ভারতের কেরালায় ‘জেএন.১’ নামে করোনাভাইরাসের ‘অতি সংক্রামক’ একটি ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। ‘জেএন.১’ হলো সার্স-কভিড-২ এর একটি সাব ভ্যারিয়েন্ট। ভাইরাসটি নিয়ে বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও রাজ্য সরকার নাগরিকদের আতঙ্কিত না হতে আহ্বান জানিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ৮ ডিসেম্বর কেরালার থিরুভানান্থাপুরাম জেলার কারাকুলাম এলাকা থেকে সংগ্রহ করা নমুনায় করোনার নতুন এ ধরন শনাক্ত হয়।
আরটি–পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে ভাইরাসটি শনাক্ত হয় ৭৯ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার শরীরে। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট করোনার আগের সব ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি সংক্রামক। করোনার জেএন.১ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়া নারীর শরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগের মৃদু লক্ষণ দেখা দেয়। তিনি এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠলেও, ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়ে গেছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ.২.৮৬ অথবা পিরোলার মতোই এই জেএন.১। এটি গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর গত ১৫ ডিসেম্বর সাত জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এ ছাড়া কভিড-১৯ কেরালা ও তামিল নাড়ুতে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংক্রমণ বাড়ায় সরকার বয়স্কদের ভিড়ের মধ্যে মাস্ক ব্যবহার করতে বলেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার কোভিড-১৯ প্রযুক্তিগত উপদেষ্টা কমিটির তৈরি বিধিনিষেধ নিয়ে সরকার জনগণের জন্য একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
কর্ণাটকের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, ‘আন্তঃরাজ্য ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ নেই। আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। এখন পর্যন্ত কোনো ধরণে মারত্বক ঘটনা চোখে পড়েনি।
’ তিনি আরো বলেন, ‘সব বয়স্ক মানুষ (৬০ বছর বা তার ওপরে), অসুস্থ ব্যক্তি যেমন: কিডনি, হার্ট, লিভারের রোগে ভুগছে এমন এবং গর্ভবতী নারীদের অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। তারা সকল ধরনের জনাকীর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলবে।’
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার সঙ্গে জ্বর, কাশি, ঠাণ্ডা বা নাক দিয়ে পাড়ছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবে। মাস্ক পরার পাশাপাশি সবল জনাকীর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলবে। অসুস্থদের বাড়িতে থাকতেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের দক্ষিণে জেএন.১ এর ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত লোকের সংখ্যা বাড়লেও আতঙ্কিত না হতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। রাজ্যে কোভিড পরীক্ষাও বাড়ানো হবে। প্রথমে দিনে এক হাজার এরপর দৈনিক পাঁচ হাজার করে বাড়ানো হবে। কর্ণাটকের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, লক্ষণ আছে এমন সব ব্যক্তিদের রক্তের নমুনা এবং ভ্রমনে ইতিহাস পুরো জিনোম সিকোয়েন্সিং-এর জন্য পাঠাতে হবে। আরো বলা হয়, সার্স ভাইরাসে আক্রান্তদের অবশ্যই কভিড-১৯ পরীক্ষা করতে হবে। ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুস্থতার ক্ষেত্রেও পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে।