চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে নাটক, টেলিছবিও বানিয়েছেন অরুণা বিশ্বাস। এবার তাঁকে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও দেখা গেছে। ‘অসম্ভব’ নামে ছবিটি ৩ নভেম্বর দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে।
মুক্তির পর খুব একটা সন্তুষ্ট নন এই অভিনেত্রী। এসব নিয়ে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে কথা বলল বিনোদন
‘অসম্ভব’ দিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আপনার অভিষেক। মুক্তির আগে কেমন প্রত্যাশা ছিল, প্রাপ্তি কী হয়েছে?
আমার তো প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। রাজনৈতিক অস্থিরতায় ছবিটি মোটেও সুবিধা করতে পারেনি। এমন একটা সময়ে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে, ফলাফলে মনটা ভীষণ খারাপ হয়েছে। বলা যেতে পারে, ছবিটি মুক্তির পর ট্রমার মধ্যে পড়েছি। এখনো সেই ট্রমার মধ্যে আছি। এসবের কারণে মনে হয়েছে, সব সময় আমিই কেন এমন ঝামেলার মধ্যে পড়ি।
কোনো কিছু পাব নিশ্চিত জেনেও শেষ মুহূর্তে কী যেন হয়ে যায়। আশা করি, আশাহত হতে হয়। আমার ভাগ্যই কেমন যেন বিরূপ আচরণ করে। তাই ভাবতে থাকি, সবকিছু পেতে হলে এত কষ্ট করতে হবে কেন? কত মানুষ কত কী করে ফেলে লবিং–টবিং করে। ঠিক পথে থেকেও আমাকে কেন কষ্ট করতে হয়।
লবিং করে অযোগ্য, মেধাহীনকে প্রতিষ্ঠা পেতে দেখেছি। কত কত পুরস্কারও পায় লবিং করে—এ রকম বহু প্রমাণ আছে। এসবের কারণে মেধাবী ও যোগ্যরা হতাশ হয়। রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক শিল্পীর আছে। এই পুরস্কার যখন দু-একজনের মধ্যে আটকে যায়, তখন বিষয়টা কষ্টের। অনেক শিল্পী মানসিকভাবে হতাশ হয়। কাজে উদ্যম হারায়ও। একজন মানুষ খুব বেশি দক্ষ অভিনেতা না, তারপরও যদি সে সম্মান পায়, অনুপ্রাণিত হয়। সারা জীবন এ দেশের সংস্কৃতির পেছনে থাকতে থাকতে
আমরা যখন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন, তখন এমন অবস্থায় এমনটা ছিল না। এগুলো আমরা বুঝতামও না। তা ছাড়া আগে কথা বলার সাহস ছিল না, তাই বলতেও পারতাম না। তবে এখন বুঝি যে অনেক শিল্পীর পুরস্কারের ক্ষেত্রে প্রাপ্তির সঠিক প্রক্রিয়া মানা হয়নি। এই দায় সবারই। কথার কথা, দেখা যাচ্ছে, কোনো একজন শিল্পী ১৫ বার পুরস্কার পাচ্ছে, অন্যদিকে সারা জীবন কাজ করে একটি পুরস্কারও জুটছে না কারোর। আমার কাছে মনে হয়, এটা অনুপ্রেরণার বিষয়। তাহলে আমরা কেন বঞ্চিত হয়েছি? আমাদের কয়েকজন শিল্পীকে তো অবশ্যই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটা নিয়ে যদি বিশ্লেষণ হয়, তাহলে জানা যাবে।
একটা মানুষ যদি ভালো কাজ করে, জুরিবোর্ড সন্তুষ্ট হয়, তাহলে ১৫ বার পুরস্কার পেতে সমস্যা কোথায়? তা অবশ্যই পেতে পারে। ১৫ বার কেন, একজন শিল্পী ১০০ বারও পেতে পারে। কিন্তু যারা কাজ করে, তারাও তো পুরস্কার পেতে পারে। আশা তো করতেই পারে। না, কাজ যদি প্রশংসিত হয়।
কাজ যদি ব্যবসাসফল হয়, তাহলে তো হতেই পারে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মাপকাঠি কী—যে মানুষটা জনপ্রিয়, যার ছবি ব্যবসাসফল হয়, যে মানুষটার কাজ সবাই পছন্দ করে, তাদেরও বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। এটাও তো বড় নির্ণায়ক। বছর শেষে আমরা ধরে নিয়েছি, এ পাবে; পরে দেখলাম, যে পাওয়ার সে-ই পেল না। এমন কাউকে পেতে দেখি, যাদের কাজ নিয়ে অনেক সময় কোনো আলোচনাও হয় না।
ছবি তো বানাতে চাই। কিন্তু কয়েকটা দিন নিজের মতো কাজ করি আগে। বেশ কিছু শুটিং আছে, সেসব শেষ করি। তারপর আবার সামনে নির্বাচন আছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনাও আছে। সবকিছু মিলিয়ে ব্যস্ততাও আছে। এরপর নতুন ছবির কথা ভাবব।