ঢাকা ১২:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অভ্যন্তরীর কোন্দল দূর করে দল সুসংগঠিত করতে হবে: কাজী জাফর উল্লাহ

রাজনীতি ডেক্স : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেছেন, নেতাকর্মীদের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দলকে সুসংগঠিত করার মাধ্যমে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

জনগণের পাশে থেকে তাদের প্রত্যাশা পূরণের রাজনীতি করলে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের রাজনীতি স্বার্থক হবে। এক্ষেত্রে পদপদবির জন্য পাগল হওয়া জরুরি নয়, বরং জনগণকে ভালোবাসতে হবে, যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। আর আওয়ামী লীগে সম্মেলনের মাধ্যমে থানা পর্যায়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে শেখ হাসিনা যাকে নির্বাচিত করবেন তাকেই সবার মানতে হবে।

শনিবার দুপুরে (৩ সেপ্টেম্বর) ডেমরা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে ডেমরা থানাসহ ৬৪, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯ ও ৭০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা-৫ আসনের প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা অনেক জনপ্রিয় ছিলেন। আমরা জেলে থাকা অবস্থায় তিনি খাবার নিয়ে আসতেন। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের নেতা ছিলেন হাবিবুর রহমান মোল্লা। ডেমরায় যারা নেতা হতে চান তারা হাবিবুর রহমান মোল্লাকে দেখেন, কীভাবে তিনি রাজনীতি করতেন।

মোল্লা ভাই রিকশায় চলতেন, পাজেরো বা বড় বড় গাড়িতে চলতেন না। তিনি তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ মানুষকে ভালোবাসতেন। রাজনীতি করা অবস্থায় দেখেছি তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল। তবে এখন যারা নেতা হতে চান তারা বড় বড় গাড়ি হাঁকিয়ে চলার চেষ্টা করছেন, যা আওয়ামী লীগ পছন্দ করে না। ত্যাগী ও মানুষের ভালোবাসার পাত্ররা দাপট দেখায় না, বরং দাপট তারাই দেখায় যারা নব্য আওয়ামী লীগে বিভিন্ন পর্যায় থেকে এসেছেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের কী ‘দৌড় সালাউদ্দিনের’ কথা মনে আছে? তিনি শুধু দৌড়ের ওপরই আছেন। ঢাকা-৫ আসনে তার রাজত্বের পতন ঘটিয়েছেন মোল্লা ভাই।

তাই এখনো ডেমরায় নৌকার পাগল সবাই। আপনারা আওয়ামী লীগের পক্ষে দৌড়ানোর জন্য তৈরি হয়ে যান এখনই। যেকোনো মূল্যে দেশের সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনে শেখ হাসিনাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে শক্তিশালীভাবে কমিটি গঠন করতে হবে। ইউনিট থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে হবে।

ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খান মাসুদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

এসময় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সহ-সভাপতি মিজবাহুর রহমান ভূঁইয়া রতন, শরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এস কে বাদল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এফ এম শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদস্য সালাউদ্দিন বাদল প্রমুখ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল মোল্লা, ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান পলিনসহ ডেমরা যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

অনুষ্ঠানে মির্জা আজম বলেন, ক্লিন ইমেজের নেতাদের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিট ও থানা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করতে হবে। বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও ভূমিদস্যুদের স্থান দেওয়া যাবে না। মনে রাখবেন, একজন দুর্নীতিবাজকে কমিটিতে রাখবেন তিনি ২০ জন দুর্নীতিবাজকে স্থান দেবে। একজন চাঁদাবাজ ২০ জন চাঁদাবাজকে স্থান দেবে।

মহানগরের ওয়ার্ড ও ইউনিট এখন আগের থেকে শক্তিশালী উল্লেখ করে মির্জা আজম বলেন, আজ ডেমরা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ জোয়ার আগে কিন্তু দেখা যায়নি। কিছু দিন আগে ঢাকা-৫ আসনে উপনির্বাচন হয়।

সে নির্বাচনে আমি সমন্বয়ের দায়িত্বপালন করেছিলাম। সেদিন কিন্তু এমন জোয়ার আমাদের চোখে পড়েনি, কিন্তু আজ দেখলাম। আগে ওয়ার্ড ইউনিট সম্মেলন হয়নি। সে কাজ আমরা করতে পেরেছি। নেতাকর্মীদের জোয়ার সে সম্মেলনের সুফল। আজ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ শক্তিশালী সংগঠন ইউনিট হিসেবে দুর্গ গড়ে উঠেছে।

ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধ সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সস্পাদক মির্জা আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর পরিশ্রমে আজ দেশের সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। অথচ এ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে আজ ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যেনো কোনো অপশক্তি রাজনীতির নামে অপরাজনীতি করতে না পারে।

অনুষ্ঠানে তারেক জিয়ার সমালোচনা করে মির্জা আজম বলেন, ‘জিয়ার ছেলে তারেক রহমান বিদেশে বসে আওয়ামী লীগ সভপাতি শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি আগেও শেখ হাসিনাকে খুনের চেষ্টা করেছে।’

