয়া হয়।সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ প্রায় ২৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। গত ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর দামেস্ক দখলের পর তিনি রাশিয়ায় পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় ১৯৬৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা বাথ পার্টির শাসনের অবসান ঘটে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ ও গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরায়েলি হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাধার কারণে ফিলিস্তিনে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।