অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব, গ্যাজেট নির্ভর আধুনিক জীবন বেশিরভাগ মানুষের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। রাতেরবেলা শরীরে ক্লান্ত থাকলেও চোখে ঘুম আসে না। ঘুম না আসার কারণে দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাতসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগতে হয়।
এসব থেকে বাঁচার উপায় আছে। আধুনিক গবেষণা বলছে এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা খেলে শরীরে মেলাটোনিন এবং কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ হয়। ফলে রাতে ভালো ঘুম হয়। ঘুমানোর আগে কম ক্যালরিযুক্ত ও সহজে হজম হয় এমন খাবার খেতে হবে।
শর্করা কম খাওয়াই ভালো। আমিষ ও সামান্য শর্করার হালকা মিশেলে খাবারের মান ১৫০ থেকে ২০০ ক্যালরি হলে ঘুম ভালো হয়। তেল, চর্বি বা ভাজাপোড়া খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে ভালো ঘুমের জন্য যেসব খাবার খাওয়া দরকার-
দুধ: গরম দুধে বিদ্যমান অ্যামাইনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক।
ডিম: ডিমে আছে ভিটামিন ডি, যা ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলে। মস্তিষ্কে যে অংশের নিউরন ঘুমাতে সাহায্য করে ডিমের ভিটামিন ডি সেখানে কাজ করে। যাদের ভিটামিন ডির স্বল্পতা থাকে, তাদের সহজে ঘুম আসে না।
মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলুকে বলা হয় ‘ঘুমের মাসি’। এতে বিদ্যমান পটাশিয়াম ঘুমাতে সাহায্য করে।
কলা: কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। এসব উপাদান ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে।
মধু: মধু সেরেটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরি করে। নিয়মিত মধু খেলে ভালো ঘুম হয়। ঘুমানোর আগে প্রতিদিন এক টেবিল চামচ মধু খেতে পারেন।
লেটুস: লেটুস পাতায় বিদ্যমান ল্যাকটুক্যারিয়াম ভালো ঘুমে সহায়তা করে। এই পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে কিংবা সালাদ করেও খেতে পারেন।
আখরোট: আখরোটেও ট্রিপটোফ্যান রয়েছে। এটি সেরেটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরিতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমানোর আগে নিয়মিত দুটি আখরোট খেতে পারেন।
আমন্ড: আমন্ডে শর্করা ও চিনি নেই। ক্যালশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর এই খাবার মস্তিষ্কের বিশ্রামের জন্য খুব দরকার। ভালো ঘুমের জন্য প্রতিদিন ৩০ গ্রাম আমন্ড খেতে পারেন।
কাঠবাদাম: কাঠবাদামে বিদ্যমান ম্যাগনেশিয়াম ও ট্রিপটোফ্যান স্নায়ু ও মাংসপেশিকে শান্ত করে। স্নায়ু এবং মাংসপেশি শান্ত হলে ভালো ঘুম হবে।
এছাড়া সবজির স্যুপ, আপেল, বাদাম, কিশমিশসহ অন্যান্য খাবার স্বাস্থ্যকর খাবার নিয়মিত খেতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত থাকলে এবং মানসিক অবসাদ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখলে ভালো ঘুম হতে বাধ্য।