দেশে প্রতি বছর বাড়ছে ইলিশের উৎপাদন। ইলিশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক জানান, একটি মা ইলিশ ১০ থেকে ২০ লাখ ডিম ছাড়ে। এর মধ্যে যদি ১০ ভাগও টেকে, তাহলে আগামী মৌসুমে নতুন করে অন্তত ৪০ হাজার কোটি ইলিশ পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ ইলিশ গবেষণা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, এ বছর ৫২.৫% মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে। গত বছর এটি ছিল ৫২%। অনুকূল পরিবেশ ও তেমন বাধা না পাওয়ায় পদ্মা-মেঘনাসহ নদীগুলোতে ডিম ছাড়ায় রেকর্ড হয়েছে। ইলিশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. আনিছুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, একটি মা ইলিশ ১০ থেকে ২০ লাখ ডিম ছাড়ে। এর মধ্যে যদি ১০ ভাগও টেকে, তাহলে আগামী মৌসুমে নতুন করে অন্তত ৪০ হাজার কোটি ইলিশ পাওয়া যাবে। জেলেরা বেপরোয়া না হলে এবং নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ ও অপরিকল্পিত বালু না তোলা হলে ইলিশ উৎপাদন বাড়তেই থাকবে।
ড. আনিছুর রহমান বলেন, “এ বছর মা ইলিশ চলাচলে তেমন বাধার মুখে পড়েনি। প্রশাসনের খবরদারি থাকায় নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা আগের তুলনায় কম মা ইলিশ শিকার করেছেন। এছাড়া শত শত ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন না থাকায় ইলিশের ডিম বা লার্ভা নষ্ট কম হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে পড়া অমাবস্যা ও পূর্ণিমা ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত ছিল।”
ইলিশ গবেষকরা বলছেন, প্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে অমাবস্যা ও ভরা পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে মা ইলিশ সাগর মোহনা হয়ে ডিম ছাড়তে পদ্মা-মেঘনাসহ বড় নদীতে আসে। সমুদ্র সংযুক্ত ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার নদী অঞ্চল এবং চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ ছয়টি অভয়াশ্রমে মা ইলিশ ডিম ছাড়ে।
চাঁদপুর নদীকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০১৮ সালে ৪৭.৭৫%, ২০১৯ সালে ৪৮.৯২%, ২০২০ সালে ৫১.২%, ২০২১ সালে ৫১.৭% এবং ২০২২ সালে ৫২% মা ইলিশ ডিম ছাড়ে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, প্রতি বছরই দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৫.১৭ লাখ টন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫.৩৩ লাখ টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫.৫ লাখ টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫.৬৫ লাখ টন এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৬ টনে।