ঢাকা ১১:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় বাফার গুদামের স্থান পরিবর্তন না হলে আন্দোলনের হুমকি

স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ: নওগাঁয় বাফার গুদাম নির্মানের স্থান পরিবর্তন করা না হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এ্যাশোসিয়েশনের (বিএফএ) নেতারা।

অবিলম্বে খাট্টাসাহাপুর মৌজার স্থলে কুমুরিয়ায় নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন তারা। সোমবার সকাল ১১ টায় নওগাঁ শহরের সরিষাহাটির মোড়ে বিএফএর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এই দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি রেজাউল করিম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শস্য ভান্ডার নওগাঁ জেলায় বাৎসরিক রাসায়নিক সারের চাহিদা দেড় লাখ মেট্রিক টন। অথচ এখনও মজুত ও বিতরণে এ জেলায় কোন গুদাম নির্মাণ করা হয়নি।

এই দাবি তাদের দীর্ঘদিনের। অথচ স্থানীয়দের মতামত উপেক্ষা করে কুমুরিয়া এলাকার স্থলে খাট্টাসাহাপুর নামক একটি আবাসিক এলাকায় গুদাম নির্মাণ করার পায়তারা করছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ করপোরেশন বিসিআইসি।

ইতোমধ্যেই সেখানকার জমি অধিগ্রহণে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এতে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, নওগাঁ জেলায় বাফার গুদাম নির্মাণের জায়গা নির্ধারনে কর্তৃপক্ষ ভূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এটা মেনে নেয়া যায় না। খাট্টাসাহাপুর নওগাঁ জেলার শেষ সীমানায় অবস্থিত একটি আবাসিক এলাকা। সেখানে গুদাম নির্মাণ করতে গেলে একদিকে জমি অধিগ্রহণে বেশী অর্থ ব্যয় হবে, অন্যদিকে সুফল থেকে বঞ্চিত হবে নওগাঁর কৃষক, ডিলারসহ সর্বস্তরের মানুষ।

সরকারের গুদাম নির্মাণের উদ্দেশ্য সফল হবে না। আবাসিক এলাকা হওয়ায় খাট্টাসাহাপুরে গুদাম নির্মাণ করা হলে সরকারী স্থাপনা নির্মাণের শর্ত ভঙ্গ হবে।

তাছাড়া খাট্টাসাহাপুরের পাশেই বগুড়া জেলার সান্তাহার। সান্তাহারে বিসিআইসির একটি গুদাম আছে। সেখানে সার নিতে গিয়ে নওগাঁর ডিলারদেরকে চরম বিরম্বনা পোহাতে হয়।

সঠিক সময়ে কৃষকের মাঝে সার সরবরাহ কঠিন হয়ে পরে। খাট্টাসাহাপুরে গুদাম নির্মাণ করা হলে সার আনা নেয়া, পরিবহণ চলাচল ও পরিবহণ বন্দোবস্ত করার ক্ষেত্রে ডিলারদেরকে চরম হয়রানী ও বিরম্বনার শিকার হতে হবে।

অন্যদিকে কুমুরিয়া নওগাঁ জেলার ১১ টি উপজেলার জন্য একটি সুবিধাজনক স্থান। সেখানে গুদাম নির্মাণ করা হলে প্রতিটি উপজেলায় সার সরবরাহ সহজ হবে।

কুমুরিয়ার জমিগুলো প্রায় সবই পরিত্যক্ত। সেখানে অধিক পরিমাণ পরিত্যক্ত জমি আছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন মত আরও জমি অধিগ্রহণের সুযোগও রয়েছে।

খাট্টাসাহাপুর মৌজায় জমি অধিগ্রহণ করতে লাগবে ৩২ কোটি টাকা। আর কুমুরিয়া মৌজায় মাত্র ১০ কোটি টাকা হলেই জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব।

স্থান পরিবর্তন করলে সরকারের ২২ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। সব দিক বিবেচনায় ‘স্থানীয়ভাবে সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে’ গুদাম নির্মাণ করতে হলে কুমুরিয়াতেই করতে হবে।

তাই স্থান পরিবর্তন করার জোর দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ‘খাট্টাসাহাপুর’ মৌজার পরিবর্তে ‘কুমুরিয়া’ মৌজায় বাফার গুদাম নির্মাণের পক্ষে ইতোমধ্যেই মতামত দিয়েছেন নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর-পোরশা-সাপাহার) আসনের এমপি ও খাদ্যমন্ত্রী বীর মুক্তযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদার।

এ ছাড়া নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের এমপি ব্যারিষ্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন, নওগাঁ-২ ( পত্নীতলা ) -ধামইরহাট) আসনের এমপি আলহাজ¦ শহীদুজ্জামান সরকার, নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিম মতামত দিয়েছেন।

প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। অথচ বাস্তবায়নের শুরুতেই গোড়ায় গলদ দেখা দিয়েছে।

গুদাম নির্মাণের স্থান নির্ধারন একটি গুরুত্ব¡পূর্ন সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় স্থানীয়দের মতামতকে মূল্যায়ন করা হয়নি। এতে ব্যবসায়ী মহলে, বিশেষ করে সার ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থান পরিবর্তন করার দাবি দ্রুত মানা না হলে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুশিয়ারী দেন বিএফএ নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিএফএর সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ রফিকুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হাসানসহ কার্যকরী পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

