২০২৩ সালটি দেশের শোজিব অঙ্গনের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ বছর। অনেকটা ঝিমিয়ে পড়া এ অঙ্গনটি চলতি বছর বেশ প্রাণ সঞ্চার করেছে। বিশেষ করে করোনার পর নতুন রূপে যাত্রা শুরু করেছে শোবিজ অঙ্গন।
কিন্তু এর মাঝেও বিষাদের সুর বেজেছে মাঝে মধ্যে। অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে শোবিজে। পাশাপাশি অনেক তারকা হারিয়েছি আমরা। জেনে নেওয়া যাক চলতি বছর যেসব তারকা হারিয়েছে শোবিজ-
অভিনেতা এম খালেকুজ্জামান: বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা এম খালেকুজ্জামান ২১ মার্চ পরলোকগমন করেন।
চিত্রনায়ক ফারুক: ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকেও চলতি বছর হারিয়েছি আমরা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ১৫ মে তিনি মারা যান।
নাট্য নির্মাতা মোহন খান: বরেণ্য নাট্য নির্মাতা মোহন খান ৩০ মে মারা যান। তার মৃত্যুতে নাট্যাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। মোহন খানের উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘জোনাকীর গল্প’, ‘দূরের মানুষ’, ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’, ‘বেলাভূমি, সমুদ্র সীমানায়’, ‘সমুদ্রে গাংচিল’ ও ‘গাংচিল ভালোবাসা’।
চিত্রগ্রাহক আফজাল চৌধুরী: ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেওয়া সিনেমা ‘জীবন থেকে নেয়া’র চিত্রগ্রাহক আফজাল চৌধুরী। খ্যাতিমান নির্মাতা জহির রায়হানের আলোচিত ‘কাঁচের দেয়াল’ সিনেমার মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে।
গীতিকার রাজীব আশরাফ: চলতি বছর গীতিকবি ও নির্মাতা রাজীব আশরাফের মৃত্যু শোবিজকে স্তব্ধ করেছে। চলতি বছর ১ সেপ্টেম্বর ‘হোক কলরব’ খ্যাত জনপ্রিয় এ গানের গীতিকার রাজীব আশরাফ আমাদের ছেড়ে চলে যান। ৩৮ বছর বসয়ী সৃজনশীল এ মানুষটির মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারেননি।
নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান: চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহানও চলতি বছর আমাদের ছেড়ে চলে যান। তিনি ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ নির্মাণ করে দেশীয় চলচ্চিত্রে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন। ঢাকাই চলচ্চিত্রের এ তারকা নির্মাতা চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান।
নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী: ‘ঘুড্ডি’ খ্যাত নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী চলতি বছর ১৯ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। ১৯৮০ সালে ‘ঘুড্ডি’ সিনেমা দিয়ে সাড়া ফেলেছিলেন। এ সিনেমার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতউল্লাহ: একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী জিনাত বরকতউল্লাহ চলতি বছর ২০ সেপ্টেম্বর পরলোক গমন করেন। তিনি শুধু নৃত্য চর্চা-ই নয়, ১৯৮০ সালে বিটিভিতে প্রচারিত ‘মারিয়া আমার মারিয়া’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসেবেও ক্যারিয়ার শুরু করেন। তিনি ৮০টির বেশি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে মানুষের ভালোবাসা লাভ করেন।
সংগীতশিল্পী সুজিত রায়: স্বাধীন বাংলা বেতারের শব্দসৈনিক সংগীতশিল্পী সুজিত রায়। চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর রাতে প্রয়াত হন তিনি।
তারেক মাহমুদ: নির্মাতা, অভিনেতা ও কবি তারেক মাহমুদ। তিনি একাধারে নাট্যনির্মাতা, অভিনেতা ও কবি ছিলেন। তার অকাল প্রয়াণে সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। এ বছর ২৬ অক্টোবর দিবাগন রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।
হুমায়রা হিমু: চলতি বছর দেশীয় নাট্যাঙ্গনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যু সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। এ বছর ২ নভেম্বর তার রহস্যজনক মৃত্যু অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
শফি বিক্রমপুরী: চলতি বছর চির বিদায়ের যাত্রায় নাম লেখান খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার শফি বিক্রমপুরী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তিনি গত ১৮ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৪৩ সালের ৪ জুলাই মুন্সিগঞ্জ জেলার (সাবেক বিক্রমপুর পরগনা) শ্রীনগর থানার মত্তগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শফি বিক্রমপুরী।
বুলবুল মহলানবীশ: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ ১৪ জুলাই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ধরনের অসুখে ভুগছিলেন।
মিতা চৌধুরী: চলতি বছরের ২৯ জুন মারা যান অভিনেত্রী। তিনি লন্ডনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন মিতা চৌধুরী।
পান্না কায়সার: বিশিষ্ট লেখক, সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ, সাবেক সংসদ সদস্য ও শিশু সংগঠক পান্না কায়সার চলতি বছর আমাদের ছেড়ে চলে যান। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন তিনি।