ট্যাগস

অভ্যন্তরীর কোন্দল দূর করে দল সুসংগঠিত করতে হবে: কাজী জাফর উল্লাহ

আপডেট সময় ০৫:২১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

রাজনীতি ডেক্স : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেছেন, নেতাকর্মীদের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দলকে সুসংগঠিত করার মাধ্যমে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

জনগণের পাশে থেকে তাদের প্রত্যাশা পূরণের রাজনীতি করলে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের রাজনীতি স্বার্থক হবে। এক্ষেত্রে পদপদবির জন্য পাগল হওয়া জরুরি নয়, বরং জনগণকে ভালোবাসতে হবে, যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। আর আওয়ামী লীগে সম্মেলনের মাধ্যমে থানা পর্যায়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে শেখ হাসিনা যাকে নির্বাচিত করবেন তাকেই সবার মানতে হবে।

শনিবার দুপুরে (৩ সেপ্টেম্বর) ডেমরা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে ডেমরা থানাসহ ৬৪, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯ ও ৭০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা-৫ আসনের প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা অনেক জনপ্রিয় ছিলেন। আমরা জেলে থাকা অবস্থায় তিনি খাবার নিয়ে আসতেন। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের নেতা ছিলেন হাবিবুর রহমান মোল্লা। ডেমরায় যারা নেতা হতে চান তারা হাবিবুর রহমান মোল্লাকে দেখেন, কীভাবে তিনি রাজনীতি করতেন।

মোল্লা ভাই রিকশায় চলতেন, পাজেরো বা বড় বড় গাড়িতে চলতেন না। তিনি তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ মানুষকে ভালোবাসতেন। রাজনীতি করা অবস্থায় দেখেছি তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল। তবে এখন যারা নেতা হতে চান তারা বড় বড় গাড়ি হাঁকিয়ে চলার চেষ্টা করছেন, যা আওয়ামী লীগ পছন্দ করে না। ত্যাগী ও মানুষের ভালোবাসার পাত্ররা দাপট দেখায় না, বরং দাপট তারাই দেখায় যারা নব্য আওয়ামী লীগে বিভিন্ন পর্যায় থেকে এসেছেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের কী ‘দৌড় সালাউদ্দিনের’ কথা মনে আছে? তিনি শুধু দৌড়ের ওপরই আছেন। ঢাকা-৫ আসনে তার রাজত্বের পতন ঘটিয়েছেন মোল্লা ভাই।

তাই এখনো ডেমরায় নৌকার পাগল সবাই। আপনারা আওয়ামী লীগের পক্ষে দৌড়ানোর জন্য তৈরি হয়ে যান এখনই। যেকোনো মূল্যে দেশের সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনে শেখ হাসিনাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে শক্তিশালীভাবে কমিটি গঠন করতে হবে। ইউনিট থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে হবে।

ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খান মাসুদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

এসময় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সহ-সভাপতি মিজবাহুর রহমান ভূঁইয়া রতন, শরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এস কে বাদল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এফ এম শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদস্য সালাউদ্দিন বাদল প্রমুখ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল মোল্লা, ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান পলিনসহ ডেমরা যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

অনুষ্ঠানে মির্জা আজম বলেন, ক্লিন ইমেজের নেতাদের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিট ও থানা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করতে হবে। বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও ভূমিদস্যুদের স্থান দেওয়া যাবে না। মনে রাখবেন, একজন দুর্নীতিবাজকে কমিটিতে রাখবেন তিনি ২০ জন দুর্নীতিবাজকে স্থান দেবে। একজন চাঁদাবাজ ২০ জন চাঁদাবাজকে স্থান দেবে।

মহানগরের ওয়ার্ড ও ইউনিট এখন আগের থেকে শক্তিশালী উল্লেখ করে মির্জা আজম বলেন, আজ ডেমরা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ জোয়ার আগে কিন্তু দেখা যায়নি। কিছু দিন আগে ঢাকা-৫ আসনে উপনির্বাচন হয়।

সে নির্বাচনে আমি সমন্বয়ের দায়িত্বপালন করেছিলাম। সেদিন কিন্তু এমন জোয়ার আমাদের চোখে পড়েনি, কিন্তু আজ দেখলাম। আগে ওয়ার্ড ইউনিট সম্মেলন হয়নি। সে কাজ আমরা করতে পেরেছি। নেতাকর্মীদের জোয়ার সে সম্মেলনের সুফল। আজ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ শক্তিশালী সংগঠন ইউনিট হিসেবে দুর্গ গড়ে উঠেছে।

ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধ সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সস্পাদক মির্জা আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর পরিশ্রমে আজ দেশের সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। অথচ এ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে আজ ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যেনো কোনো অপশক্তি রাজনীতির নামে অপরাজনীতি করতে না পারে।

অনুষ্ঠানে তারেক জিয়ার সমালোচনা করে মির্জা আজম বলেন, ‘জিয়ার ছেলে তারেক রহমান বিদেশে বসে আওয়ামী লীগ সভপাতি শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি আগেও শেখ হাসিনাকে খুনের চেষ্টা করেছে।’