নওগাঁয় বাফার গুদামের স্থান পরিবর্তন না হলে আন্দোলনের হুমকি

আপডেট সময় ০৬:২২:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ: নওগাঁয় বাফার গুদাম নির্মানের স্থান পরিবর্তন করা না হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এ্যাশোসিয়েশনের (বিএফএ) নেতারা।

অবিলম্বে খাট্টাসাহাপুর মৌজার স্থলে কুমুরিয়ায় নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন তারা। সোমবার সকাল ১১ টায় নওগাঁ শহরের সরিষাহাটির মোড়ে বিএফএর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এই দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি রেজাউল করিম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শস্য ভান্ডার নওগাঁ জেলায় বাৎসরিক রাসায়নিক সারের চাহিদা দেড় লাখ মেট্রিক টন। অথচ এখনও মজুত ও বিতরণে এ জেলায় কোন গুদাম নির্মাণ করা হয়নি।

এই দাবি তাদের দীর্ঘদিনের। অথচ স্থানীয়দের মতামত উপেক্ষা করে কুমুরিয়া এলাকার স্থলে খাট্টাসাহাপুর নামক একটি আবাসিক এলাকায় গুদাম নির্মাণ করার পায়তারা করছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ করপোরেশন বিসিআইসি।

ইতোমধ্যেই সেখানকার জমি অধিগ্রহণে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এতে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, নওগাঁ জেলায় বাফার গুদাম নির্মাণের জায়গা নির্ধারনে কর্তৃপক্ষ ভূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এটা মেনে নেয়া যায় না। খাট্টাসাহাপুর নওগাঁ জেলার শেষ সীমানায় অবস্থিত একটি আবাসিক এলাকা। সেখানে গুদাম নির্মাণ করতে গেলে একদিকে জমি অধিগ্রহণে বেশী অর্থ ব্যয় হবে, অন্যদিকে সুফল থেকে বঞ্চিত হবে নওগাঁর কৃষক, ডিলারসহ সর্বস্তরের মানুষ।

সরকারের গুদাম নির্মাণের উদ্দেশ্য সফল হবে না। আবাসিক এলাকা হওয়ায় খাট্টাসাহাপুরে গুদাম নির্মাণ করা হলে সরকারী স্থাপনা নির্মাণের শর্ত ভঙ্গ হবে।

তাছাড়া খাট্টাসাহাপুরের পাশেই বগুড়া জেলার সান্তাহার। সান্তাহারে বিসিআইসির একটি গুদাম আছে। সেখানে সার নিতে গিয়ে নওগাঁর ডিলারদেরকে চরম বিরম্বনা পোহাতে হয়।

সঠিক সময়ে কৃষকের মাঝে সার সরবরাহ কঠিন হয়ে পরে। খাট্টাসাহাপুরে গুদাম নির্মাণ করা হলে সার আনা নেয়া, পরিবহণ চলাচল ও পরিবহণ বন্দোবস্ত করার ক্ষেত্রে ডিলারদেরকে চরম হয়রানী ও বিরম্বনার শিকার হতে হবে।

অন্যদিকে কুমুরিয়া নওগাঁ জেলার ১১ টি উপজেলার জন্য একটি সুবিধাজনক স্থান। সেখানে গুদাম নির্মাণ করা হলে প্রতিটি উপজেলায় সার সরবরাহ সহজ হবে।

কুমুরিয়ার জমিগুলো প্রায় সবই পরিত্যক্ত। সেখানে অধিক পরিমাণ পরিত্যক্ত জমি আছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন মত আরও জমি অধিগ্রহণের সুযোগও রয়েছে।

খাট্টাসাহাপুর মৌজায় জমি অধিগ্রহণ করতে লাগবে ৩২ কোটি টাকা। আর কুমুরিয়া মৌজায় মাত্র ১০ কোটি টাকা হলেই জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব।

স্থান পরিবর্তন করলে সরকারের ২২ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। সব দিক বিবেচনায় ‘স্থানীয়ভাবে সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে’ গুদাম নির্মাণ করতে হলে কুমুরিয়াতেই করতে হবে।

তাই স্থান পরিবর্তন করার জোর দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ‘খাট্টাসাহাপুর’ মৌজার পরিবর্তে ‘কুমুরিয়া’ মৌজায় বাফার গুদাম নির্মাণের পক্ষে ইতোমধ্যেই মতামত দিয়েছেন নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর-পোরশা-সাপাহার) আসনের এমপি ও খাদ্যমন্ত্রী বীর মুক্তযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদার।

এ ছাড়া নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের এমপি ব্যারিষ্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন, নওগাঁ-২ ( পত্নীতলা ) -ধামইরহাট) আসনের এমপি আলহাজ¦ শহীদুজ্জামান সরকার, নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিম মতামত দিয়েছেন।

প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। অথচ বাস্তবায়নের শুরুতেই গোড়ায় গলদ দেখা দিয়েছে।

গুদাম নির্মাণের স্থান নির্ধারন একটি গুরুত্ব¡পূর্ন সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় স্থানীয়দের মতামতকে মূল্যায়ন করা হয়নি। এতে ব্যবসায়ী মহলে, বিশেষ করে সার ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থান পরিবর্তন করার দাবি দ্রুত মানা না হলে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুশিয়ারী দেন বিএফএ নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিএফএর সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ রফিকুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হাসানসহ কার্যকরী পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।