আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের উত্তরাঞ্চলের এক গ্রামে সশস্ত্র জঙ্গিরা ৫০ জনের বেশি মানুষের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
এসব মানুষের শিরশ্ছেদের জন্য তারা স্থানীয় একটি ফুটবল মাঠকে বেছে নেয়। ঘর থেকে ধরে এনে ফুটবল মাঠে মানুষগুলোর ওপর চালানো হয় বর্বর ও আদিম এই নৃসংশতা। খবর বিবিসির।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের বরাতে বিবিসির মঙ্গলবারের এক অনলাইন প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শিরশ্ছেদের পর মরদেহগুলো কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। গোটা ফুটবল মাঠটি যেন হয়ে ওঠে ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’। ওই ফুটবল মাঠ ছাড়াও আরও একটি গ্রামে কিছু মানুষের শিরশ্ছেদ করা হয় বলেও জানানো হয়েছে।
এমন লোমহর্ষক ঘটনা এটাই প্রথম নয়। সবশেষ। ২০১৭ সাল থেকেই দেশটির গ্যাস সমৃদ্ধ কাবো দেলগাদো প্রদেশে জঙ্গিরা এমন নৃশংসতা ছাড়াও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে মুসলিম অধ্যূষিত অঞ্চলটিতে দুই হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। সংঘাতে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ৪ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ।
এসব জঙ্গি ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জড়িত। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক এই জঙ্গিগোষ্ঠীটি এর মাধ্যমে আফ্রিকায় নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর তৎপরতা চালাচ্ছে। দারিদ্র্য ও বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে আফ্রিকার তরুণদের নিয়োগ দিয়ে ওই অঞ্চলে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠায় নিজেদের লড়াই জোরালো করছে আইএস।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রদেশের মূল্যবান রত্ন ও গ্যাসশিল্প থেকে তারা সামান্যই লাভবান হয়। মোজাম্বিকের রাজধানী মাপুতো থেকে বিবিসির প্রতিবেদক জোসে তেম্বে জানিয়েছেন, সম্প্রতি ওই অঞ্চলে জঙ্গিরা যেসব হামলা বা নৃশংসতা চালিয়েছে এর মধ্যে সবশেষ এতগুলো মানুষের শিরশ্ছেদ সবচেয়ে নৃশংস ও ভয়াবহ।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, এ দেখে মানুষজন স্তম্ভিত হয়ে গেছেন। তারা এই দন্দ্বের শান্তিপূর্ণ সমাধান চান।জঙ্গি তৎপরতা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে মোজাম্বিক সরকার।
দেশটির সরকার বলছে, জঙ্গিদের প্রতিরোধ করতে হলে তাদের সেনাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। তবে মোজাম্বিকের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো।