মা ইলিশ রক্ষায় গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।
চাঁদপুরের হানারচর, পুরানবাজার, বহরিয়াসহ বিভিন্ন জেলে পল্লী ঘুরে দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞার শেষ সময়ে ইলিশ ধরার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটছে জেলেদের।
নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে বেকার হয়ে পড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে জেলেদের। তাই নিষেধাজ্ঞা শেষে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরতে মুখিয়ে আছে তারা।
হরিণা ফেরিঘাট এলাকার জেলে ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘আগামীকাল রাইতে শেষ অইবো নিষেধাজ্ঞা। অহন আমরা জাল সিলাই করা ঠিক করতাছি। নিষেধাজ্ঞা শেষ অইলেই গাঙগো নাইমা যামু। যদি কিছুমতে থাকে তয় মাছ পামু।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে মাত্র ২০ কেজি কইরা চাউল দিছে, কিন্তু আমরা পাইছি ১৪ তনে ১৫ কেজি। এই দিয়া কি সংসার চলে? সংসারের খচর চালাইতে গিয়ে বিভিন্ন এনজিও ও মহাজনের কাছের তনে ঋণ নিছি। তাই জীবনের ঝুঁকি লইয়া গাঙ্গ গিয়া মাছ ধরছি।
তারা বলেন, জেলেদের যদি আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা করতো, তয় কেউ আর গাঙ্গে যাইতো না মাছ ধরতে। হেলে ইলিশও কেউ ধরতো না, অভিযানও সফল অইতো।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানিয়েছে, এ বছর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় দায়ে চাঁদপুরে দুই শতাধিক জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানা করাসহ প্রায় ১ কোটি মিটার কারেন্ট জাল ও এক টন ইলিশ জব্দ করেছে প্রশাসন।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, মা ইলিশ রক্ষা রাত-দিন নদীতে অভিযান চালানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী জেলেদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
নদীতে কার্যকর ভূমিকা পালন করায় মা ইলিশ রক্ষাভিযান সফল হয়েছে বলে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীতেও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে চাঁদপুরের নদীতে মাছ ধরার কাজে নিবন্ধিত ৪৪ হাজার ৩৫ জন জেলেকে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা প্রদান করা হয়েছে বলে জানান তিনি।