ঢাকা ০৯:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনী ইশতেহারে অগ্রাধিকার পাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ

শনিবার (২৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির যৌথ উদ্যোগে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক ছায়া সংসদের গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন,আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে ।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে হয়তো শতভাগ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের সফলতা আছে। নিম্ন আয়ের মানুষের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে টিসিবিসহ নানান কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার জন্য সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।

করোনা পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, এর প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। এতে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটি সত্যি। দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি এবং বেসরকারি খাতের যৌথ ভূমিকা মুখ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি। দেশে মাংস আমদানি করা হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় খামারিদের স্বার্থ বিবেচনায় মাংস আমদানির পরিকল্পনা সরকারের নেই। মাংস আমদানি করলে দেশের মানুষকে ৪০০-৪৫০ টাকায় খাওয়ানো সম্ভব। কিন্তু আমরা সবসময় দেশের খামারিদের কথা ভেবেছি যে তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ হোক।

তিনি বলেন, কোরবানির অর্ধেক গরু ভারত থেকে আমদানি করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে একটি গরুও আমদানি করতে হয় না, বরং উদ্বৃত্ত থাকে। এ খাতে অনেক নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। অনেকে চাকরি না করে গরুর খামার দিচ্ছে। দেশের খামারিদের কথা বিবেচনায় আপাতত আমরা মাংস আমদানি করতে চাই না।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে টিপু মুনশি বলেন, ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসায় যখন আমদানির অনুমতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, তখন ডিমের দাম কমে গেলো। মাত্র ৬২ হাজার ডিম আমদানির পর প্রতি ডজনে আরও ২০-৩০ টাকা কমে গেলো। আলুর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এর মানে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্য মজুত আছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফার লোভে বাজারজাত করছে না।

দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজের চাহিদা, তারচেয়ে প্রায় ৭-৮ লাখ মেট্রিক টন ঘাটতি থাকে। যেটা আমরা ভারত থেকে আমদানি করে থাকি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির পারমিশন দেওয়ার জন্য বলা হলেও কৃষকের কথা ভেবে অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে যখন আমদানির অনুমতি দেওয়া হলো তখন ভারত আমদানির উপর ৪০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করলো। এর কিছুদিন পরই আবার প্রতি মেট্রিকটন পেঁয়াজ রপ্তানি আটশো ডলার করে। যে কারণে সরকার নির্ধারিত দাম ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। চিনির আমদানি শুল্ক কমানোর পরও দাম না কমা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ডলারের মূল্য আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। যেসব পণ্য আমদানি করতে হয় সেগুলো আন্তর্জাতিক বাজার বা ডলারের মূল্যের ওপর নির্ভর করে। আমরা চাইলেও সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারি না। আমরা যেটা পারি সেটা হলো শুল্ক কমাতে। যেমন চিনির দাম কমাতে আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় দামে কোনো প্রভাব পড়েনি, বরং বেড়েছে। ফলে এর সুফল ভোক্তা পায়নি।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, সরকার বা সিন্ডিকেট শক্তিশালী নয়। জনগণের সিন্ডিকেট সবচেয়ে শক্তিশালী। ভোক্তাদের সচেতন ও প্রতিবাদী হতে হবে। সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে কোনো শক্তিই টিকতে পারবে না। এ উদ্যোগ মানুষকে সচেতন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ইডেন মহিলা কলেজ এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ফাইনাল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ জয়লাভ করে।

নির্বাচনী ইশতেহারে অগ্রাধিকার পাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ

আপডেট সময় ০৫:০৮:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

শনিবার (২৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির যৌথ উদ্যোগে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক ছায়া সংসদের গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন,আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে ।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে হয়তো শতভাগ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের সফলতা আছে। নিম্ন আয়ের মানুষের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে টিসিবিসহ নানান কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার জন্য সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।

করোনা পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, এর প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। এতে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটি সত্যি। দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি এবং বেসরকারি খাতের যৌথ ভূমিকা মুখ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি। দেশে মাংস আমদানি করা হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় খামারিদের স্বার্থ বিবেচনায় মাংস আমদানির পরিকল্পনা সরকারের নেই। মাংস আমদানি করলে দেশের মানুষকে ৪০০-৪৫০ টাকায় খাওয়ানো সম্ভব। কিন্তু আমরা সবসময় দেশের খামারিদের কথা ভেবেছি যে তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ হোক।

তিনি বলেন, কোরবানির অর্ধেক গরু ভারত থেকে আমদানি করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে একটি গরুও আমদানি করতে হয় না, বরং উদ্বৃত্ত থাকে। এ খাতে অনেক নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। অনেকে চাকরি না করে গরুর খামার দিচ্ছে। দেশের খামারিদের কথা বিবেচনায় আপাতত আমরা মাংস আমদানি করতে চাই না।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে টিপু মুনশি বলেন, ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসায় যখন আমদানির অনুমতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, তখন ডিমের দাম কমে গেলো। মাত্র ৬২ হাজার ডিম আমদানির পর প্রতি ডজনে আরও ২০-৩০ টাকা কমে গেলো। আলুর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এর মানে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্য মজুত আছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফার লোভে বাজারজাত করছে না।

দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজের চাহিদা, তারচেয়ে প্রায় ৭-৮ লাখ মেট্রিক টন ঘাটতি থাকে। যেটা আমরা ভারত থেকে আমদানি করে থাকি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির পারমিশন দেওয়ার জন্য বলা হলেও কৃষকের কথা ভেবে অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে যখন আমদানির অনুমতি দেওয়া হলো তখন ভারত আমদানির উপর ৪০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করলো। এর কিছুদিন পরই আবার প্রতি মেট্রিকটন পেঁয়াজ রপ্তানি আটশো ডলার করে। যে কারণে সরকার নির্ধারিত দাম ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। চিনির আমদানি শুল্ক কমানোর পরও দাম না কমা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ডলারের মূল্য আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। যেসব পণ্য আমদানি করতে হয় সেগুলো আন্তর্জাতিক বাজার বা ডলারের মূল্যের ওপর নির্ভর করে। আমরা চাইলেও সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারি না। আমরা যেটা পারি সেটা হলো শুল্ক কমাতে। যেমন চিনির দাম কমাতে আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় দামে কোনো প্রভাব পড়েনি, বরং বেড়েছে। ফলে এর সুফল ভোক্তা পায়নি।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, সরকার বা সিন্ডিকেট শক্তিশালী নয়। জনগণের সিন্ডিকেট সবচেয়ে শক্তিশালী। ভোক্তাদের সচেতন ও প্রতিবাদী হতে হবে। সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে কোনো শক্তিই টিকতে পারবে না। এ উদ্যোগ মানুষকে সচেতন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ইডেন মহিলা কলেজ এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ফাইনাল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ জয়লাভ করে।