স্টাফ রিপোর্টারঃ সাম্প্রতি ব্যাপক আলোচিত চিত্রনায়কা পরিমনি ইস্যুতে তসলিমা নাসরিন তার একটি স্ট্যাটাসে লিখেন, র্যাবের ব্রিফিং দেখলাম পরীমনিকে নিয়ে। আমি শুধু শুনতে চাইছিলাম কত ভয়ঙ্কর অপরাধ করেছে পরীমনি।
অপরাধের মধ্যে যা বলা হয়েছে, তা হলো- ১. পিরোজপুর থেকে ঢাকায় এসে স্মৃতিমনি ওরফে পরীমনি সিনেমায় রাতারাতি চান্স পেয়ে গেছে। ২. তার বাড়িতে বিদেশি মদের বোতল পাওয়া গেছে। ৩. তার বাড়িতে একখানা মিনি বার আছে। ৪. পরীমনি মদ্যপান করে, এখন সে মদে আসক্ত। ৫. নজরুল ইসলাম নামের এক প্রযোজক, যে তাকে সাহায্য করেছিল সিনেমায় নামতে, মাঝে মধ্যে পরীমনির বাড়িতে আসে, মদ্যপান করে। ৬. ডিজে পার্টি হতো পরীমনির বাড়িতে। ৭. আইসসহ মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে (এগুলোর চেহারা অবশ্য দেখানো হয়নি)। ৮. মদ খাওয়ার বা সংগ্রহ করার লাইসেন্স আছে পরীমনির, তবে তার মেয়াদ পার হয়ে গেছে, এখনো রিনিউ করেনি সে।
তিনি আরও লেখেন, তারপর আরও কিছু খবর দেখলাম, পরীমনি পর্নো ছবির সঙ্গে যুক্ত ছিল। না এটিরও প্রমাণ কিছু দেখানো হয়নি। মদ খাওয়া, মদ রাখা, ঘরে মিনিবার থাকা কোনোটিই অপরাধ নয়। বাড়িতে বন্ধুবান্ধব আসা, এক সঙ্গে মদ্যপান করা অপরাধ নয়। বাড়িতে ডিজে পার্টি করা অপরাধ নয়। কারও সাহায্য নিয়ে সিনেমায় নামা অপরাধ নয়। কারও সাহায্যে মডেলিংয়ে চান্স পাওয়া অপরাধ নয়। কোনো উত্তেজক ওষুধ যদি সে নিজে সেবন করে অপরাধ নয়। ন্যাংটো হয়ে ছবি তোলাও অপরাধ নয়। লাইসেন্স রিনিউয়েও দেরি হওয়া গুরুতর কোনো অপরাধ নয়।
তসলিমা নাসরিন লেখেন, অপরাধ তবে কোথায়? যে অপরাধের জন্য দামি গ্লেন ফিডিশ মল্ট হুইস্কিগুলো বাজেয়াপ্ত করা হলো, মেয়েটাকে গ্রেফতার করা হলো! যে কটা মদ ভর্তি বোতল দেখা গেল পরীমনির বাড়িতে, মদের লাইসেন্স যাদের আছে, তাদের বেসমেন্টের সেলারে এর চেয়ে অনেক বেশি থাকে। একটা দুটো পার্টিতেই সব সাবাড় হয়ে যায়। পরীমনি আবার মদ শেষ হয়ে গেলে খালি বোতল জমিয়ে রাখে। বোতলগুলো দেখতে ভালো বলেই হয়তো। কী জানি, এও আবার অপরাধের তালিকার মধ্যে পড়ে কিনা।
এর আগে মামলা ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে আটটার দিকে আদালতে হাজির করা হয় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে। ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ অন্য ৩ আসামিও।
রিমান্ড শুনানির আগে পরীমনির পক্ষে একাধিক আইনজীবী মামলা লড়তে চাওয়া নিয়ে হয় হইচই। বিব্রত বিচারক ত্যাগ করেন এজলাস। পরে রাষ্ট্রপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শুরু হয় রিমান্ড শুনানি।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ইয়াবা, আইস, এলএসডি এগুলো অনেক মারাত্মক ধরনের মাদক। এগুলো কীভাবে তাদের কাছে এসেছে, কারা এসব সেবন করে বা বিক্রি করে এসব খুঁজে বের করতে হবে।
এদিকে পরীমনির আইনজীবি নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী বলেন, তার বাসার মদের বোতলগুলো সে শখ করে কিনেছে। এগুলো খালি বোতল। তার বাসায় এসব মদ পাওয়া যায়নি।
এদিন কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অবস্থায় আইনজীবীর সঙ্গে কথা হয় পরীমনির। কী কথা হয়েছিল জানতে চাইলে তার আইনজীবী জানান, এ ঘটনায় লজ্জিত পরীমনি। এ ঘটনায় তার ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি।