লাখ টাকা পুরস্কার। কোনো লটারি নয়, পুরস্কার মিলবে ভোটকেন্দ্রে বেশি ভোটার উপস্থিতি করাতে পারলে। আর এই পুরস্কার পাওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছেন সেখানে নির্বাচনের জন্য করা ওয়ার্ড কমিটির নেতারা।
আখাউড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ নির্বাচনী এলাকা। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, আইন-বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তাকে জয়ী করতে কাজ করছেন নির্বাচনী এলাকার দুই উপজেলা কসবা ও আখাউড়ার দলের নেতাকর্মীরা। হেভিওয়েট প্রার্থী আনিসুল হক নিজেও ব্যস্ত ভোটের মাঠে। ১৯শে ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকা থেকে আখাউড়া এসে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন তিনি। ২১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করে ঢাকায় ফিরে গেছেন। আবার ২৮শে ডিসেম্বর এলাকায় এসে থাকবেন ভোটের দিন পর্যন্ত।
২ জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। তাদের একজন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শাহীন খান (আম) এবং আরেকজন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের সৈয়দ জাফরুল কদ্দুস (ফুলের মালা)। জাফরুলকে ক’দিন আগে খাড়েরা এলাকায় প্রচারণায় পাওয়া গেলেও শাহিন এলাকাতেই নেই। জাফরুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা গ্রামে। সে কারণেই কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত নির্বাচনী এলাকার ওই দুই উপজেলায় নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বরত নেতারা।
ওয়ার্ড কমিটি করে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে ব্যতিক্রম ব্যাপার রয়েছে আখাউড়ায়। সেখানকার ওয়ার্ড কমিটির জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। যে ওয়ার্ড কমিটি তার কেন্দ্রে বেশি ভোটার উপস্থিত করতে পারবে তারা পাবে পুরস্কার। প্রথম পুরস্কার ১ লাখ টাকা। এভাবে ২য় পুরস্কার ৭৫ হাজার এবং ৩য় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। জানা গেছে, গত ৪/৫ দিন আগে দলের নেতাকর্মী এবং ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের নিয়ে করা এক সভায় এই পুরস্কার ঘোষণা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল।
পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মো. বাবুল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রত্যেক ইউনিয়ন এবং পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের জন্য এই পুরস্কার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মহোদয়। পুরো থানা এবং পৌরসভার নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত নেতাকর্মীদের নিয়ে বিশাল এক বৈঠকে তিনি এ ঘোষণা দেন। যারা সর্বোচ্চ ভোট দিতে পারবেন তারাই পাবেন পুরস্কার। প্রথম পুরস্কার ১ লাখ, ২য় পুরস্কার ৭৫ হাজার এবং ৩য় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা। এটি সাড়া ফেলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাড়ি বাড়ি ওয়ার্ক করছি।
কোনো ত্রুটি নেই। বাড়ি বাড়ি গিয়ে যারা বেশি ভোটার নিয়ে আসতে পারবেন পুরস্কার তাদেরই হবে। তাছাড়া দলমতনির্বিশেষে সবাই বলছেন ভোট দিতে আসবেন। আইনমন্ত্রী ভালো মানুষ, সৎ মানুষ। সেজন্য তাকে ভোট দিতে মানুষ খুবই আগ্রহী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়ার্ড কমিটির এক নেতা বলেন, এই ঘোষণার পর বাড়ি থেকে কীভাবে আমরা ভোটার আনবো সেই কাজ করছি। সাড়া দিতেছে ভোটাররা। তবে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল বিষয়টি স্বীকার করেননি। বলেন- আমাদের এমন কিছু করা হয়নি।
তবে নির্বাচনী এলাকাধীন আরেক উপজেলা কসবায় খোঁজ নিয়ে ভোটার আনতে বিশেষ কোনো উদ্যোগের তথ্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাউসার ভূঁইয়া জীবন বলেন-আমরা সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। এখানে আনিসুল হককে ভোট দিতে পাবলিক এমনিতেই স্বতঃস্ফূর্ত। আমরা এটা অর্গানাইজ করছি, বলছি আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসবেন, ভোট দেবেন।
ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ, কেন্দ্র কমিটির নেতারা ওয়ার্ক করছেন।
সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা কসবা ও আখাউড়া নিয়ে এই নির্বাচনী আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ২৫৯০। এরমধ্যে আখাউড়া উপজেলার ভোটার ১ লাখ ২৬ হাজার ২০৪ জন। কসবা উপজেলার ভোট ২ লাখ ৭৬ হাজার ৩৮৬।