ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইটে বোমা থাকার তথ্য ছড়িয়ে ফ্লাইট বিলম্ব করার পেছনে উঠে এসেছে একটি পরিবারের পারিবারিক কলহ ও এক যুবকের পরকীয়া সম্পর্ক থামানোর চেষ্টার গল্প। পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে ছেলের নেপাল যাওয়া ঠেকাতে এই ভুয়া বোমা আতঙ্ক সৃষ্টি করেন মা।
র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি), অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান শনিবার (১২ জুলাই) কারওয়ান বাজারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “এই ঘটনাটি ছিল সম্পূর্ণ পারিবারিক কারণে।”
র্যাব ডিজি বলেন, “বোমা আছে এমন এক ফোনকলের মাধ্যমে ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়। পরে বিমানটি তল্লাশি করে বোমা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় আমরা তিনজনকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করেছি।”
১২ জুলাই, কাঠমান্ডু যাচ্ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩৭৩ ফ্লাইটটি। এ সময় বিমানটিতে বোমা থাকার খবর পেয়ে দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। অচেনা একটি নম্বর থেকে ফোন কল আসার পরই বিমানটি জরুরি তল্লাশি চালানো হয়। তিন ঘণ্টাব্যাপী তল্লাশির পর কোনো বোমা পাওয়া যায়নি। পরে বিলম্বে ঢাকা ছাড়ে ফ্লাইটটি।
ঘটনার তদন্তে র্যাব জানতে পারে, এক ব্যক্তি কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন। তার ছিল পরকীয়া সম্পর্ক। তিনি তার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে ফ্লাইটে করে কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন। বিষয়টি তার স্ত্রী এবং মা জানতে পেরে তারা এই সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বোমা আতঙ্কের কৌশল গ্রহণ করেন।
মায়ের পরিকল্পনা ছিল, যাতে তিনি তার ছেলেকে পরকীয়া প্রেমিকা নিয়ে কাঠমান্ডু যেতে না পারেন। তাই, ছেলের এক বন্ধুর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে মাকে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল-এ ফোন করে বোমা থাকার ভুয়া খবর দেন, যাতে বিমানটি জরুরি অবতরণ করে তল্লাশি চালানো হয় এবং তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।
এ ঘটনার পর র্যাব তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে মা এবং তার দুই সহযোগী রয়েছেন। র্যাব ডিজি জানান, এটি ছিল একটি ভুয়া ফোনকল। যার মাধ্যমে বিমানটির জরুরি অবতরণ ও তল্লাশি বাধ্যতামূলক করা হয়।
বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, তল্লাশির সময় সব যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। তবে, মানসিকভাবে কিছু যাত্রী বিপর্যস্ত হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হয়। এই ঘটনার পর বিমানটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।