দেশেই যক্ষার ওষুধ তৈরি হচ্ছে, বলেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এগুলো দেশে ব্যবহারের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করব। একইসঙ্গে দেশে ভালো মানের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যক্ষাতে আমাদের যে বাজেট বরাদ্দ রয়েছে প্রয়োজনে তা বাড়ানো হবে।
রবিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে যক্ষা বিষয়ক নবম জেএমএম প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যক্ষ্মায় প্রতি বছর ৩ লাখের অধিক মানুষ আক্রান্ত হন। অসংখ্য মারা যান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মৃত্যুর হার কমেছে। ২০১৫ সালে যেখানে ৭০ হাজারের অধিক মৃত্যু ছিল, এখন তা ৪০ হাজারে নেমে এসেছে। আমাদের মৃত্যু বেশি, কারণ আমাদের জনসংখ্যাও বেশি।তিনি বলেন, যক্ষা পরিস্থিতির অগ্রগতি হচ্ছে। ব্যাপক ভিত্তিতে টিবি স্ক্রিনিং কার্যক্রম চলছে। আমাদের সব হাসপাতালে যক্ষ্মা পরীক্ষার যন্ত্রপাতি রয়েছে। টিবির বিষয়ে আমাদের দেশে বেশকিছু স্টিগমা (অপবাদ) আছে। তবে পরিবর্তন আসছে।
মানুষ এখন কুসংস্কার এড়িয়ে চিকিৎসাকেন্দ্রে যাচ্ছেন। আর তাদের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন। আমরা চাই মানুষ চিকিৎসা নিতে আসুক। তাদের চিকিৎসা দেওয়ার সব ব্যবস্থা রয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ করোনার চাপ শেষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। করোনার কারণে আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এ সময় আমাদের স্বাস্থ্য খাত চাপে পড়েছিল। এ সময় যক্ষাসহ অন্যান্য সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। তবে করোনা নিয়ন্ত্রণ করে খুব দ্রুতই আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছি। দেশের ৯০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। যেখানে সারাবিশ্বে ৭০ ভাগ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে।
সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘টিবি নির্মূলে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ টিবিমুক্ত হবে।’
যক্ষা সংক্রান্ত সূত্রে বলা হয়, ২০২১ সালে নতুনভাবে ফুসফুসের যক্ষায় আক্রান্ত রোগীদের ৯৫ ভাগ শনাক্তকরণ এবং তাদের চিকিৎসা নিশ্চিতকরণ সম্ভব হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যায় যক্ষা সংক্রমণের হার ২২৫ জন থেকে ২০২১ সালে এই সংক্রমণের হার ২১৮ জনের মধ্যে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
সব ধরনের যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা শনাক্তকরণ বেড়েছে যা ২০১৫ সালে ছিল প্রায় ২ লাখ ৬ হাজার ৮৬৬ এবং ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬ হাজার ৫৩১ জনে।